পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানী জুড়ে তীব্র যানজটে জনজীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। এক থেকে দেড় কিলোমিটার রাস্তা পার হতেই সময় লাগছে দুই থেকে তিন ঘণ্টারও বেশি। এতে জনজীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। রমজানের শুরু থেকেই এই ভোগান্তি দিন দিন বেড়েই চলছে। গতকাল ৫ম রোজার দিনও এ ভোগান্তির অন্ত ছিলনা। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজটে অচল হয়ে পড়ে রাজধানীর সড়কগুলো। এতে বিকেলে ঘরেফেরা মনুষ পড়ে বিপাকে। ইফতারের আগে হাজার হাজার মানুষ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। যানজটে পড়ে অনেকেই রাস্তায় ইফতার করতে হয়েছে।
যানজটের কারণে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি অনেকে। আবার অনেকে যানজট এড়াতে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যাত্রা করেন। গতকাল দিনভর রাজধানীর প্রায় সব রাস্তায় যানবাহনের লম্বা লাইন দেখা গেছে। সকালে বিভিন্ন অফিস আদালতগামী ও বিকালে অফিস ফেরৎ মানুষ ও নানা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হয়েই নগরবাসীকে পড়তে হয়েছে চরম দুর্ভোগে। যানজটের কারণে সময়মত পাওয়া যায়নি গাড়ি। মাঝে মধ্যে দু’য়েকটি পাওয়া গেলেও দিতে হয়েছে অতিরিক্ত ভাড়া। বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটেই অনেককে যেতে হয়েছে নিজ নিজ গন্তব্যে। নগরবাসীর এ ভোগন্তির শেষ কোথায় কেউ জানেনা।
ঢাকার রাস্তায় যানজট নতুন কোনো বিষয় নয়। এটা যেন নগরবাসীর নিত্যসঙ্গী। পবিত্র রমজানের শুরু থেকেই সহনীয়তার মাত্রা ছাড়াতে শুরু করেছে যানজট। সেইসঙ্গে গণপরিবহণের স্বল্পতা হেতু নগরবাসীকে নাকাল হতে হচ্ছে।
গতকাল দুপুর থেকে রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন, প্রেসক্লাব, কাকরাইল মালিবাগ, নতুনবাজার, বাড্ডা, রামপুরা, মৌচাক, শান্তিনগর, গুলিস্তান, শাহবাগ, কারওয়ানবাজার, ফার্মগেট, মহাখালী ও বনানীতে তীব্র যানজট দেখা গেছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহনে বসে ছিলেন রোজাদার মানুষ।
দুপুর ১টায় মালিবাগ থেকে বারিধারা যাওয়ার উদ্দেশে গাড়িতে ওঠেন বাবুল হোসেন। ৪৫ মিনিট একই স্থানে গাড়িতে বসে বিরক্ত হয়ে হেঁটে গন্তব্যে যাত্রা শুরু করেন তিনি।
তিনি বলেন, সকাল থেকে রস্তায় যানজট কম থাকলেও দুপুরের পর থেকে অসহনীয় রূপ নিয়েছে। মালিবাগ থেকে কুড়িল বিশ্বরোডের রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়িগুলো একই জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিল।
আক্ষেপ করে তিনি বলেন, রমজানের শুরুতে যদি এমন অবস্থা হয়, তাহলে বাকি দিন পার হবে কীভাবে?
সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে দেখা যায়, দীর্ঘসময় রাস্তায় গাড়িগুলো একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসায় অনেকেই গন্তব্যেও দিকে পায়ে হাটা শুরু করেন।
এদিকে গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার রাস্তাগুলোতে হাঁটুসমান পানি জমে আছে। এ কারণে রাস্তা দিয়ে স্বাভাবিক গতিতে গাড়ি চলাচল সম্ভব হচ্ছে না।
পল্টন হয়ে শাহবাগ, কারওরানবাজার, ফার্মগেট এলাকায় পুরো রাস্তা জুড়ে থেমে থেমে গাড়ি চলেছে প্রায় সারা দিন।
প্রায় দেড় কোটি মানুষের বাস ৩০২ দশমিক ৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনের রাজধানী ঢাকায়। একটি আদর্শ নগরীতে যানবাহন চলাচলের জন্য রাস্তার প্রয়োজন যেখানে ২৫ শতাংশ, সেখানে ঢাকায় রয়েছে মাত্র ৮ শতাংশ। এর মধ্যে আবার বন্ধ থাকে সড়কের বেশিরভাগ অংশ। অপরিকল্পিত গাড়ি পার্কিং এবং সড়কের দুই পাশে অবৈধ দোকান নগরীতে যানজটের অন্যতম বড় কারণ। বাণিজ্যিক এলাকা থেকে শুরু করে নগরীর বিভিন্ন মহাসড়ক, অলিগলিতেও অবৈধভাবে গাড়ি পার্ক করে রাখা হয়। বিশেষ করে রাস্তার পাশে থাকা শপিংমল, হাসপাতাল, কমিউনিটি সেন্টার, স্কুল-কলেজগুলোর সামনে সকালে ও বিকেলে গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে যানজট ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
পার্কিংয়ের পাশাপাশি ফুটপাত দখলও যানজটের গুরুত্বপূর্ণ কারণ। এই ফুটপাত হকারদের দখলে থাকার কারণে পথচারীরা সড়কের পাশ দিয়ে হাটতে বাধ্য হন। ফলে নির্ধারিত গতিতে গাড়ি চালানো মুশকিল হয়ে পড়ে। এর পাশাপাশি ফুটপাতে যত্রতত্র বাস কাউন্টার গড়ে ওঠায় যাত্রী ওঠানামার কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, রাজধানীর ১৬৩ কিলোমিটার ফুটপাতের মধ্যে ১০৮ দশমিক ৬০ কিলোমিটার ফুটপাতই হকারদের দখলে। রমজান মাস এলে এই দখলদারিত্ব রাস্তায়ও বিস্তৃত হয়। স্বাভাবিকভাবেই তখন রাস্তায় গাড়ি চলাচলের জায়গা সংকীর্ণ হয়ে যায় এবং যান চলাচল ব্যহত হয়। এসবের ওপর আবার মড়ার ওপর খড়ার ঘা হিসেবে থাকে প্রতি বর্ষা মৌসুমে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি। সব মিলিয়ে অফিস শুরু ও ছুটির সময়টা যেন রাজধানীবাসীর জন্য রীতিমতো নরকে পরিণত হয়।
মাহে রমজানে স্বাভাবিকভাবেই অফিস ফিরতি মানুষের ঘরে ফেরার তাড়া থাকে। এসময় যানবাহনগুলোর মধ্যে দ্রæত চালানোর অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। এ কারণে একদিকে যেমন দুর্ঘটনা ঘটে অন্যদিকে যানজটেরও সৃষ্টি হয়। এছড়া বিশেষজ্ঞদের মতে নগরীর ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাও সেকেলে। সিগন্যাল বাতিগুলো কাজ না করায় এখনো ট্রাফিক পুলিশের বাঁশি আর লাঠিই ভরসা।
রমজানে যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ বিভাগের আগে থেকে বিশেষ পরিকল্পনা ও কার্যক্রম হাতে নেওয়া প্রয়োজন ছিলো। এছাড়া নগরীর বিশেষ পয়েন্টগুলোতে যানজট নিয়ন্ত্রনে অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশও মোতায়েন জরুরি। দেখা গেছে, ঈদের কেনাকাটাসহ বিভিন্ন কারণে রমজানের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই সড়কগুলোতে গাড়ির চাপ যেমন বাড়ে তেমনি যানজটও বাড়ে। তাই এখনই নগর কর্তৃপক্ষসহ ট্রাফিক পুলিশ বিভাগকে দ্রæত যানজট নিরসনে যথা উদ্যোগ নিতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।