পুনরায় যমুনা ব্যাংকের এমডি হলেন মির্জা ইলিয়াছ উদ্দিন আহমেদ
যমুনা ব্যাংক লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও হিসেবে আরও ৫ বছরের জন্য পুনরায় নিয়োগ পেয়েছেন মির্জা ইলিয়াছ উদ্দিন আহমেদ। বাংলাদেশ ব্যাংক তাকে পুনঃনিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে।
পথশিশুদের আর্থিক সেবা হঠাৎ করেই থমকে দাঁড়িয়েছে। কমে গেছে তাদের ব্যাংক হিসাব। ছয় মাসের ব্যবধানে ২৯০ পথশিশুর ব্যাংক হিসাব বন্ধ হয়ে গেছে। এরমধ্যে মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে বন্ধ হয়েছে পথশিশুদের ১৬৩টি ব্যাংক হিসাব। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এই বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত সময়ের তথ্য নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, পথশিশুদের ব্যাংক হিসাব বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি কমে গেছে তাদের জমানো টাকার পরিমাণও। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পথশিশুর ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছিল চার হাজার ৬৭১টি। তখন তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এখন জমা ছিল ৪৬ লাখ ৮৯ হাজার টাকারও বেশি অর্থ। কিন্তু এখন কর্মজীবী শিশু-কিশোরদের ব্যাংক হিসাবে মোট স্থিতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখ ৯২ হাজার টাকা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ১৯টি বাণিজ্যিক ব্যাংকে লেনদেন করছে চার হাজার ৩৮১ জন পথশিশু। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বরে এই সংখ্যা ছিল চার হাজার ৫৪৪ জন। অর্থাৎ ত্রৈমাসিকে হিসাব সংখ্যা কমেছে ১৬৩টি। দেশের ১৫টি এনজিও এই পথশিশুদের ব্যাংক হিসাব দেখভাল করছে। অধিকাংশ পথশিশুর কোনও অভিভাবক না থাকায় এনজিও প্রতিনিধিরা তাদের অভিভাবক হয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করছেন।
ব্যাংক কর্মকর্তাদের অনাগ্রহের কারণে পথশিশুদের ব্যাংক হিসাব কমে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কয়েকটি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ৯ মার্চ ১০ টাকার বিনিময়ে পথশিশুদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ করে দিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমান। ড. আতিউর রহমানের ওই নির্দেশনার পর ব্যাংকগুলো পথশিশুদের আর্থিক সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহী ছিল। কিন্তু বর্তমানে পথশিশুদের ব্যাপারে ব্যাংকগুলোর আগ্রহ কমে গেছে।
ড. আতিউর রহমান বলেন, ব্যাংক মানুষের সেবা দেয়, অথচ দীর্ঘদিন এই গরিব অসহায় মানুষরা ছিল ব্যাংকিং সেবার বাইরে। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ২০১৪ সালে আর্থিক সেবায় পথশিশুদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে। আর্থিক সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে তাদেরও অধিকার আছে। পথশিশুদের ব্যাপারে ব্যাংকগুলোর কমে যাওয়ায় হতাশা ব্যাক্ত করে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ‘পথশিশুরা’ও আমাদের মতোই মানুষ। ‘মানবিক দৃষ্টিকোণ’ থেকে ব্যাংগুলোর উচিত দেশের সব পথশিশুকে আর্থিক সেবায় নিয়ে আসা। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত রূপালী ব্যাংকে পথশিশুদের হিসাব খুলেছে ৯৭৪টি। রূপালী ব্যাংকের হিসাবগুলোতে পথশিশুরা জমিয়েছে নয় লাখ ৭৩ হাজার টাকা। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে তারা হিসাব খুলেছে ৮১৯টি। এই ব্যাংকে তারা দুই লাখ ৩৭ হাজার জমা করেছে। মার্চ পর্যন্ত সময়ে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকে ২০জন কর্মজীবী শিশু-কিশোরের ব্যাংক হিসাব খুলেছে। ২০১৪ সালে প্রাথমিকভাবে ১০টি ব্যাংক পথশিশুদের ব্যাংক হিসাব খোলার দায়িত্ব নেয়। পরে আরও ৯টি ব্যাংক এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এগুলো হলো, সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, দ্য সিটি ব্যাংক, আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ডাচ বাংলা, প্রাইম ও উত্তরা ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে যে ১৫টি এনজিও পথশিশুদের ব্যাংক হিসাব দেখভাল করছে। এই এনজিওগুলো হলো, মাসাস, সাফ, উদ্দীপন, অপরাজেয় বাংলাদেশ, ব্র্যাক, নারী মৈত্রী, সিপিডি, প্রদীপন, সাজিদা ফাউন্ডেশন, এএসডি, শক্তি বিদ্যালয়, ইবিসিআর প্রকল্প, মানবসেবা সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা, সোসাইটি ফার আনপ্রিভিলিজেড ফ্যামিলি ও পরিবর্তন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।