Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গায়ক আসিফ কারাগারে

| প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

কোর্ট রিপোর্টার : স্যার, তার (সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী শফিক তুহিন) বিরুদ্ধে আমার আগেই মামলা করা উচিত ছিল। কিন্তু মামলাটা না করে আমি বড় ভুল করেছি। কারণ আমার বিরুদ্ধে আগে ফেসবুকে সে (সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী শফিক তুহিন) মানহানিকর কথা লিখেছে। আমি শুধু সেই কথাগুলোর প্রতিবাদ সরুপ উত্তর দিয়েছি।
গতকাল আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বিচারককে উদ্দেশ্য করে কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর রিমান্ড ও জমিন শুনানীতে এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, অনুমতি ছাড়াই সংগীতকর্মসহ অন্যান্য গীতিকার, সুরকার ও শিল্পীদের ৬১৭টি গান সবার অজান্তে বিক্রি করেছি এ অভিযোগ আনা হয়েছে। এটা সম্পুর্ন মিথ্যা কথা। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমি এর লাভের এক টাকাও পাইনি। প্রয়োজনে আপনি আমার সমস্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট চেক করে দেখতে পারেন। শুধু শুধু হয়রানি করার জন্য ঘটনা সাজিয়ে এ মামলা করা হয়েছে। পরে পিছন থেকে একাধিক আইনজীবী চিৎকার করে বলতে থাকে স্যার, আমাদের কুমিল্লার ছেলে আসিফ ভাই তাকে জামিন দেন।
এ সময় ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম কেশব রায় চৌধুরী কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমি আপনার সবকিছুই জানি। আপনাকে ভাল করে চিনি। আপনাদের বাসার কাছে আমাদের আড্ডার এলাকা ছিলো। আমিওতো একই এলাকার ছেলে। বলেন তো, আপনি কেন গান ছেড়ে দিয়ে রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলেন? বিচারক আরো বলেন, মামলাটি করা হয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে। জামিন দিলে আইনের কিছু জটিলতা আছে। সবকিছু জানার পরও আমার কিছু করার নেই।
এরপর আসিফের আইনজীবী মো. ওমর ফারুক ও আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘স্যার দরখাস্তকারী আসিফ আকবর আবারও গান শুরু করেছেন। সামনে পবিত্র ঈদ। ভক্তরা তাকে নিয়ে ঈদ করতে চায়। এ মামলায় যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তাকে জামিন দিলে পালাতক হবেন না।
এরআগে আদালত পুলিশের জেনারেল রেকডিং অফিসার (জিআরও) তাহেরা বানু রিমান্ডের পক্ষে বলেন, ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটন, মূল হোতাকে খুঁজে বের করা, আসামির সহযোগীদের নাম ও ঠিকানা এবং আসামির নাম ঠিকানা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া মামলার অভিযোগের বিষয়ে ইলেক্ট্রনিকস ডিভাইসের পরিচিতি এবং আসিফের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানার জন্য তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসা করা প্রয়োজন। উভয় পক্ষের শুনানী শেষে জামিন ও রিমান্ড আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম কেশব রায় চৌধুরী।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ১ জুন রাতে একটি বেসরকারী টেলিভিশন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি ‘গান চুরির’ বিষয়টি জানতে পারেন বাদী। পরে আসামি আসিফ তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আর্ব এন্টারটেইনমেন্ট এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গানগুলো বিক্রি করে ‘প্রতারণার মাধ্যমে’ বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন। ঘটনা জানার পর গত ২ জুন রাতে শফিক তুহিন বিষয়টি নিয়ে ফেইসবুকে একটি পোস্ট দিলে আসিফ আকবর সেখানে বিভিন্ন অশালীন মন্তব্য করেন এবং হুমকি দেন। পরে ফেইসবুক লাইভেও ‘অবমাননাকর, অশালীন ও মিথ্যা’ বক্তব্য এবং ‘শায়েস্তা করার হুমকি’ দেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
উল্লেখ্য, আসিফের প্রথম অ্যালবাম ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ প্রকাশিত হয় ২০০১ সালে। ওই অ্যালবামের কয়েকটি গান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। পরের বছরগুলোতে ঢাকাই সিনেমার বহু গানে কণ্ঠ দেন আসিফ। এদিকে শফিক তুহিন তার প্রথম গান ‘এর বেশি ভালোবাসা যায় না, ও আমার প্রাণ পাখি ময়না’ দিয়েই আলোচনায় আসেন।

 



 

Show all comments
  • মাসুদ ৭ জুন, ২০১৮, ২:৩২ এএম says : 0
    বিষয়টি খুবই দুঃখজনক
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ