বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মো: শামসুল আলম খান : ঈদযাত্রাকে পুঁজি করে অতিরিক্ত ভাড়ার ফাঁদ পেতেছে এনা পরিবহন। ময়মনসিংহ-ঢাকা রোডে চলাচল করা ৪০ সিটের এনা পরিবহনের প্রতিটি বাস কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৫০ টাকা করে ভাড়া আদায় করছে। প্রতি বাস থেকে তারা বাড়তি আদায় করছে ২ হাজার টাকা।
এমন ফর্মুলায় এই মহাসড়ক দাবড়ে ছুটা ৬০ টি বাস প্রতিদিন যাত্রীদের পকেট কেটে হাতিয়ে নিচ্ছে অতিরিক্ত ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাওয়া ঢাকাগামী বাসগুলোর যাত্রীদের এভাবেই বাড়তি ভাড়ার ফাঁদে পড়তে হচ্ছে। বাড়তি ভাড়ার বিষয়ে সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কঠোর বার্তা দিলেও এনা পরিবহন এভাবে যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া হাতিয়ে নেওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
ঈদুল ফিতরের আগের দিন শুক্রবার (১৫ জুন) থেকে সোমবার (১৮ জুন) পর্যন্ত এভাবেই বাড়তি ভাড়া গুণতে হয় এ সার্ভিসে চলাচলকারী যাত্রীদের। এমনটি নিশ্চিত করেছেন এই পরিবনের চালক, হেল্পার ও কাউন্টার মাস্টাররা। রোববার (১৭ জুন) ও সোমবার (১৮ জুন) বিকেলে নগরীর মাসকান্দা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের এনা পরিবহনের কাউন্টার সংশ্লিষ্ট ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য মিলেছে।
জানা যায়, ঢাকা থেকে ময়মনসিংহে আসা যাত্রীদের কাছ থেকে গত শুক্রবার (১৫ জুন) থেকে নির্ধারিত ২২০ টাকার ভাড়ার পরিবর্তে ২৭০ টাকা করে ভাড়া নেয়া হচ্ছে। ফলে এক দিনেই ময়মনসিংহগামী যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া হিসেবে ৬০ টি বাস ১ লাখ ২০ হাজার টাকা আদায় করে।
গত দু’দিন বিকেলে নগরীর মাসকান্দা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের এনা পরিবহনের টিকিট কাউন্টারের সামনে গিয়ে দেখা যায়, লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটছেন যাত্রীরা। ২২০ টাকার ভাড়ার বদলে ২৭০ টাকা দাবি করার পর থেকেই কাউন্টার মাস্টারদের সঙ্গে বচসায় জড়াচ্ছেন যাত্রীরা।
ঠাসাঠাসির মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা বাস যাত্রী একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকুরে সোহেল মিয়া (৩৩) অভিযোগ করে বলেন, ‘আগাম ঘোষণা ছাড়াই সম্পূর্ণ অনিয়মতান্ত্রিকভাবে যাত্রীদের পকেট কাটা শুরু করেছে এনা পরিবহন। সব সময় ২২০ টাকা করে টিকিটের দাম নেওয়া হলেও এখন নেয়া হচ্ছে ২৭০ টাকা।’
যাত্রীদের অভিযোগের পর অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে টিকিট কাউন্টার মাস্টার ফারুক মিয়া বলেন, এনা পরিবহনের বাসভাড়া শুধু ঈদযাত্রার বেলায় বাড়ানো হয়েছে।
এই কাউন্টারের সামনেই দাঁড়িয়ে থাকা এনা পরিবহনের একটি বাসের সুপারভাইজার আব্দুল আজিজ (৪০) বলেন, বছরের সব ক’টি দিন বিআরটিএ’র নির্ধারিত ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করি। কোম্পানি ঈদ উপলক্ষে চার দিন ভাড়া বাড়িয়েছে। কেন বাড়িয়েছে এটা তারাই বলতে পারবে।’
আব্দুল আজিজের কথা শুনেই ক্ষেপে গেলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকুরে মনির হোসেন। ক্ষোভ নিয়ে তিনি বলেন, এনা পরিবহনের মালিক এনায়েতুর রহমান অনেক প্রভাবশালী।
এই কারণে তিনি নিয়ম-কানুনের কোন তোয়াক্কা করেন না। নিজের মর্জিমাফিক যাত্রীদের পকেট কেটে নিজের আখের গোছাচ্ছে।’ এই যাত্রীর বক্তব্য সমর্থন করেন মহিলা টিকিট লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা জ্যোতি ইসলামসহ অন্যরা। তারা বলেন, বাড়তি ভাড়ার পাশাপাশি যখন তখন দুর্ঘটনা ঘটালেও এই পরিবহনের চালক-শ্রমিকরা পার পেয়ে যান।’ তবে ভিন্নচিত্র এই বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া সৌখিন পরিবহনসহ নি¤œ আয়ের মানুষজনের যাতায়াতের ভরসা হিসেবে পরিচিত আলম এশিয়াসহ অন্য কয়েকটি সার্ভিসের। সৌখিন পরিবহনের চালক সুজন বলেন, আমরা সব সময় দেড়শ টাকা ভাড়া নেই, এখনো তাই নিচ্ছি। আমরা এনা পরিবহনের মতো যাত্রীদের জিম্মি করছি না।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।