Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কঠিন চ্যালেঞ্জ এনবিআর’র

| প্রকাশের সময় : ৬ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

হাসান সোহেল : এক অর্থবছর ঘুরে দুয়ারে কড়া নাড়ছে নতুন অর্থবছরের বাজেট। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট আগামীকাল বৃহষ্পতিবার পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বাজেটের সম্ভাব্য আকার হতে পারে ৪ লাখ ৬৮ হাজার ২০০ কোটি টাকা। বিশাল এই বাজেটের অধিকাংশই (৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা) আসবে রাজস্ব আয় থেকে। এর মধ্যে এনবিআরকে আয় করতে হবে ২ লাখ ৯৬ হাজার কোটি। এটি চলতি অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকার চেয়ে ৭১ হাজার কোটি টাকা বেশি, প্রায় ৩২ শতাংশ। বছর শেষ পর্যায়ে এসেও সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় রয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে রাজস্ব আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ শতাংশ। এরপরও রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন উদ্বিগ্ন নন অর্থমন্ত্রী। বাজেটে তিনি রাজস্ব আয়ের জন্য বড় কোনো সংস্কারেরও কথা বলেননি এ পর্যন্ত। এদিকে সংশোধিত লক্ষ্য পূরণে শেষ মুহূর্তে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, সরকারি-বেসরকারি বড় বড় প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব বকেয়া আর কর ফাঁকির কারণে লক্ষ্য পূরণ না হচ্ছেনা। এরই মধ্যে এই বকেয়া কর আদায়ে বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করছে এনবিআর। যদিও আসন্ন বড় বাজেটের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অর্থসংস্থানের জন্য রাজস্ব খাতেও সংস্কার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
এনবিআর চেয়ারম্যান রাজস্ব আদায়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেও তাতে কর্ণপাত করছেন না অর্থমন্ত্রী। তিনি ইতোমধ্যে জানিয়েছেন আসন্ন বাজেটে নতুন করে কোনো কর আরোপ হবে না। কর না বাড়লে রাজস্ব বাড়বে কীভাবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, আমাদের রাজস্ব আহরণকারী সংস্থা এনবিআরের লোকজনের মন মানসিকতায় পরিবর্তন হয়েছে। একই সঙ্গে আইনেও জটিলতা কমানো হয়েছে। তাই বেশি সংখ্যক মানুষ আয়কর দিচ্ছে। এ খাত থেকেই রাজস্ব বাড়বে।
বছর শেষে ভালো রাজস্ব আয় হবে বলে আশাবাদী অর্থমন্ত্রী। তরুণ করদাতাদের উৎসাহ, কর কর্মকর্তাদের আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন এবং ভ্যাট হারে পরিবর্তন তাকে আশাবাদী করে তুলেছে। একই সঙ্গে বাজেটে নতুন কয়েকটি কর অঞ্চল গঠনের ঘোষনা থাকছে বলে জানিয়েছেন।
গবেষণা সংস্থা সিপিডি বলেছে, আগামী অর্থ বছর শেষে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য আবারো সংশোধন করতে হবে। চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছিলো ২ লাখ ৮৭ হাজার ৯শ ৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআর এর আদায়ের লক্ষ্য দেয়া হয়েছিলো ২ লাখ ৪৮ হাজার ১শ’৯০ কোটি। বাকি আয় আসার কথা ছিলো এনবিআরবহির্ভূত কর রাজস্ব এবং করব্যতীত প্রাপ্তি থেকে। এনবিআর এ বিশাল আয়ের লক্ষ্য পূরণ করতে পারবে না, কাজেই লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করে তাদের ২ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা আয় করতে বলা হয়েছে। সেটাও এনবিআর’র জন্য কষ্টসাধ্য হবে।
অতীতের মতো আগামী বাজেটেও সব চেয়ে বেশি প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টায় ধরা হয়েছে ভ্যাট থেকে, এর পরই আছে আয়কর ১ লাখ ২শ’ কোটি এবং শুল্ক থেকে আয় হতে পারে সাড়ে ৮৫ হাজার কোটি টাকা।
গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনষ্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, এনবিআরের রাজস্ব লক্ষ্য অর্জন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। নির্বাচনের কারণে সরকার রাজস্ব খাতে বড় কোনো সংস্কার আনতে পারবে না। তাই রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যের ধারেকাছেও যাবে না এনবিআর। তা ছাড়া রাজস্ব আদায় তো মুখের কথায় হবে না। ভ্যাট, আয়কর ও শুল্ক এই তিন নতুন আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।
তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেছেন, রাজস্ব খাতের বর্তমান পরিস্থিতিও খুব ভালো নয়। মোট রাজস্বের ৮০ শতাংশের মতো আসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে। এ বছরও রাজস্ব আদায়ে বড় মাত্রায় ঘাটতি হবে। তাই আগামী বছরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনতো আরও চ্যালেঞ্জের। ###



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাজেট

১৩ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ