Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রমজানের দ্বিতীয় জুমাতেও ছিল মুসল্লিদের ঢল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ার মধ্যদিয়ে গতকাল পবিত্র মাহে রমজানের দ্বিতীয় জুম্মার নামাজ আদায় করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। প্রথম জুম্মার মতোই গতকালকে রাজধানীর প্রতিটি মসজিদে ছিল মুসল্লিদের উপচে পড়া ভীড়। মসজিদগুলোতে ছিল নানা বয়সী মুসল্লিদের ব্যাপক উপস্থিতি। অধিকাংশ মসজিদে জায়গা ভরে রাস্তার অনেক দূর পর্যন্ত মুসল্লিদের নামাজের কাতার লক্ষ করা গেছে।
বিশ্বের মুসলমানদের কাছে সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ মাসটির নাম মাহে রমজান। আর সপ্তাহের সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ দিনের মধ্যে রয়েছে পবিত্র জুম্মার দিন। গতাকাল শুক্রবার ছিল পবিত্র রমজান মাসের দ্বিতীয় জুম্মা। জুমাবারের গুরুত্ব বুঝাগেছে মসজিদে মসজিদে বিশেষ করে জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররম, মহাখালীস্থ মসজিদ গাউছুল আজম, হাইকোর্ট জামে মসজিদ, লালবাগ শাহী মসজিদ, চকবাজার শাহী মসজিদসহ রাজধানীর গুরুত্বপূণ মসজিদগুলোতে ব্যাপক সমাগমের মাধ্যমে। মহাখালীস্থ মসজিদে গাউছুল আজমের অভ্যন্তরে মুসল্লিদের ঠাই হয়নি। এমতাবস্থায় এসব মসজিদ চত্বরে বিছানো অতিরিক্ত ছালার চটের জায়নামাজে অবস্থান নিয়ে নামাজ আদায় করতে হয়েছে মুসল্লিদের। মহাখালীস্থ মসজিদে গাউছুল আজমের মহিলা মসজিদের মুসল্লিদের ঠাই ছিল না। মসজিদে বাইরেও উম্মুক্তস্থানে মহিলা মুসল্লিগণ অবস্থান নিয়ে জুমার নামাজ আদায় করে স্বস্তি পেয়েছেন। বাইতুল মোকাররমের মসজিদে মুসল্লিদের ঠাই না হওয়ায় মুসল্লিরা যে যার মতো করে কাগজ বিছিয়ে নামাজ আদায় করেছে মসজিদ চত্বরে। রাজধানীর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মসজিদগুলোতেও ছিল একই অবস্থা।
মসজিদে মসজিদে হয়েছে বিশেষ খুৎবা আলোচনা। নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেম বিশেষ দোয়া মোনাজাত করা হয়। মুসল্লিদের নিরাপত্ত¦ার্থে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, মাহে রমজানের দ্বিতীয় জুমায়ও নগরীর মসজিদগুলোতে মুসল্লির ঢল নামে। নামাজে মুসল্লির কাতার মসজিদ ছাড়িয়ে ছাদ, বারান্দা এমনকি সড়কেও বিস্তৃত হয়। সেহেরি পর এক দফা বৃষ্টি হয়। জুমার আগে নগরীতে বয়ে যায় বাতাসের শীতল পরশ। আবহাওয়া ভাল থাকায় নগরবাসী আরামে জুমার নামাজ আদায় করে। জুমার আজানের আগেই মসজিদমুখী হন মুসল্লিরা। শিশু-কিশোর আর যুবকদের উপস্থিতি ছিল বেশি। নগরীর আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ, জমিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদ, লালদীঘি জামে মসজিদ, বায়তুশ শরফ জামে মসজিদ, এনায়েত বাজার শাহী জামে মসজিদ, চকবাজার অলি খাঁ জামে মসজিদ, চন্দনপুরা জামে মসজিদ, সিআরবি জামে মসজিদ, আগ্রাবাদ সিজিএস কলোনী জামে মসজিদ, জাম্বুরি ময়দান জামে মসজিদ, মুরাদপুর মসজিদে বেলাল, বহদ্দারহাট জামে মসজিদ, মেহেদীবাগ সিডিএ আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, হযরত আমানত শাহ দরগা মসজিদ, দক্ষিণ হালিশহর আলী শাহ জামে মসজিদ, বন্দরটিলা দারুস সালাম জামে মসজিদ, পাঠানটুলি চাট্টেশ্বরাই গায়েবি মসজিদ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ, মক্কি মসজিদসহ নগরীর প্রায় প্রতিটি মসজিদে ছিল মুসল্লিদের ঢল। জুমার নামাজ শেষে খতিব ও ইমামগণ দেশ-জাতি ও মুসলিম উম্মার কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন। নামাজ শেষে মুসল্লিরা পিতা-মতাসহ মুরব্বিদের কবর জেয়ারত করেন।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, রমজানের প্রথম জুমায় প্রবল ভারি বর্ষণের সাথে বজ্রপাতে অনেক মুসল্লী মসজিদে যেতে না পারলেও গতকাল দ্বিতীয় জুমার নামাজে দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিটি মসজিদে ছিল উপচে পড়া ভীড়। দুপুর ১২টা থেকেই মসজিদগুলোতে মসুল্লীদের আগমন শুরু হয়। দুপুর ১টার মধ্যে পূর্ণ হয়ে যায় মসজিদের মূল এলাকা। বেশীরভাগ মসজিদের ছাদের পরে বাইরেও গতকাল মুসুল্লীদের ভীড় ছিল লক্ষণীয়। দক্ষিণাঞ্চলে জুমা নামাজের সর্ববৃহত জামাত অনুষ্ঠিত হয় ফরিদপুরের বিশ্ব জাকরে মঞ্জিলে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল সংখ্যক জাকেরান ও আশেকানসহ বিপুল সংখ্যক মুসুল্লী বিশ্ব জাকের মঞ্জিল জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে মিলাদ ও দোয়া ছাড়াও ফাহেতা শরিফ পাঠ করে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের পীর ছাহেব হজরত মাওলানা শাহসুফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের রওজা শরিফ জিয়ারত করেন সমবেত মুসুল্লীয়ানগন। এছাড়াও ছারছিনা দরবার জামে মসজিদ ও চরমোনাই দরবার জামে মসজিদেও জুমার নামাজে বিপুল সংখ্যক মুসুল্লীয়ান অংশ নেন। বরিশাল মহানগরীর সর্ববৃহত জুমার জামাত অনুষ্ঠিত হয় চকবাজার জামে এবাদুল্লাহ মছজিদ ও নবগ্রাম রোড-চৌমহনী মসজিদ এ নুর তাবলিগ মারকাজ মসজিদে। এদুটি মসজিদেই কয়েক হাজার মুসুল্লী জুমার নামাজ আদায় করেন। এবারের রমজান শুরুর পরে গতকালই বরিশালে আবহাওয়া পরিস্থিতি যথেষ্ঠ ভাল ছিল। দিনের দ্বিতীয় প্রহরের শুরুতে কিছুটা মেঘের সাথে কয়েক মিনিটের হালকা বৃষ্টিপাতের পরে দিনভরই ছিল রোদের ঝলকানি। তবে তাপমাত্রার পারদ ছিল সহনীয় পর্যায়ে। পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা, ঝালকাঠী এবং মাদারীপুর ও শরিয়তপুরেও গতকালের জুমার জামাতে মুসুল্লীয়ানগনের অভূতপূর্ব উপস্থিতি ছিল লক্ষ করার মত।
কক্সবাজার ব্যুরো জানায়, পবিত্র মাহে রমজানের ২য় জুমাতেও কক্সবাজারের মসজিদে মসজিদে রোজাদার মুসল্লিদের ঢল দেখাগেছে। এছাড়াও রাতে তারাবি এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামজেও সর্বস্তরের মুসল্লিদের ঢলে যুবকদের উপস্থিতিই বেশী লক্ষ করা গেছে। এমনিতেই কক্সবাজারের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্ত। এর উপর এখন কক্সবাজারেও শুরু হয়েছে সারা দেশের মত মাদক বিরোধী অভিযান। এতে করে মুসল্লিরা মসজিদে যাতায়াতকে বেশী স্বাছন্দ অনুভব করছেন বলে মনে করছেন অনেকেই।
গতকাল কক্সবাজার শহরের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, বদর মোকাম মসজিদ, বায়তুশ শরফ জামে মসজিদ বড়বাজার জামে মসজিদ, লালদীঘির পাড় বায়তুর রাহমান জামে মসজিদ ও শহর তলীর লিংক রোড় ইমাম মুসলিম ইসলামিক সেন্টারে দেখা গেছে সর্বস্থরের মুসল্লিদের ঢল। এসময় শিশু-যুবা-বৃদ্ধ সব শ্রেণীর রোজাদার মুসল্লিদের সামাল দিতে মসজিদ কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হয়েছে।
এছাড়া রাতে তারাবি নামাজেও দেখাছে মুসল্লিদের ভিড়। শহর ও শহর তলীর প্রায় সব মসজিদেও প্রতিদিন দীর্ঘক্ষণ দাড়িঁয়ে সালাতুত তারাবি আদায় করছেন হাজার হাজার মুসল্লি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রমজানের

৩ এপ্রিল, ২০২২
৩ এপ্রিল, ২০২২
২২ এপ্রিল, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ