পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তারিক ইমন : রাজধানীর দৃষ্টিনন্দন হাতিরঝিলের ব্রিজগুলোতে তরুণ-তরুণীদের আপত্তিকর অবস্থানসহ দুর্ঘটনা, ছিনতাই ঠেকাতে কাঁটাতারে ঘের দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ব্রিজগুলোর দেয়াল ঘেঁষে রোলিংগুলোর সাথে এই ঘের দেওয়া হয়েছে। মাহে রমজানের পাবিত্রতা রক্ষাসহ সার্বিক অশালীনতা রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে এলাকার সাধারণ জনগণ।
সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে একটু প্রশান্তি ও বিনোদনের খোঁজে রাজধানীর হাতিরঝিলে ছুটে আসে নানা ধরনের মানুষ। সকালে শরীর চর্চা, বিকেলে সাইক্লিং আর সন্ধ্যা হলে আড্ডাসহ সারাবেলাই মুখর থাকে হাতিরঝিল এলাকা। সন্ধার পর পরই দেখা যায় তরুণ তরণীর মিলন মেলা। ব্রিজের রোলিংয়ে হেলান দিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডা দিতে দেখা যায় জোড়ায় জোড়া কপোত কপোতিদের। আবার ঝিলের নিচের অংশে ঘাসের উপরও বসে থাকতে দেখা যায় তাদেরকে। আর তাই নগরবাসীর অনেকে এখন হাতিরঝিলকে আখ্যা দিয়েছেন ‘ডেটিং স্পট’ হিসেবে। দিনের শুরু থেকে সন্ধ্যা এমনকি রাত ১১টা পর্যন্ত যারা চলাচল করেন তাদের চোখেই পড়ে কপোত-কপোতীদের অশালীন এ মিলনমেলা। গভীর রাতেও কোনো কোনো প্রেমিকযুগল হাতিরঝিলকে বেছে নেন প্রেমকুঞ্জ হিসাবে।
অশলীনতা রোধে কর্তৃপক্ষের এই উদ্যেগকে স্বাগত জানিয়েছে এলাকার সাধারণ জনগণ, সকাল বেলা হাঁটতে আসা আমিনুল ইসলাম নামের একজন স্থানীয় এলাকাবাসী ইনকিলাবকে বলেন, অমরা কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানাই এইধরনের একটা ভালো উদ্যেগ গ্রহণ করবার জন্যে। আমার আশাকরি এভাবে সকলপ্রকার অশ্লিলতা ও মাদক ছিনতাই দূর করতে প্রশাসন আরো বেশি কঠোর ভূমিকা রাখবে।
এধরনের অশালীনতার বিরুদ্ধে স্থানিয় জনগনের অভিযোগের ভিত্তিতে সংবাদমাধ্যমগুলোতে বেশকিছু রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। চলতি বছরের গত ২৪ মার্চ দৈনিক ইনকিলাবেও ‘দৃষ্টিনন্দন হাতিরঝিলে অশালীনতার ছোবল’ শিরোনামে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়।
এর আগে সেতুগুলোর দু’পাশে কাঁটাতারের বেড়া দেয়া হয়েছিল। রেলিং বসানো হয়েছিল মূল সেতুর ফুটপাত ও দেয়ালের ওপর। তাতেও কাজ হয়নি। দিন-রাত আড্ডার ছলে নানা অপকর্ম চলে হাতিরঝিলে। ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটত নিত্যদিন। নিরাপত্তারক্ষীরাও অপারগ হয়ে পড়ে দুর্বৃত্তদের কাছে। আবার সেতুর মাঝে বাইক বা গাড়ি থামানো থাকায় দুর্ঘটনা বা যাত্রীদের গতিও রোধ হত। এমনভাবে কাঁটাতার সংযুক্ত করা হচ্ছে, চাইলেও আর কেউ এখানে বসতে বা দাঁড়াতে পারবে না। বিশেষ করে হাতিরঝিলের সেতুগুলোর ওপর তরুণ-তরুণীর অশোভন আচরণে বিব্রত হতেন যে কেউই। এ নিয়ে অভিযোগের অন্ত ছিল না। স্কুলড্রেস পরা কিশোর-কিশোরীদের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দিতে দেখা যায় এখানে। ঝিলপাড়ের নিরাপত্তাকর্মীরা বারবার চেষ্টা করেও তাদের সরাতে পারেন না। উপায়ান্তর না দেখে সেতুর রেলিং এবং ফুটপাতের ওপর কাঁটাতার লাগাচ্ছে হাতিরঝিল কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে হাতিরঝিল প্রকল্প পরিচালক জামাল আখতার ভূঁইয়া জানান, ছিনতাই, দুর্ঘটনাসহ নানা ঘটনার অভিযোগ আসছে এখান থেকে। বিশেষ করে ছেলেমেয়েদের আপত্তিকর আড্ডার বিষয়টি নিয়ে অনেকেই অভিযোগ করছেন। রেলিং ঘেঁষে বসে কেউ যেন অযথা আড্ডা দিতে না পারে, এ জন্যই কাঁটাতার বসানো হচ্ছে।’ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট অরেক কর্মকর্তা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, তরুণ-তরুণীদের আপত্তিকর অবস্থানসহ ছিনতাই, দুর্ঘটনা আমরা আরো বেশকিছু পদ্ধতি গ্রহণ করেছি। পরিক্ষামূলকভাবে আপাদত এই কাঁটাতারের বেরা দেওয়া হয়েছে।
এক হাজার ৯৭১ কৈাটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ প্রকল্পটি ২০১৩ সালের ২ রা জানুয়ারী সর্বসাধারনের জন্যে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। হাতিরঝিল প্রকল্প উদ্বোধনের পর নগরবাসীর মধ্যে অনেক স্বস্তি ও প্রত্যাশা তৈরি হয়। অত্যন্ত পরিকল্পিত সড়ক ব্যবস্থা এবং দৃষ্টিনন্দন ব্রিজগুলো এ এলাকাটিকে বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করে তোলে। আর সন্ধ্যার পর রঙিন বাতির ঝলকানিতে মানুষমাত্রই অভিভূত হন। স্বভাবতই রাজধানীর ভ্রমণপিপাসুদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হয় হাতিরঝিল। উন্নত বিশ্বের আদলে গড়ে তোলা এ ঝিল দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসেন সৌন্দর্যপ্রেমীরা। এখানে প্রতিদিন হাজারও মানুষ প্রাতঃভ্রমণ করেন। ইট-পাথরের নগরজীবনের ক্লান্তি দূর করতে কিংবা নির্মল বায়ুতে শ্বাস নিতে বিকালে নামে জনতার ঢল। এই প্রকল্পটি বস্তবায়ন ও তদারকি করার জন্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ‘স্পেশাল ওয়ার্কস অরগানাইজেশন’ (এসডব্লিউও) কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।