Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আবার খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত

অপর দুই মামলার জামিনের বিষয়ে আদেশ কাল : কুমিল্লার একটি মামলার শুনানি আজ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

 কুমিল্লায় হত্যা ও নাশকতার দুই মামলার সাবেক প্রধানন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া ৬ মাসের জামিন স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। একই সঙ্গে বিষয়টি শুনানির জন্য পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এ আদেশ দেন। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ আগামী ৩১ মে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। 

এদিকে মানহানি করা ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের অভিযোগে দুটি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে কাল (বৃহস্পতিবার)। গতকাল হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ শুনানি শেষে এ দিন র্ধায করেন। এছাড়্াও কুমিল্লা আরো একটি মামলার জামিন শুনানি আজ (বুধবার) হাইকোটের অন্য একটি বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে ইনকিলাবকে জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান। হাইকোর্টের প্রকাশিত কার্যতালিকায় মামলাটি শুনানির জন্য ২৫২ নম্বরে রয়েছে বলে তিনি জানান।
গত সোমবার বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ কুমিল্লার দুইটি মামলায় ৬ মাসের জামিন দেন। আর নড়াইলের মানহানির মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ হয়েছে। এই আদেশের দুই ঘণ্টার মধ্যে জামিন স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে যায় রাষ্ট্রপক্ষ। গতকাল শুনানি নিয়েই হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করে শুনানির জন্য আবেদন দুটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান চেম্বার বিচারপতি। খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন খন্দকার মাহবুব হোসেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন, মীর নাসির উদ্দিন, মাহবুব উদ্দিন খোকন,ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল প্রমুখ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো: বশির উল্লাহ।
পরে খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি সরকারের সদিচ্ছার উপর নির্ভর করছে। সরকার চায় খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে, কারাগারে রেখে তারা নির্বিঘেœন বাংলাদেশে বাকশাল কায়েম করবে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করবে। সেই স্বপ্ন কোনো দিনও সার্থক হবে না সেটা আমরা বিশ্বাস করি।
এ বক্তব্যে আপত্তি জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের সদিচ্ছা না হলে খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন না, এ ধরনের বক্তব্য আদালত অবমাননাকর। কারণ এই দেশে আদালত আছে। আদালত জামিন দিচ্ছে, আবার জামিন স্থগিতও করছে।
গত ২০ মে কুমিল্লা ও নড়াইলের তিন মামলায় জামিন চেয়ে খালেদা জিয়া আবেদন করেন। এর আগে গত ২২, ২৩ ও ২৪ মে জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়। এরপর দুইটি মামলার জামিন দেন আদালত। এছাড়াও নড়াইলের একটি মামলা উথাপন হয়নি মর্মে খারিজ করে হাইকোর্টের সংশিষ্ট বেঞ্চ।
দুই মামলায় জামিনে বিষয়ে আদেশ বৃহস্পতিবার:
মানহানি করা ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের অভিযোগে ২০১৬ সালের দুটি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে আদেশ আগামী বৃহস্পতিবার। মঙ্গলবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোঃ সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ দুই মামলায় পৃথক দুই জামিন আবেদনে শুনানি নিয়ে আদেশের জন্য এদিন ধার্য করেছে। তবে সেদিন এ দুই মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য শোনার পর আদালত আদেশ দেবে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। জামিন আবেদনের পক্ষে খন্দকার মাহবুব, এ জে মোহাম্মদ আলী ও জয়নুল আবেদীন শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ। এর আগে ২২ মে ওই দুই মামলায় জামিন চেয়ে আদালতে অনুমতি চান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। গতকাল সেই আবেদন দুটি শুনানির জন্য শেষে আেেদশের জন্য এ দিন নির্ধারণ করেন হাইকোর্ট।
মানচিত্র, জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ : জাতীয় পতাকা আলবদর ও রাজাকারদের গাড়িতে অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মানহানির মামলা করেন বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী। এ মামলায় ২০১৭ সালের ১২ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করা হয়। এরপর গত ১২ এপ্রিল আইনজীবীরা এ মামলায় তার জামিন চান। এরপর গত ১৭ মে আদালত তৃতীয় দফায় সময় পিছিয়ে আদেশের জন্য আগামী ৫ জুলাই আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন। এ অবস্থায় তার জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের অভিযোগ : মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের অভিযোগে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অপর মামলাটি করেন। এ মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ১৭ নবেম্বর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এরপর গত ২৫ এপ্রিল এ মামলায় খালেদা জিয়া জামিন চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু জামিন না দিয়ে ১৭ মে শুনানির দিন নির্ধারণ করেন আদালত। পরবর্তীতে ওই তারিখে তার গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকরের আদেশ দিয়ে ৫ জুলাই জামিন বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য করেন। এ অবস্থায় তার জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
প্রসঙ্গত, ১৬ মে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে দেয়া হাইকোর্টের জামিন বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। তবে অন্য মামলায় গ্রেফতাার দেখানোর কারণে জামিন পেলেও তিনি মুক্তি পাননি।



 

Show all comments
  • নাহিদ ৩০ মে, ২০১৮, ২:২৯ এএম says : 0
    কি বলবো তার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না
    Total Reply(0) Reply
  • babu ৩০ মে, ২০১৮, ৯:৪৭ এএম says : 0
    sorkar ja korsa ta thik na
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মামলা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ