পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি নির্বাচনে আসুক এটা আওয়ামী লীগই চায় না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বিএনপিকে বাদ দিয়ে আবারও একতরফা নির্বাচন করতে চায়। এজন্য তারা কোন আলোচনা ছাড়া নির্বাচনকালীন সরকারের কথা বলছে।
তবে এখনো সময় আছে, কথা বলুন, সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। নির্বাচনের আগে বর্তমান সংসদ ভেঙে দিতে হবে। সবার আগে গণতন্ত্রের প্রতীক খালেদা জিয়াকে কারা মুক্তি দিতে হবে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ফেডারেল সাংাবদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (একাংশ) আয়োজিত সংবাদপত্রের কালো দিবস শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন ‘অন্তর্র্বতীকালীন সরকার হয়ে যাবে। বিএনপি না আসলে কি, আরো দল আসবে। বিএনপি না আসলে কি নির্বাচন থেমে থাকবে না।’ এটাইতো তারা (আওয়ামী লীগ) চায়। যে বিএনপি না আসুক। অন্যান্য দলগুলো দুই একটা যেটা আনা হয়েছে তারা আসুক। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক দল হিসেবে অবশ্যই আমরা নির্বাচন চাই। সেই নির্বাচনটা অবশ্যই হতে হবে নির্বাচনের মতো। আপনারা ক্ষমতায় থাকবেন, হেলিকপ্টারে চড়ে ঘুরে ঘুরে বেড়াবেন। বিরোধী দলকে একটা কথাও বলতে দেবে না, ধরে ধরে জেলে পুরবেন। সেক্ষেত্রে তো নির্বাচন হবে না। নির্বাচনে সমান্তরাল মাঠ তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশের রাজনীতির সংস্কৃতি অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সময়ে একটা নিরপেক্ষ সরকার থাকতে হবে-এটার কোনো বিকল্প নাই। সংসদে ভেঙে দিতে হবে। সবার আগে গণতন্ত্রের প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে।
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গত রাতেও (বুধবার) গাজীপুরের কাশিমপুরে আমাদের দলের ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ কারণে গাজীপুরের পুলিশ সুপারকে সরানোর জন্য বলে আসছি আমরা। যেদিন আমাদের প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলো আর জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলো, তাকেসহ ৫৭ জনকে গ্রেফতার করলো। এটা হলো আমাদের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, এটা হলো আমাদের সিইসি সাহেবের খুলনার মতো নির্বাচন না হওয়ার নমুনা। আমি জানি না, এই দেশ আওয়ামী লীগ সরকার চালাচ্ছে নাকি অন্য কেউ?’ আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দিক থেকে এতটুকু দেউলিয়া হয়ে গেছে যে ন্যূনতম রাজনৈতিক যে অভিজ্ঞতা তারা সেটুকু কাজে লাগাতে পারবে না। জনগণের সঙ্গে প্রতারণ করছে, আরও করবে? এখনও সময় আছে কথা বলুন।
বিএনপি নেতাকর্মীদের জনগণের কাছে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, হতাশাই শেষ কথা হতে পারে না। লড়াই করতে হবে, লড়াই করতে করতে আমরা একটা জায়গায় গিয়েই পৌঁছাবোই। আমরা এই দেশে কিন্তু বাকশালও দেখেছি। মানুষ আবার জেগে উঠেছে। এই বাংলাদেশের মানুষই কিন্তু ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ধ্বংসস্তুপ থেকে ফিনিক্স পাখির মতো উড়ে গেছে। নির্বাচন হবে, আমরা ক্ষমতায় যাবো, এটা মনে করার কারণ নেই। আপনাকে আদায় করে নিতে হবে। এজন্য জনগণের কাছে যেতে হবে। এর কোনও বিকল্প নেই। সবসময় একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে একটা কথা বিশ্বাস করি, হোয়েন দেয়ার ইজ ক্রাইসিস গো টু দ্য পিপল, লার্ন ফ্রম দেম। তাদের কাছ থেকে জানো, তারপর সেটাকে প্রয়োগের চেষ্টা করো।
জাতীয় ঐক্য প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, যারা বাংলাদেশের রাজনীতির প্রথম থেকেই অবদান রাখছেন তাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও কারাগারে যাওয়ার আগে বলেছিলেন যে, জাতীয় ঐক্য চাই। আমি এটা বিশ্বাস করি এবং বেশি জোর দিতে চাই। বাংলাদেশের এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য একটা জাতীয় ঐক্য খুব দরকার। খুব বেশি পয়েন্ট নয়, কয়েকটা পয়েন্টেই আমরা সেই ঐক্য সৃষ্টি করতে পারি এবং গণতান্ত্রিক দল হিসেবে আমরা অবশ্যই নির্বাচন চাই। তিনি বলেন, সেই নির্বাচনটা অবশ্যই হতে হবে নির্বাচনের মতো।
বিএনপি নেতাকর্মীদের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরতে গিয়ে দলটির মহাসচিব বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৬ জুনের পর সাংবাদিক ভাইয়েরা যেমন ফল বিক্রি করেছেন, আজ তেমনি আমাদের রাজনৈতিক কর্মীরা ঢাকায় রিকশা চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, একটি রাষ্ট্রের আদালত হচ্ছে আশা ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল। অথচ এখন সেই আদালতে যেতেও আমাদের ভয় হয়। কারণ আদালতকে ব্যবহার করেই দেশের জনপ্রিয় ও গণতান্ত্রিক নেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। তাই এখন আমাদের দায়িত্ব হলো সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করা, মানুষের মধ্যে সাহস জাগানো। আর তরুণদের কাছে আমি সব সময় যে কথাটা বলি, জেগে উঠতে হবে। পৃথিবীর যে কোনো দেশে, যে কোনো সমাজে তরুণরা ছাড়া সমাজকে জাগাতে পারবে না। তরুণদের সামনে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের ভূমিকা পালন করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, ১৯৭৮ সাল থেকে এই দিবসটি সাংবাদিক সমাজ পালন করে আসছে। আমরা বাংলাদেশের সাংবাদিকরা প্রতিদিনই কালো দিবস পালন করছি। চ্যালেন ওয়ান, ইসলামিক টিভি, দিগন্ত টিভি বন্ধ করা হয়েছে, অসংখ্য প্রোগ্রাম, অসংখ্য পত্রিকা বন্ধ করা হয়েছে। সাগর-রুনিসহ এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ সাংবাদিক হত্যা করা হয়েছে। একটিও বিচার হয়নি। মিডিয়া কন্ট্রোল করা হচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না। আমাদের অবশ্যই মাঠে নামতে হবে, প্রতিবাদ জানাতে হবে, সব বন্ধ মিডিয়া খুলে দিতে হবে।। নইলে মিডিয়ার স্বাধীনতা থাকবে না।
ডিইউজের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহামুদুর রহমান, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, বিএফইউজের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বিএফইউজের সহ-সভাপতি মোদাব্বের হোসেন, প্রচার সম্পাদক আহমেদ মতিউর রহমান, ডিইউজের সহ-সভাপতি বাসির জামাল, শাহীন হাসনাত, সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।