পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অনেকেই এই বাজেটকে উচ্চাভিলাষী বাজেট হিসেবে অভিহিত করেছেন। আংশিক ব্যবসা বান্ধব হলেও বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জিং হিসেবে দেখছে ফেডারেশন অব চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই)। আবার সরকার দলের নেই এমন রাজনৈতিক দলগুলো এই বাজেটকে লুটপাট ও উচ্চশ্রেণির বাজেট হিসেবে মন্তব্য করেছেন। তবে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ বাজেটকে উচ্চাভিলাষী নয় মনে করেন না। তিনি বলেন, অনেকে বলছেন, এটা উচ্চাভিলাষী বাজেট। আমি তা মনে করি, না। মানুষ বাড়ছে, অর্থনীতির আকার বাড়ছে। সেখানে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা বাড়বে এটা স্বাভাবিক। হ্যাঁ, একটি লক্ষ্যমাত্রা তো নির্ধারিত হলো। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের দিকে জোর দিতে হবে। অর্থমন্ত্রী কয়েক দিন আগেও বলেছেন, মন্ত্রণালয়গুলো বাজেট গৃহীত হওয়ার পরদিন থেকে খরচ করতে পারবে। এটা যদি বাস্তবে ঘটে, তবে এই বাজেট বাস্তবায়ন অসম্ভব কিছু নয়। কিন্তু এর জন্য প্রশাসনকে গণমুখী ও উন্নয়নমুখী করতে হবে। গত বছর প্রচেষ্টার পরও ৮০ থেকে ৮২ শতাংশের বেশি ব্যয় সম্ভব হয়নি। এখন পদক্ষেপগুলো নিলে বাস্তবায়ন উল্লেখযোগ্য হারে পূরণ হওয়া সম্ভব।
প্রস্তাবিত বাজেটে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। সেদিকে লক্ষ রেখে বলতে পারি, প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব। মূল্যস্ফীতির পরিমাণ ৫ দশমিক ৬ ঠিকই নির্ধারণ করা হয়েছে। আমাদের উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে এই মাত্রা গ্রহণযোগ্য। এখানে মূল্যস্ফীতির এই হারটি ধরে রাখা গেলে ভালো।
পিকেএসএফ চেয়ারম্যান বলেন, আমি এই বাজেটের কিছু ইতিবাচক দিক দেখছি। সেখানে বড় দিকটি হলো, কর্মসংস্থানের ওপর জোর দেওয়া। বিরাটসংখ্যক তরুণ প্রজন্মকে অবশ্যই কর্মে নিয়োজিত রাখতে হবে। বাজেটে তাদের জন্য কর্মসংস্থানের প্রতি নজর দেওয়া হয়েছে। তাদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এটি আশাব্যঞ্জক। আরেকটি ইতিবাচক দিক হলো অর্থমন্ত্রী স্বশাসিত এবং স্বয়ম্ভর জেলা সরকারের ইচ্ছে ব্যক্ত করেছেন। স্থানীয় সরকারের এই প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা না থাকলে উন্নয়ন কর্মকা- ত্বরান্বিত হবে না। তবে এখানে একটি কথা বলতে চাই। অর্থমন্ত্রী জেলা পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানের স্বশাসনের কথাই শুধু বলেছেন। আমার মনে হয়, একে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে। উন্নয়ন তাহলেই জনমানুষের কাছে গিয়ে পৌঁছাবে। বাজেটের আরেকটি ইতিবাচক দিক হলো সর্বজনীন পেনশনের ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগ। এটা কঠিন বিষয় বলে মনে হয়। তবে কার্যকর করা হলে খুব ভালো হবে। বৃদ্ধ অনেক বাবা-মাকে সন্তানেরা দেখে না। গ্রামাঞ্চলে, বিশেষ করে বয়স্ক দরিদ্র মানুষ কিছু অর্থ পেলে সেটা তাঁদের জন্য সহায় হয়।
বাজেটের আরেকটি ইতিবাচক দিক, কৃষিতে বরাদ্দ ও ভর্তুকি বাড়ানোর প্রস্তাব। গত বছর বরাদ্দ কমানো হয়েছিল। আমিসহ অনেকেই এর সমালোচনা করে ছিলাম। এবার কৃষি ভর্তুকি শুধু বৃদ্ধি নয়, কৃষি যন্ত্রাংশের ওপর শুল্ক রহিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সত্যিকার অর্থে আমাদের উৎপাদনের বড় ভিত তো কৃষি। সেখানে এসব উদ্যোগ নিঃসন্দেহে ভালো। তামাক নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আমি একে ইতিবাচক হিসেবে দেখছি।
বাজেট বিশ্লেষণ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে খলীকুজ্জামান বলেন, আমাদের দারিদ্র্য কমছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এই কমার হার শ্লথ হয়ে গেছে। আর মানুষে মানুষে বাড়ছে বৈষম্য। কীভাবে দারিদ্র্য কমানোর গতিকে ত্বরান্বিত করা হবে বা বৈষম্য কমানো হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি অর্থমন্ত্রী। হয়তো এ নিয়ে তাঁদের ভাবনা আছে। আমাদের ১২ দশমিক ৯ শতাংশ অতিদরিদ্র মানুষ আছে। এদের মধ্যে দলিত, পাহাড়ি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ, হাওর ও চরের মানুষ আছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় তাদের অনেকে আছে। কিন্তু এটি সাময়িক ব্যবস্থা। বৈষম্যের কবলে থাকা এসব মানুষের উত্তরণে কী করা হবে, তা স্পষ্ট নয়।
বাজেট উচ্চাভিলাষী নয় জানিয়ে এই অর্থনীতিবিদন বলেন, সবকিছু মিলিয়ে এ বাজেটকে আমি উচ্চাভিলাষী বলতে রাজি নই। এটি বাস্তবায়নযোগ্য। তবে অবশ্যই এর জন্য দক্ষ জনশক্তির সঠিক ব্যবহার, দক্ষতা বৃদ্ধির দিকে জোর দিতে হবে। প্রথম দিন থেকে খরচ করার মতো প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।