Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

পিপিপিতে বরাদ্দ ৩ হাজার কোটি টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০১৮, ৯:০৫ পিএম

অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারি বেসরকারি অংশিদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। চলতি অর্থবছর এ খাতে ২ হাজার ১১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। বাস্তবায়নে প্রত্যাশিত অগ্রগতি না থাকলেও পিপিপির মাধ্যমে বাস্তবায়নের জন্য ৭৮ প্রকল্প চিহ্নিত করে বরাদ্দ ৮৮৭ কোটি টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী পিপিপি’র এ বরাদ্দ উপস্থাপন করেন জাতীয় সংসদে।
জাতীয় সংসদে তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠনে পিপিপি সরকারের অন্যতম প্রধান অঙ্গীকার। বাংলাদেশ রেলওয়ের অনেক অব্যবহৃত ভূমি রয়েছে। এসব অব্যবহৃত ভূমির উপর পিপিপি’র আওতায় শপিং মল, ফাইভ স্টার হোটেল, মেডিকেল কলেজ নির্মাণ এবং বিদ্যমান রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতাল আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পিপিপি’র আওতায় খান জাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, ২০০৯ সালে অর্থমন্ত্রী দেশে পিপিপির মাধ্যমে সমুদ্র ও বিমানবন্দর, সাধারণ ও বিশেষায়িত হাসপাতাল, সড়ক ও রেলপথ এবং বড় বড় সেতু নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছিলেন। প্রতি বছর ৩৯ হাজার কোটি টাকা হিসাবে পাঁচ বছরে এক লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা পিপিপি থেকেই পাওয়া যাবে বলেও আশা করেছিলেন তিনি।
সূত্র জানায়, ওই সময় থেকেক দুই মেয়াদে আওয়ামীলীগ সরকারের প্রতিটি বাজেটেই পিপিপি খাত নিয়ে আশাবাদ শোনানো হয়েছে। অর্থবছর শেষে শোনানো হয়েছে ব্যর্থতার কথাও। তবে বিগত বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আদুল মুহিত প্রথমবারের মতো পিপিপি ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে সফলতার কথা বলেছেন। নতুন অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় তিনি জানিয়েছেন এ খাতে নতুন কিছু উদ্যোগের কথা।
আগামী অর্থবছর থেকে অবকাঠামো খাতে নেয়া বিনিয়োগ প্রকল্পের অন্তত ৩০ শতাংশ পিপিপি ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা বাধ্যতামূলক হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে মিরপুর ৯ নং সেকশনে স্যাটেলাইট সিটি নির্মান এবং মংলা পোর্ট টাওয়ার নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেনের এক্সপ্রেসওয়ে, হাটিকুমরুল নাটোর হয়ে রাজশাহী, নবীনগর-মানিকগঞ্জ, কালাকান্দী, মদনপুর, ডেমরা, বাইপাইল, গাবতলী থেকে নবীনগর পর্যন্ত মহাসড়ক আট লেন, গাজীপুর হয়ে সাভারের হেমায়েতপুর, গাবতলী-নবীনগর মহাসড়ক, ঢাকা সার্কুলার রোড দ্বিতীয় প্রকল্প, জয়দেবপুর-দেবগ্রাম-ভুলতা-মদনপুর মহাসড়ক ও হাতিরঝিল-রামপুরা-বনশ্রী হয়ে তারাব লিঙ্ক মহাসড়ক অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈরে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের জন্য সার্ভিস এরিয়া নির্মাণ করা হবে পিপিপি ভিত্তিতে।
পরিকল্পনা কমিশনে তথ্য অনুযায়ী, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে আগামী ১৩ বছরে বাংলাদেশের অতিরিক্ত ৯২ হাজার ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন। এ অর্থের মাত্র ১৫ শতাংশ অর্থায়ন বিদেশি উৎস থেকে পাওয়া যাবে। সরকারের একার পক্ষে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। এই প্রেক্ষিতে সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নে বেসরকারি খাতের অন্তর্ভূক্তি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শুরু থেকেই বাংলাদেশে পিপিপি প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দিয়ে আসছে দাতাসংস্থা বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে পিপিপি উন্নয়নে ৩৫ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার সহায়তার প্রস্তাাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটির অবকাঠামো উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী দেশগুলোর বিবেচনায় বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়নে মারাত্মক হারে পিছিয়ে রয়েছে। ১৪৪টি দেশের মধ্যে অবকাঠামো সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩০তম। এ অবস্থায় অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ জিডিপির আরও তিন শতাংশ বাড়াতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাজেট

১৩ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ