পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইরি-বোরো ধান উৎপাদনে বিপ্লব ঘটেছে সিলেট অঞ্চলে। গত বছর প্রকৃতির সর্বনাশা থাবায় যেই ফসল হারিয়ে মাথায় হাত দিয়েছিল কৃষক, এবার উৎপাদন সাফল্যে কৃষকের মুখে তৃপ্তির হাসি। পাকা ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত তারা। বিভাগে প্রায় ৯৬ ভাগ পাকা ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। এতে উৎপাদন হয়েছে ১৬ লাখ ৯৫ হাজার, ৮৩৯ মেট্রিক টন ধান। কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেট অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ আলতাবুর রহমান বলেছেন, বর্তমানে বিভাগে ধান কাটার বাকি রয়েছে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমি। শতভাগ ধান কাটা শেষ হলে উৎপাদনের পরিমাণ ১৯ লাখ ১৭ হাজার ১৪৭ মেট্রিক টনে দাঁড়াতে পারে বলে তিনি জানান। তবে, ধানের উৎপাদন আশাতীত হলেও ধানের মুল্য নিয়ে শঙ্কিত কৃষক। বাজার ব্যবস্থাপনায় সুষ্ঠু ও অগ্রসরমান নীতিমালা না থাকায় এমনটি হচ্ছে বলে জানান একাধিক কৃষক। বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদক প্রাপ্ত কৃষি উদ্যোক্তা আব্দুল বাছিত সেলিম বলেন, সাধারণ কৃষক জিম্মি মধ্যস্বত্তভোগীগের হাতে। তাদের সোনার ফসলে ভাগবসায় মিল মালিকরা। কৃষকের দুর্বলতার সুযোগে নিজদের ফায়দা তুলছে তারা। নিরূপায় কৃষক হয় কৃষি থেকে দুরে সরে যাচ্ছে, নতুবা ম্যারপ্যাচের মধ্যে কৃষি আবাদ চালিয়ে যাচ্ছে স্বল্প মেয়াদী মানসিকতায়। অপরদিকে ফসল বুনন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উৎপদান খরচ লাগামীন। পদে পদে খরচ, ফলে ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয় কৃষক। কৃষি পেশা হয়ে যাচ্ছে, হীনমনা কোন পরিচয়। আত্ম-পরিচয়ে আত্মতৃপ্তি না থাকায় কৃষির ভবিষ্যত আগামীতে চরম সঙ্কটে পড়বে বলে জানান ওই কৃষি উদ্যোক্তা। দৃশ্যমান গভীর অস্থিরতা কৃষি ভাবনায় সক্রিয় থাকলেও কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর, সিলেট সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে সিলেট বিভাগের চার জেলায় ৪ লাখ ৮১ হাজার ৫২১ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো আবাদ হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৪ লাখ ২৬ হাজার ৫৩৮ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়। এতে উৎপাদিত ধানের পরিমাণ ১৬ লাখ ৯৫ হাজার ৮৩৯ মেট্রিক টন। বর্তমানে ধান কাটার অপেক্ষায় রয়েছে ৫৪ হাজার ৯৮৩ হেক্টর জমি। আগামী সপ্তাহ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই বাকি জমির ধান কাটাও শেষ হয়ে যাবে বলে, আশাবাদ ব্যক্তি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে আরো ২ লাখ ১৬ হাজার ৮৩ টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে কৃষিবিভাগ সূত্র জানিয়েছে। সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত উৎপাদিত ধানের মধ্যে সর্বোচ্চ ৮ লাখ ২৭ হাজার ৬৭ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে সুনামগঞ্জ জেলায়। হবিগঞ্জ জেলায় ৩ লাখ ৮১ হাজার ৬৩৬ মেট্রিক টন, সিলেট জেলায় ২ লাখ ৯৪ হাজার ২৬৭ মেট্রিক টন ও মৌলভীবাজার জেলায় ১ লাখ ৯২ হাজার ৮৬৯ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে। শতভাগ ধান কাটা শেষ হলে উৎপাদনের পরিমাণ বেড়ে যাবে আরো । উৎপাদনের পরিমাণ ১৯ লাখ ১৭ হাজার ১৪৭ মেট্রিক টনে দাঁড়াতে পারে। কৃষি বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় আবাদ হওয়া হাইব্রিড ৮২ হাজার ৯৪৫ হেক্টর জমির মধ্যে ৭৭ হাজার ২৬৫ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। এতে উৎপাদন হয়েছে ৩ লাখ ৭১ হাজার ৩৪১ মেট্রিক টন ধান। এখনো হবিগঞ্জ জেলায় ৫ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমির ধান কাটা বাকি রয়েছে। উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের ধান আবাদ করা হয়েছিল ৩ লাখ ৮২ হাজার ৩৪৬ হেক্টর জমিতে। এ পর্যন্ত কাটা হয়েছে ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৪৩ হেক্টর জমির ধান। এতে ১২ লাখ ৯৭ হাজার ৯৭ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে। স্থানীয় জাতের ধান পুরো বিভাগে আবাদ করা হয়েছিল ১৬ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যে পুরো জমির ধানই কাটা হয়েছে। এতে উৎপাদিত হয়েছে ৩১ হাজার ৪০১ মেট্রিক টন ধান। বৈশাখের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বেশ আনন্দেই ছিলেন কৃষকরা। হঠাৎ আবহাওয়া প্রতিকূল হওয়ার ফলে অজানা আশঙ্কা দেখা দেয়। হাওরে ধান পাকলেও তীব্র শ্রমিক সঙ্কট, তীব্র বজ্রপাত, দিনের পর দিন বৃষ্টির ফলে একসময় কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েন। বিরূপ আবহাওয়ায় ধান কাটা বিলম্ব হওয়ায় ধান শুকানোতেও বিলম্ব হচ্ছে। অবশ্য সুনামগঞ্জের বেশিরভাগ হাওরের ধান কাটা শেষ হয়েছে সপ্তাহখানেক আগেই। আবহাওয়া অনুকূল না থাকায় রমজানের এই দিনেও হাওর পারের কৃষাণ-কৃষাণীরা ধান শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার অনেকে ধান গোলায় তুলেছেন। তবে গো-খাদ্য নিয়ে এবারও সঙ্কটে পড়বেন কৃষকরা এমন আশঙ্কা রয়েছে সর্বত্র। কৃষি সপ্রসারণ অধিদপ্তর, সিলেট অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ আলতাবুর রহমান বলেন, এ পর্যন্ত ৯৬ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। ধান কাটা শেষের পথে হলেও সরকারীভাবে ধান সংগ্রহ অভিযান এখন পর্যন্ত শুরু হয়নি সিলেট অঞ্চলে। প্রি-মৌসুমী বন্যার আশঙ্কায়, কৃষক বান্ধব উদ্যাগ হিসেবে সরকার হবিগঞ্জও সুনামগঞ্জ থেকে ধান সংগ্রহের নির্দেশনা দেন। এই নির্দেশনা প্রায় ১৯ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ধান সংগ্রহ শুরু হয়নি। সুনামগঞ্জ থেকে ৬ হাজার মেট্রিক টন ও হবিগঞ্জ থেকে ৩ হাজার মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের টার্গেট করা হয়। নীতিমালা অনুযায়ী একজন কৃষক থেকে সর্বোচ্চ ৩ টন ধান সংগহ করা হবে। কিন্তু ধান সংগ্রহ নিয়ে বাস্তবভিত্তিক সমস্যার মুখে পড়েছেন খাদ্য সংগ্রাহকরা। কৃষকের সংখ্যা বেশি হওয়ায়, নীতিমালায় পরিবর্তন এনে বেশি সংখ্যক কৃষকদের সংযুক্ত করতে চাইছেন ধান বিক্রিতে। সুনামগঞ্জ শালা খাদ্য গোদাম কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুর রব বলেন, সংগ্রহ নির্দেশনায় যে মানে ধান শুকনো হওয়ার কথা, বাস্তবে সেই মানে পাওয়া যাচ্ছে না। একই ভাবে কৃষকের সংখ্যা বহু, তাই চেষ্টা করা হচ্ছে ধানের পরিমান কম হলেও বেশি সংখ্যক কৃষিকদের সম্পৃক্ত করার বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়ায় ধান সংগ্রহে বিলম্ব হচ্ছে বলে তিনি জানান। সরকারীভাবে মূল্য অনুযায়ী প্রতি মেট্রিক টন ধানের মূল্যে ২৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে প্রতি কেজি ধানের মূল্যে পড়বে ২৬ টাকা। মন দাড়াবে ১০৪০ টাকা। কিন্তু বাজার মূল্যে মণ প্রতি মাত্র ৫০০- ৬০০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের। কিন্তু বিঘা প্রতি আবাদ খরচ প্রায় ৫ হাজার টাকা। তাই ব্যয়-আয় হিসাব নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।