Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৭ দিনে ১০ হাজার ৭৫ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি

আমদানি বাড়লেও দাম কমেনি

| প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বেনাপোল অফিস : সরকার শুল্কমুক্ত সুবিধায় ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ দিলেও বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতায় গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ২০ টাকার পেঁয়াজ বেড়ে এখন ২৬-২৭ টাকায় কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। অতিরিক্ত মুনাফা লোভী বিক্রেতাদের কারসাজির কারণে অস্বাভাবিক হারে মুল্য বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতা সাধারণ। বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় রমজানে পেঁয়াজের মূল্য বেড়েছে অস্বাভাবিকহারে। গত এক সপ্তাহের এক পরিসংখানে দেখা যায় গতকাল শনিবার দুপুর পর্যন্ত বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গত ৭ দিনে ৩০৬টি ট্রাকে ১০২টি চালানে ভারত থেকে ১০ হাজার ৭৫ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। রমজান উপলক্ষ্যে দিন দিন আমদানি আরও বেড়ে চলেছে। ভারত থেকে নাসিক, হাসখালি, বেলেডঙ্গা ও খড়কপুর জাতের পেঁয়াজ আমদানি হয়ে থাকে। এদেশে নাসিকের পেঁয়াজের চাহিদা বেশি। জানা যায়, এর আগে ১০ শতাংশ শুল্ক করে পেঁয়াজ আমদানি হতো। তখন কেজিপ্রতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত খুচরা বাজারে কিনতে হতো সাধারণ ক্রেতাদের। নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য পেঁয়াজের বাজার মূল্য ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার সাধের মধ্যে রাখতে ’১৬ সালের রোজার আগে সরকার পেঁয়াজের উপর আমদানি শুল্ককর প্রত্যাহার করা হয়। এরপর থেকে আর শুল্ককর সংযোজন হয়নি। তবে শুল্ককর উঠলেও অতিরিক্ত লাভে বিক্রেতাদের সিন্ডিকেটের কারণে হঠাৎ করে অস্বাভাবিকহারে মূল্য বেড়েছে। ভারতের রফতানি মূেল্য প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে ২০৫ মার্কিন ডলার মূল্যে। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রতিটনের মূল্য দাড়ায় ১৭ হাজার ১৫ টাকা। কেজিপ্রতি আমদানি খরচ পড়ছে প্রায় ১৮ টাকা। এলসি খরচসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে বেনাপোল স্থলবন্দর পর্যন্ত পেঁয়াজ পৌঁছাতে খরচ পড়ছে প্রতিকেজি ১৯ টাকা। আমদানি হওয়া পেঁয়াজ বন্দর থেকে পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ২৩ টাকা। আর খুচরা বাজারে তা ২৬ থেকে ২৭ টাকা। আমদানিকারক ফিরোজ এন্টারপ্রাইজের ফিরোজউদ্দিন জানান, পেঁয়াজের চাহিদার তুলনায় আমদানি হচ্ছে কম। এছাড়া গাড়ি ভাড়া বেড়েছে। খরচের উপর নির্ভর করে দাম উঠা-নামা করে বলে জানান তিনি। সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, রোজার মধ্যে মুসলিমদের খাদ্য তালিকায় পেঁয়াজ অন্যতম। প্রতিবছর এ সময়টিতে সরকারের সঠিক প্রক্রিয়ায় বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতায় পেঁয়াজের বাজার আকাশছোঁয়া বেড়ে যায়। এতে নিম্নআয়ের মানুষের কষ্টের সীমা থাকে না। বেনাপোলের মীম বাণিজ্য ভাÐারের স্বত্বাধিকারী শুকুর আলী জানান, তারা প্রতিকেজি ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানিকারকের কাছ থেকে কিনছেন ২৩ টাকায়। আর তা খুচরা বাজারে বিক্রয় করছেন ২৫ টাকায়। গরমে অনেক পেঁয়াজ পচে যায়। এতে একটু বেশি দাম ধরতে হয়। আর ক্রয়ের উপর নির্ভর করে বিক্রি দর বাড়ে-কমে। বাজরে অনেককে আবার ২৭ টাকায়ও পেঁয়াজ বিক্রি করতে দেখা গেছে। ক্রেতা রোকসানা খাতুন বৃষ্টি জানান, প্রতিবছর রোজার আগে পেঁয়াজের বাজার দর বেড়ে যায়। দাম বাড়বে না বলে রাজনীতিবিদরা আশ্বাস দিলেও কাজ হয় না। অতিরিক্ত পয়সা কেবল সাধারণ ক্রেতাদের গুনতে হয়। দ্রæত বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে রোজার মধ্যে পেঁয়াজের বাজার আরও ঊর্ধ্বগতি হবে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। সচেতন মহল মনে করছেন, শুল্কমুক্ত সুবিধায় যারা পেঁয়াজ আমদানি করছেন তাদের তালিকা ও আমদানি পণ্যের ক্রয় বিক্রয়ের হিসাব সরকারের সংশিষ্ট দফতরে রয়েছে। তারা কি মূল্যে ক্রয় করছেন আর কি মূল্যে বিক্রয় করছেন তা তদারকি করলে বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে। বেনাপোল কাস্টমস ডেপুটি কমিশনার সাইদ আহমেদ রুবেল জানান, পেঁয়াজের উপর শুল্ককর না থাকায় রোজা উপলক্ষে আমদানি বেড়েছে বলে জানান তিনি। আমরা বন্দর থেকে দ্রæত পেঁয়াজ খালাশের জন্য অফিসারদের নিদের্শনা দেয়া হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ