পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সকল তর্জন-গর্জন, হুমকি-ধমকির অবসান ঘটিয়ে কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত রাখার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন। গতকাল মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের স্যান্টোসা দ্বীপের পাঁচ তারকা ক্যাপেল্লা হোটেলে অনুিষ্ঠত বিরল বৈঠকে এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন কিম-ট্রাম্প। উত্তর কোরিয়ার নেতা এবং কোন মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যে এটি প্রথম বৈঠক। খবর আল জাজিরা, রয়টারস ও বিবিসি।
স্থানীয় সময় সকাল নয়টায় (০১ঃ ০০জিএমটি) এ বৈঠক শুরু হয়। শেষ হয় দুপুর দু’টার (০৬ঃ০০জিএমটি) কিছু আগে। দু’নেতাকে পরস্পর করমর্দন, হাসি ও আশাবাদী মন্তব্য করতে দেখা যায়। দুই নেতার মধ্যে স্বাক্ষরিত এ চুক্তিতে দু’দেশের মধ্যে সাত দশকের বৈরিতার শান্তিপূর্ণ সমাধান ও পারমাণবিক উত্তেজনা অবসানের অঙ্গীকার করা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র তার পুরনো শত্রæ উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তার নিশ্চিতের অঙ্গীকার করেছে, অন্যদিকে উত্তর কোরিয়া কোরীয় উপদ্বীপের পূর্ণাঙ্গ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের লক্ষে কাজ করার প্রতিশ্রæতি দিয়েছে।
এই শর্ত যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা মঙ্গলবারের বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার নিকট থেকে যে সম্পূর্ণ, প্রমাণযোগ্য, অপরিবর্তনীয় পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের আশা করেছিল তার চেয়ে কিছুটা কম।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প স্বাক্ষরিত চুক্তি সমর্থন করে বলেন, তারা চুক্তির শর্তসমূহের প্রতি প্রতিশ্রæতিবদ্ধ।
ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, আজ এক কঠিন প্রক্রিয়ার শুরু হল। আমাদের চোখ খোলা। তবে শান্তি হচ্ছে প্রচেষ্টার ফসল, বিশেষ করে এইক্ষেত্রে। ট্রাম্প বলেন, ‘অনেক অগ্রগতি হয়েছে যা সত্যিই খুব ইতিবাচক। আমি মনে করি, যে কারো প্রত্যাশার চেয়ে আলোচনা ভালে হয়েছে।’
দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এ নথিতে স্বাক্ষর করলেও তাৎক্ষণিকভাবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেয়া হয়নি। তবে ট্রাম্প বলেছেন, আমরা গুরুত্বপূর্ণ একটি নথিতে স্বাক্ষর করেছি। এ সময় ট্রাম্প বলেন, আমরা একসঙ্গে অত্যন্ত ভালো একটা সময় পার করলাম। শিগগিরই এই চুক্তির ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে আলোচনা করা হবে।
বিবিসি জানায়, দুই নেতা ঠিক কি বিষয়ের নথিপত্রে স্বাক্ষর করেছে তৎক্ষণাৎ তা জানা না গেলেও বলা হয়েছে যে এটি ঐতিহাসিক ও সুসংহত।
অনুবাদকের মাধ্যমে কিম জং উন বলেন, আমরা অতীতকে পেছনে ফেলে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পৃথিবী গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন দেখতে পাবে।
ট্রাম্প বলেন, আমরা বিশেষ সম্পর্ক তৈরি করেছি। যে কারো প্রত্যাশার চেয়ে ভালো বৈঠক হয়েছে। কেউই এতটা ভালো প্রত্যাশা করেনি। কোরীয় উপদ্বীপকে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন এ প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা এই প্রক্রিয়া খুব শিগগিরই শুরু করতে যাচ্ছি। দু’ নেতা পরস্পরের কাছ থেকে বিদায় নিতে হোটেলের বারান্দায় দাঁড়ান। ট্রাম্প বলেন, আমরা আবার সাক্ষাত করব। আমরা বহুবার মিলিত হব।
এদিকে বিশ্লেষকরা চুক্তির ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্ন মত ব্যক্ত করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, এটা একই রকম প্রচেষ্টায় পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের ক্ষেত্রে অতীতের ভুলের পুনরাবৃত্তি।
সিঙ্গাপুর ম্যানেজমেন্ট বিশ^বিদ্যালয়ের আইনের সহযোগী অধ্যাপক ইউজিন তান বলেন, ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বহু কিছু এখনো করতে হবে এবং এ ব্যাপারে সামনে বাধা আসবে।
উত্তর কোরিয়ায় বাণিজ্য ওয়ার্কশপের উদ্যোক্তা সিঙ্গাপুর ভিত্তিক অলাভজনক চোসোন এক্সচেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা জিওফ্রি সি বলেন, উভয়পক্ষ কিভাবে তাদের লক্ষ্য অর্জন করবে সে বিষয়ে শীর্ষ বৈঠকে বিশদ আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বৈঠকে আস্থা, সম্পর্ক ও প্রত্যাশার মধ্য দিয়ে আগের অবস্থার পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করার পর ট্রাম্প ও কিম শুধুমাত্র দোভাষীদের নিয়ে একান্ত বৈঠকে মিলিত হন। ট্রাম্পের সাথে একান্ত বৈঠকে যাওয়ার সময় কিম বলেন, এখানে আসাটা সহজ ছিল না। পুরনো সংস্কার ও অভ্যাস আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধা হিসেবে কাজ করেছে। তবে আমরা তা কাটিয়ে উঠেছি এবং সে জন্যই আজ আমরা এখানে।
এদিকে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া ট্রাম্প-কিম চুক্তির পর উত্তর কোরিয়ার সাথে আচরণের বিষয়ে ভিন্নমত ব্যক্ত করেছে। সিঙ্গাপুরে এস রাজারতœম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের রিসার্চ ফেলো গ্রাহাম ওং-ওয়েব আল জাজিরাকে বলেন, চূড়ান্ত প্রস্তাবের অবিচ্ছেদ্য অংশ দু’টি দেশই ট্রাম্পের উত্ত্র কোরিয়ার প্রতি দ্বিমুখী নীতি অবস্থান সর্বোচ্চ চাপ ও আলোচনার কারণে মত ব্যবধানের শিকার হয়েছে। জাপান মনে করে, উত্তর কোরিয়ার উপর সর্বোচ্চ চাপ বজায় রাখতে হবে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে মনে করেন যে উত্তর কোরিয়া যখন পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ে তার সম্ভাব্য অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করবে তখনি শুধু আমরা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেব। তিনি আরো বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া এ ব্যাপারে নমনীয় মনোভাব প্রদর্শন করেছে। তারা বুঝতে পেরেছে যে আলোচনা অধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং মনে করে যে উত্তর কোরিয়াকে পুরস্কার ও প্রণোদনা হিসেবে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হলে তাতে অগ্রগতি হবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন মঙ্গলবার বলেন, তিনি শীর্ষ বৈঠকের আগে একটি নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। তিনি বলেন, তার আশা যে এ ট্রাম্প ও কিমের মধ্যে বৈঠক সম্পূর্ণ রূপে পরমাণু অস্ত্র মুক্তকরণ, শান্তি এবং দক্ষিণ কোরিয়া, উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন অধ্যায় রচনা করবে।
ট্রাম্প ও কিমের মধ্যে একান্ত বৈঠক ৪৮ মিনিট স্থায়ী হয়। এ বৈঠকের পর ট্রাম্প বলেন, বৈঠকটি খুব, খুব ভালো হয়েছে। তিনি বলেন, তার ও কিমের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। তারপর দু’নেতা সম্প্রসারিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যোগ দেন। সভাকক্ষে আসন নেয়ার পর কিম বলেন, আমরা অসহযোগিতার অতীতকে ফেলে এসেচি ও নতুন ভোরের প্রত্যাশা করতে পারি।
ট্রাম্প বলেন, আমরা সফল হব।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে প হো ররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন ও চিফ অব স্টাফ জন কেলি যোগ দেন। উত্তর কোরিয়ার পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি ইয়ংএবং কিমের ডান হাত বলে পরিচত কিম ইয়ং চোল বৈঠকে যোগ দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।