পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, শিগগির আমরা ব্যাংক ও আর্থিক খাতের সংস্কার শুরু করব। আপনারা শুনবেন। মাস দুয়েকের মধ্যে এটা হতে পারে। আর খারাপরা যতই প্রভাবশালী হোক না কেন, তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে পাওনা টাকা (খেলাপি) আদায় করা হবে। এ সময় ব্যাংক ঋণে অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নজির হিসেবে ফারমার্স ব্যাংকের ১০-১২ জন কর্মকর্তার কারাগারে যাওয়ার কথা বলেন তিনি।
প্রস্তাবিত বাজেটে কর্পোরেট হার কমানোর সমালোচনার জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বিনিয়োগ বাড়ানো ও ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরির জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘সিপিডি বাজেট সংলাপ ২০১৮’-তে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন অর্থনীতিবিদ প্রফেসর রেহমান সোবাহান। এই সংলাপে আরও বক্তব্য রাখেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, এমসিসিআইয়ের সভাপতি নিহাদ কবির প্রমুখ। সংলাপের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, সঞ্চালনা করেন সংস্থার ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমরা কোনও ব্যবস্থা নেইনি, এমন অভিযোগ সঠিক নয়। আমাদের সময়ে ব্যাংক খাতে অনিয়ম হয়নি, এমন কথাও বলবো না। তবে আমরা ব্যাংক ও আর্থিক খাতের রিফর্মস আনবো। রিফর্মস এনে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরও শক্তিশালী করবো। তিনি বলেন, ‘উইন উইন সিচুয়েশন করে আমরা ম্যাচ করবো’। যারা ভালো তাদের যত প্রকারের উৎসাহ দেওয়া যায় আমরা দেববো। আর এই খাতে খারাপ যারা আছে, তারা যত বড়ই হোক না কেন, তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো এবং তাদের কাছ থেকে পাওনা আদায় করা হবে।
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, এ মুহূর্তে টাকা নেই বলে কোনও ব্যাংককেই কোনও চেক রিটার্ন দেয়নি। ফারমার্স ব্যাংককে আমরা হাতে নিয়েছি। এটা লুটপাট এবং শেষ হয়ে গেল এমন মন্তব্য করার সুযোগই এ মুহূর্তে নেই বলেও মনে করেন তিনি। দেশে যারা বেকার আছে, তারা ইচ্ছে করেই বেকার থাকছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা বেকার রয়েছেন তারা এ কাজ করবে না, ময়মনসিংহ যাবে না, গুলশানে না হলে যাবে না, আইটি সেক্টরে কাজ করবে না। আমাদের লেবার যারা, কোথাও বেকার নেই। কতো ধরনের ব্যবসা যে এই মুহূর্তে ঢাকায় আছে, উবার, সাইকেল উবারও বেরিয়ে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ইদানীং দেশের পাঁচ শতাংশ লোকের আয় যা বেড়েছে তা অবিশ্বাস্য। তারা সারাবিশ্বে বাড়িঘর কিনছে। তাদের টাকা রাখার এখন জায়গা নেই। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের ওপর ট্যাক্স কমিয়ে এই পাঁচ শতাংশ মানুষকে ট্যাক্সের আওতায় আনা গেলে এনবিআরের ট্যাক্স আদায় বহুগুণ বেড় যাবে। পাঁচ শতাংশ মানুষের মধ্যে কারা আছে দেশের মানুষ তা জানে। কারা ফারমার্স ব্যাংক লুট করেছে? কারা ব্যাংক-শেয়ারবাজার লুট করেছে? কারা মেগা প্রজেক্টের নামে টাকা বাইরে নিয়ে গেছে। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর তো ৮-১০ মিলিয়ন ডলার বাইরে যাচ্ছে। আইন মেনে আপনি এদের চিহ্নিত করেন। আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যারা ব্যাংক লুট করছে, আপনারা তাদের ট্যাক্স কমিয়ে দিচ্ছেন। আবার যারা লুট করে নিয়ে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাও নিচ্ছেন না। ব্যাংকিং ডিভিশন বলে আপনারা যে জিনিসটা তৈরি করেছেন, এটাকে অবলপন করে দেন। দয়া করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজগুলো তাদের করতে দেন।
মুক্ত আলোচনায় এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বলেন, ২০২৪ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশ ও ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি বাস্তবায়ন করতে হলে বাজেটের আকার বাড়বে। তেমনি এর যোগানের লক্ষ্যে রাজস্ব বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার জরুরি। তা না হলে বাজেট বাড়লেও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে।
এনজিও প্রতিনিধি খন্দকার আরিফুল ইসলাম বলে, বাজেটে প্রতিবারই ৫-২৫ শতাংশ বাড়ছে। ১৯৫৮ সালের কাঠামোতে এখন পর্যন্ত কোন পরিবর্তন আসেনি। তাই আকার বাড়ানোর সঙ্গে কাঠামোগত পরিবর্তন জরুরি।
সিপিডির ফেলো রওনক জাহান বলেন, অনেকে এবারের বাজেটকে নির্বাচনী বাজেট বলেছেন। দারিদ্র্য মানুষের জন্য প্রতিবার বরাদ্দ থাকে। সামাজিক সুরক্ষায় বাজেট বাড়ছে। এটি সত্য হলেও এদিয়ে ভোটার টানা যাবেনা। সরকারের নয় বছরে সাধারণ মানুষের বৈষম্য বেড়েছে। ফলে এ বাজেটে ভোটার আকৃষ্ট করার কিছু নাই।
অতিথিদের বক্তব্যে এমসিসিআই প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার নিহাদ কবির বলেন, দেশে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ স্থবির হয়ে আছে। কারণ ব্যবসায় ব্যয় বাড়ছে। সরকারি অফিসে সময় বেশি লাগছে, ওয়ান স্টপ সার্ভিসের কথা বলা হলেও তা দেখা যাচ্ছে না।
অর্থনীতিবিদ প্রফেসর রেহমান সোবহান বলেছেন, বাংলাদেশে আজকে ব্যাংকিং খাতের অস্থিরতা ও খেলাপি ঋণের সংস্কৃতি, এটা এই সরকারের সৃষ্টি নয়। বরং এটা অনেক বছরের জিইয়ে রাখা একটা সমস্যা। সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমল থেকে এটার শুরু। এরপর থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে এ সমস্যা আজ প্রকট আকার ধারণ করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।