বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
স্টাফ রিপোটার : দূর্যোগ ব্যবস্থাপণা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, বজ্রপাতে মৃত্যুর হার উদ্বেগজনক। ২০১৫ সালে বজ্রপাতকে দূর্যোগের তালিকাভূক্ত করা হয়। বর্তমানে বজ্রপাতে মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ায় এবং বজ্রপাতে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে সারা দেশে ১০ লাখ উচুঁ তালগাছ রোপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য সফুরা বেগমের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। মায়া বলেন, বজ্রপাতের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বিদ্যুতের তার ও খুটিতে বজ্রপাত নিরোধক দÐ স্থাপন করতে বিদ্যুৎ বিভাগকে পত্র দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে আবহাওয়া অধিদপ্তর দেশের ৮টি স্থানে লাইটনিং ডিটেকশন সিস্টেম স্থাপন করেছে। এছাড়া জাতীয় বিল্ডিং কোডে বজ্রপাত নিরোধক দÐ স্থাপণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বজ্রপাতে নিহত ব্যক্তির দাফন/ সৎকারের জন্য পরিবার প্রতি ২৫ হাজার এবং আহত ব্যক্তিকে ১০ হাজার টাকা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া নিহত পরিবারকে ভিজিডি কার্ড দেয়া হচ্ছে। আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ভূমিকম্প মোকাবেলায় সক্ষমতা বৃদ্ধি জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স এবং ৪টি সিটি কর্পোরেশনকে ২২০ কোটি টাকার উদ্ধার যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া চীন থেকে আরো ১০০ কোটি টাকার উদ্ধার সরঞ্জাম আনা হয়েছে। মন্ত্রী জানান, কক্সবাজারে পাহাড়ধসের ঝুকি মানচিত্র প্রণয়ন করা হয়েছে। ধসের কারণ চিহ্নিত করণ এবং ভবিষ্যতে করণীয় নির্ধারনে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/ বিভাগ/ ভূমিধস বিশেষজ্ঞ/ শিক্ষাবিদ/ স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধিদের নিয়ে ২৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি করণীয় সম্পর্কে রিপোর্ট দিয়েছে।
বন্যা উপদ্রæত মানুষের সেবায় দায়িত্বশীল ভ‚মিকা পালনের আহবান
এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম এমপি বলেছেন বন্যা উপদ্রæত মানুষের সেবায় কর্মকর্তাদের দায়িত্বশীল ভ‚মিকা পালন করতে হবে। মানুষ বন্যার পানিতে তলিয়ে যাবে আর কর্মকর্তারা অফিসে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে থাকবে এটা বরদাস্ত করা হবে না। গতকাল সকালে মৌলভীবাজার সার্কিট হাউজে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে একথা বলেন। কতিপয় কর্মকর্তা বন্যা উপদ্রæত এলাকা পরিদর্শন না করায় বন্যা ব্যবস্থাপনায় সমন্বয়হীনতা প্রতীয়মান হওয়ায় ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্দে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ক্ষোভের প্রেক্ষিতে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ এম এ শহিদ, সায়রা মোহসীন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মোঃ শাহ্ কামাল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ রিয়াজ আহমদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক মোঃ সালাউদ্দিনসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী বলেন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষনে কর্মকর্তাদের আরও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। এ বছর বন্যা আসার পূর্বে যথেষ্ঠ সময় পাওয়ার পরও পূর্ব প্রস্তুতির ঘাটতি থাকায় তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন হতে প্রাপ্ত তথ্যমতে ১৭ জুন পর্যন্ত ৩০টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভার ৪০ হাজার পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ইতোমধ্যে ৭ জন লোক বিভিন্ন কারনে মারা গেছেন। তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ২০ হাজার টাকা ও ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছেন এ পর্যন্ত ৬৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৬৫০০ লোক আশ্রয় নিয়েছেন। ২৯৬০ হেক্টর ফসলী জমি বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে ৯ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ও ৭৪৩ মেট্রিকটন চাল বিতরণ করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী জানিয়েছেন মৌলভীবাজার জেলার জন্য ঈদের পূর্বে ৬০০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৬ লক্ষ টাকা ও ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ঈদের পরে আরও ৫০০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ সময় জনাব মায়া চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্রাণ ভান্ডারে ত্রাণের অভাব নেই। যতটুকু প্রয়োজন তার চেয়ে বেশী বরাদ্দ দেওয়া হবে যাতে খাদ্যের অভাবে কেউ কষ্ট না পায়। তিনি বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মমতাময়ী মা হিসেবে বিশে^ স্বীকৃত। তিনি রোহিঙ্গাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কক্সবাজারের লোকদের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলেন যার মাধ্যমে ঈদের পূর্বে কক্সবাজার জেলার ৩৩ হাজার মানুষকে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।