পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ক্যালেন্ডারের পাতায় বছর ঘুরে মাস, মাস শেষে সপ্তাহ আর সেখান থেকে দিন পেরিয়ে রেড স্কয়ারে চলতে থাকা ঘড়িটির কাঁটা ধীরে ধীরে এসে মিশে গেল শূন্যের ঘরে। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে পর্দা উঠলো বিশ্বকাপ ফুটবলের। যেখানে আধুনিকতার সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে রাশিয়ার সমাজ, সংস্কৃতি এবং রূপকথার সমাহার। সর্বশেষ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে উম্মোচিত হয়ে গেলো, ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ, রাশিয়া বিশ্বকাপের। হাতে করে ঝা চকচকে আরাধ্য সোনালী ট্রফিটি ফ্যাশন হাউস লুইস ভিটোনের করা সুদৃশ্য কেসে করে মঞ্চে এসেছিলেন স্পেন কিংবদন্তি গোলরক্ষক ইকার ক্যাসিয়াস এবং রুশ সুপারমডেল নাতালিয়া ভোদিয়ানোভা। তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে মঞ্চ আলোকিত করেন ব্রাজিলিয়ান দুইবারের বিশ্বকাপজয়ী তারকা রোনাল্ডো।
প্রথমবারের মত ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থে’র দায়িত্ব পেয়ে তাক লাগিয়ে দিলো রাশিয়া। চোখ ধাঁধাঁনো সব স্টেডিয়াম তৈরি করে এরইমধ্যে ফিফার সুনাম কুড়িয়েছে ভøাদিমির পুতিনের দেশ। উদ্বোধোনী অনুষ্ঠান দিয়েই গতকাল থেকে শুরু হলো বিশ্বের লাখো-কোটি ফুটবল পাগল দর্শকদের মোহাবিষ্ট করে রাখার চেষ্টা। মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে ৩০ মিনিটের এ অনুষ্ঠানে নাচ আর গানে স্বাগতিক দেশ রাশিয়ার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরা হলো। কাল বাংলাদেশ সময় রাত নয়টায় স্বাগতিক রাশিয়া ও সউদী আরবের মধ্যকার উদ্বোধনী ম্যাচ শুরুর ঠিক আগে মাত্র আধ ঘণ্টার জন্য ফুটবল বিশ্বকে সুরের মুর্চ্ছনায় মোহাবিষ্ট করে রাখলো রাশিয়া। রাশিয়ার এই জাতীয় স্টেডিয়ামে একসঙ্গে প্রায় ৮০ হাজার লোক খেলা দেখতে পারেন। এ মাঠেই হবে ২০১৮ সালের ফিফা বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ। এখানে বসেই হাজারো ফুটবলপ্রেমী উচ্ছ¡াসে মেতেছিলেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে।
২০১৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের আসর জেনিফার লোপেজ আর পিট বুলের গান দিয়ে শুরু হয়েছিল। বিগত আসর গুলোর চাইতে কিছুটা ভিন্ন মাত্রার ছোয়া ছিলো এবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। উইল স্মিথ, নিকি জ্যাম এবং কসোভার আলবেনিয়ান শিল্পী ইরা ইসত্রেফির গলায় এবারের টুর্নামেন্টের অফিশিয়াল থিম সং ‘লিভ ইট আপ’ দিয়ে শুরু হয় মুল অনুষ্ঠান। সঙ্গে ছিলো নাচ আর আতশবাজি।
মস্কোর ৮০ হাজার দর্শকের জন্য লুঝনিকির আধ ঘন্টার আয়োজনটি সাজানো হয় সুর-আর সংগীতকেন্দ্রীক। নব্বইয়ের দশকের ইংলিশ পপ তারকা রবি উইলিয়ামসের গান দিয়েই শুরু হয় এই অুনষ্ঠান। তার সঙ্গে ছিলেন রাশিয়ার অপেরা সুপরানো অ্যাডি গ্যারিফুলিনা। এই সেই রবি, যার নিষেধাজ্ঞার দাবিতে একসময় উত্তাল ছিল এই রাশিয়ারই জনপথ। ছিলেন বর্ষীয়ান স্প্যানিশ অপেরা শিল্পী প্ল্যাসিদো দোমিংগো ও খন দিয়েগো ফ্লোরেজের পরিবেশনা। সুরের মূর্চ্ছনায় একে একে মঞ্চ আলোকিত করেন পিয়ানো বাদক ডেনিস ম্যাটসুয়েভ, আন্তর্জাতিক অপেরা তারকা অ্যানা নেত্রিবকো, ইউসিফ ইভাজব, ইদার আবদ্রাজাকভ ও আলবিনা শাগিমুরাতোভা। তাদের এই আয়োজন আরো রঙিন করে তুলতে মঞ্চ মাতাতে আসেন প্রায় ৫০০ নাচিয়ে এবং জিমন্যাস্টের পার্ফরম্যান্স। লুঝনিকি স্টেডিয়ামের পাশাপাশি একই সময় মস্কোর রেড স্কয়ারেও বিশ্বকাপ উপলক্ষে কনসার্ট আয়োজন করা হয়।
শেষবার ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত ফিফা বিশ্বকাপের জমকালো উদ্বোধনী আসর মাতিয়েছিলেন সংগীতশিল্পী পিটবুল ও শাকিরা। ‘ইউ আর ওয়ান’ গানটি একসঙ্গে গেয়েছিলেন তারা। তখন বিভিন্ন পরিবেশনার মাধ্যমে ব্রাজিলের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হয়েছিল। তবে সা¤প্রতিক সময়ে বিশ্বকাপের থিম সংয়ের কথা বললে এখনো মানুষের মনে ২০১০ সালের ফিফা বিশ্বকাপের সেই ‘ওয়াকা ওয়াকা’ গানের সুরই ভেসে ওঠে। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত সেই বিশ্বকাপের থিম সংটি গেয়েছিলেন শাকিরা।
বর্নিল এই আয়োজন ¤øান হতে দেয়নি স্বাগতিকরা। সউদী আরবকে ৩-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপের এবারের আসর শুরু করলো রাশিয়া। ম্যাচের ১২ মিনিটের মাথায় ১-০ গোলে এগিয়ে যায়। কর্ণার থেকে ডি বক্সের মধ্যে বল পেয়ে দুর্দান্ত হেডে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন রাশিয়ানদের তারকা উইরি গাসিস্কিয়ি। প্রথমার্ধ শেষ হবার ঠিক আগে (৪৩ মিনিটে) সউদী দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বল জালে পাঠিয়ে স্বাগতিকদে লিড বাড়িয়ে নেন ডেনিশ সেরিশেভ। বিরতি থেকে ফিরে সউদীকে আরো চেপে ধরে রাশিয়ার ক্ষুরধার আক্রমণভাগ। কয়েকটি বৃথা আক্রমণের পর ৭১তম মিনিটে লক্ষ্যভেদ করেন আরতেম জিউভা (৩-০)। ম্যাচের যোগকরা সময়ে (৯০+১ মিনিট) ডেনিশ চেরিশেভ নিজের দ্বিতীয় ও দলের পক্ষে চতুর্থ এবং শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগ মুহূর্তে দুর্দান্ত এক ফ্রি কিক থেকে দলের বড় জয় নিশ্চিত করেন ডেনিশ চেরিশেভ (৫-০)। ম্যাচের বাকি সময় আর কোন গোল না হলে বিশ্বকাপের প্রথা ধরে রেখে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকরা।
দারণ এই ম্যাচটি প্রেসিডেন্ট বক্সে পাশাপাশি বসে উপভোগ করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন এবং সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। তাদের মাঝেই বসা ছিলেন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিওভান্নি ইনফান্তিনো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।