পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1720132273](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতিরাতেই জ্বর আসে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসনের পরিবারের সদস্যরা কারাগারে তার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার প্রতিরাতেই জ্বর আসছে। জ্বরটা যাচ্ছেই না। এটা যে কোন সুস্থ মানুষের জন্যও অত্যন্ত এলার্মিং। এছাড়া কারাগারে বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানির সংকটের মধ্যে খালেদা জিয়া মানবেতর দিনযাপন করছে। প্রতিদনই তার শ্বাসকষ্ট বাড়ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। গতকাল (বুধবার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, স্বজনেরা দেখেছেন, খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ, এই অসুস্থতা এমন পর্যায়ে গেছে যে তিনি ঠিকমতো হাঁটতে পারছেন না। আমরা আগে জানিয়েছিলাম, ওনার বাম হাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিউরো প্রবলেম আগের চেয়ে অনেক গুণ বেড়ে গেছে। আগে থেকেই দেশনেত্রী অস্ট্রিওআর্থারাইটিজ, বেক পেইন, রক্তশূণ্যতা, কিডনি জটিলতাসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। ২০ বছর আগে তাঁর দুই হাঁটু প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। দুই চোখে অপারেশন করা হয়েছে। এসব সমস্যার মধ্যে কারাগারে গিয়ে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের সেবা থেকে তিনি বঞ্চিত হচ্ছেন। এ ছাড়া চিকিৎসকেরা তাঁকে যে পিজিওথেরাপির পরামর্শ দিয়েছেন, তা তিনি পাচ্ছেন না। এখনই জরুরিভাবে তার রক্ত পরীক্ষা করা দরকার। বিশেষায়িত এমআরআই করা দরকার। তার সঠিক চিকিৎসা প্রয়োজন। আমরা মনে করি, কোনো কাল বিলম্ব না করে অবিলম্বে তাকে বিশেষায়িত হাসপাতালে, আমরা বলেছিলাম গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
কারাগারে বিদ্যুৎ থাকে না ও বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায়না অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়াকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরোনো যে কারাগারে রাখা হয়েছে, সেখানে প্রায়ই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। আর বিদ্যুৎ চলে গেলে কোনো বৈদ্যুতিক পাখা কাজ করে না, অন্যান্য বাতিও জ্বলে না। বিদ্যুৎ চলে গেলে খালেদা জিয়ার কক্ষে বিকল্প হিসেবে মোমবাতি ও হাতপাখা দিয়ে কাজ চালাতে হয়। এই যে অমানবিকতা, এই যে হৃদয়হীনতা, এর তুলনা নেই। আগে এই কারাগারেই জেনারেটর ছিল। কিন্তু এখন নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগারটিতে যেখানে সাবেক একজন প্রধানমন্ত্রীকে রাখা হয়েছে সেখানে কোনো জেনারেটর নেই। আমরা যখন এই কারাগারে বন্দি ছিলাম, তখন শক্তিশালী জেনারেটর ছিল। তখন দেখতাম, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কখনো বিদ্যুৎ যায় না। এখন জেনারেটর নেই। প্রায়ই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে।
খালেদা জিয়াকে তার প্রাপ্য মর্যাদা ও সম্মান দেয়া হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা বারবার বলেছি, সাধারণ যে নিয়ম আছে, যারা শ্রেণিপ্রাপ্ত, তারা নিজের খরচে অনেক কিছুই নিয়ে আসতে পারে। এটা আমরাও ভোগ করেছি। কিন্তু খালেদা জিয়াকে কোনো সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এই সুযোগগুলো না দেওয়ার কারণে তিনি সারা জীবনে যেটায় অভ্যস্ত, মিনিমামটুকু সেখানে পাচ্ছেন না। সুস্থ মানুষ হিসেবে থাকার জন্য যেটা তার প্রয়োজন, সেটাও তিনি পাচ্ছেন না। তাকে চিকিৎসকরা প্রেসক্রাইব করেছে যে ফিজিওথেরাপি দরকার, সেটাও তিনি পাচ্ছেন না। কারাগারে এখন রান্নার মানও খুব খারাপ হয়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন বাইরে থেকে কোনো খাবার পরিবারের সদস্যের নিতে দেওয়া হচ্ছে না। ন্যূনতম মানবিক আচরণ তাঁর সঙ্গে করা হচ্ছে না। প্রথম শ্রেণির বন্দী হিসেবে যা তাঁর প্রাপ্য, সেটাও তিনি পাচ্ছেন না। এই কথাগুলো বলতে বলতে আমরা ক্লান্ত হয়ে গেছি। ন্যূনতম যেটুকু মানবিক আচরণ, যেটা পর্যন্ত করা হচ্ছে না। খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতালে নেওয়ার আবেদন প্রধানমন্ত্রীর কাছে আটকে রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীকে অনেকে অনুরোধ করেছেন, দেশে-বিদেশে তার কাছে অনেকে অনুরোধ এসছে যে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জামিন ও চিকিৎসার ব্যবস্থা যেন করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনি (প্রধানমন্ত্রী ) কিছুই করননি।
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়ার জামিন বিলম্ব করা হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মূল মামলায় তার জামিন হয়ে গেছে। সেই জামিন ঠেকানোর জন্য সরকার সর্বোচ্চ আদালতে গেছে। এক-মাস দুই মাস সেখানে কাটিয়েছে। তারপরে সেখানে জামিন দিতে যখন বাধ্য হয়েছে, তখন একটার পর একটা ওই সমস্ত মিথ্যা মামলা নিয়ে আসছে। সেই মিথ্যা মামলাগুলোতে হাইকোর্ট থেকে যখন জামিন পাচ্ছে সেই জামিনও আটকে দিচ্ছে। পুরো ব্যাপারটা হচ্ছে, সরকার সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বেআইনিভাবে জামিনকে আটকানোর জন্য তারা বাধার সৃষ্টি করছে। তিনি যেন বেরোতে না পারেন সেটা তারা নিশ্চিত করতে চাচ্ছে। সরকারের মূল লক্ষ্য দেশনেত্রীকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখা ও যে নির্বাচন ডিসেম্বরে আসছে সেই পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটকিয়ে রাখা।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এড. আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।