Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মেঘনা-তেতুলিয়া ডেঞ্জার জোনে চলছে ছোট ছোট লঞ্চ-ট্রলার

কালবৈশাখী ঝড়ে কবলে পড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা

| প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

এম আমির হোসেন, চরফ্যাশন (ভোলা) থেকে : সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনা-তেতুলিয়া নদী‘র অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার আন্ত:রুটে মেঘনায় ও তেতুলিয়া চলছে ছোট ছোট লঞ্চ-ট্রলার। কালবৈশাখী মৌসুমে ঝুঁকিপূর্ণভাবে এসব লঞ্চ চলাচলের কারণে একদিকে যেমন দুর্ঘটনা সম্ভাবনা রয়েছে অন্যদিকে যাত্রীদের জীবন চরম ঝুঁকির মুখে পড়েছে। অবৈধভাবে চলাচলকারী এসব লঞ্চের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় প্রশাসনের কোন নিয়ম-নীতি মানছেন না লঞ্চ মালিকরা। সরকারী সি-ট্রাক সার্ভিস ছাড়ার ডেঞ্জার জোনে এসব রুটে লঞ্চ চলাচল করায় যে কোন সময় দুর্ঘটনা আর প্রাণহাণির আশঙ্কা করা হলেও বিআইডবিøউটিএ কর্তৃপক্ষ থাকছেন নিশ্চুপ। অন্যদিকে বিকল্প যান না দেয়ায় যাত্রীরা অনেকটা বাধ্য হয়ে এসব নৌ-যানে যাতায়াত করছেন। গতকাল শুক্রবার সরেজমিন গিয়ে বিভিন্ন ঘাটে দেখা গেছে, একটি ছোট লঞ্চ ঘাটে নোঙ্গর করা ঢালচর ও চরকুরী-মুকরির যাতায়াতের একমাত্র পথ চরকচ্ছপিয়ার ঘাট। একদিকে মালামাল উঠানো হচ্ছে, অন্যদিকে যাত্রীরা উঠছেন। অতিরিক্ত মালামাল আর যাত্রী যেন ধারন ক্ষমতার ৫-৭ গুন। কিন্তু ততক্ষণে নদী উত্তাল হয়ে উঠছিলো। আর এ উত্তাল মেঘানায় ডেঞ্জার জোনের মধ্যেই লঞ্চটি ছেড়ে যায়। এ চিত্র দেখা যায় এই অঞ্চলের মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীর অন্তত ১০-১২টি রুটে। সরকার ঘাটগুলোতে ইজারা বসিয়ে রাজস্ব আয় করলেও নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারী এসব লঞ্চের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছেনা। যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এখন কালবৈশাখীর বর্ষা মৌসুম, প্রতিদিনই মেঘনা-তেতুলিয়ার ভয়াঙ্কর উত্তাল, কিন্তু তারপরেও এ উত্তাল নদী উপেক্ষা করে চরম ঝুঁকি নিয়ে যেন এভাবেই চলছে ছোট ছোট লঞ্চ-ট্রলার। বিআইডবিøউটিএ সুত্র জানা যায়, সরকার নৌ-দুর্ঘটনা রোধে প্রতি বছরের ১৫মার্চ থেকে ১৫অক্টোবর পর্যন্ত ৮মাস সময়কে মেঘনার-তেতুলিয়ার ডেঞ্জার জোন হিসাবে চিহ্নিত করেছে। এ সময়ে নদী ও সাগর উত্তাল থাকায় সি সার্ভে ছাড়া অন্য চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। প্রতিদিন এখন থেকে মনপুরাসহ বিভিন্ন স্থানে এসব লঞ্চগুলো অভ্যন্তরীণ রুটে ছাড়াও সামরাজ থেকে ২টি, দুলারহাট থানা ধীন নীলকমল ঘোষেরহাট, ভায়নীর খাল থেকে মজিবনগর, দক্ষিণ আইচার কচ্ছপিয়া থেকে চরকুুকরী-মুকরি, ঢালচর, নিঝুঁমদ্বীপ ও চরপাতিলা, ফলে চরম ঝূঁকি নিয়েই যাত্রীরা পারাপার হচ্ছেন। বে-সরকারি সংস্থা কোষ্ট ট্রাষ্ট্রের (এনজিও) কর্মী রাশিদা আক্তার বলেন, লঞ্চগুলো একদিকে অতিরিক্ত মালামাল তুলছে, অন্যদিকে ধারণ ক্ষমতার অধিক যাত্রী তুলতে। এতে যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্যনুসন্ধানে দেখা গেছে ১২টি রুটের মধ্যে যেসব রুটে বর্ষা মৌসুমে সবচেয়ে বেশী ভয়ঙ্কর সেগুলো হচ্ছে, ইলিশা-মজুচৌধূরীররহাট, ভেলুমিয়া-ধুলিয়া, হাকিমুদ্দি-তজুমদ্দিন, দক্ষিণ আইচার কচ্ছপিয়া-ঢালচর-কুকরী-মুকরী, বেতুয়া-মনপুরা, সামরাজ-মনপুরা-চর জহির উদ্দিন, নাজিরপুর-কালাইয়া বেতুয়া-আলেকজেন্ডার, মনপুরা-হাতিয়া, দৌলতখান-আলেকজেন্ডার-মনপুরা, লক্ষীপুর। প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব রুটে ফিটনেসবিহীন ছোট ছোট লঞ্চ অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে পারাপার হলেও যেন মাথা ব্যাথা নেই তাদের। এ বিষয়ে নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অবৈধভাবে চলাচলকারী এসব লঞ্চের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নিকট চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও বিআডবিøটিএ ট্রফিক বিভাগের কর্মকর্তাগণ বিষয়টির উপর নজরদারি রাখছে। এদিকে, ডেঞ্জার জোনে অবৈধ লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে এসব রুটে সরকারী সি ট্রাক কিংবা নিরাপদ লঞ্চ দেয়ার দাবি জানিয়েছে সাধারণ যাত্রীরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ