বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বিশেষ সংবাদদাতা : খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনী ফলাফলে বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলে শাসক জোটের নেতা-কর্মীরা যথেষ্ট উজ্জীবিত হলেও হতাশার পাশাপাশি দুঃশ্চিন্তা ভর করেছে প্রধান বিরোধী দলের মধ্যে। আগামী ২৩ অক্টোবর বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়াদ পূর্ণ হবে। গত ২৮ এপ্রিল থেকে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ঈদ উল ফিতরের পর পরই বরিশাল ছাড়াও রজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের চিন্তা করছে বলে জানা গেছে। তবে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের পরিবর্তিত তারিখের কারণে এ ৩ সিটির নির্বাচনী কার্যক্রম নিয়ে নতুন করে চিন্তা ভাবনা চলছে বলেও জানা গেছে।
গত ১৫মে খুলনা সিটি নির্বাচন নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী ছিল প্রধান বিরোধী শিবির। কিন্তু নির্বাচনের আগে বিএনপি’র মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের গণহারে গ্রেফতার ছাড়াও বাড়ী বাড়ী অভিযানে ঘর ছাড়া ছিল সকলে। ফলে ভোটের এক সপ্তাহ আগে থেকেই খুলনা সিটিতে বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে প্রচারনায় লোক খুঁজে পাওয়া যায়নি সরেজমিনে দেখা গেছে। বিএনপি প্রার্থী দলীয় নীতি নির্ধারকগন এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় আর কোন কৌশল অবলম্বন করতে পারেন নি। ফলে ভোটের দিন ফলাফল অনুকূলে নিতে শাসক দলের কোন কর্মকান্ডের প্রতিরোধ দূরের কথা, প্রতিবাদ করারও তেমন কেউ ছিলনা। তার পরেও বিএনপি প্রার্থীর লক্ষাধিক ভোট লাভে অনেকেই বিষ্মিত হয়েছেন। খুলনার চেয়েও বরিশাল আরো অধিক ‘বিএনপি’র শহর’ হলেও পুলিশ-প্রশাসন আর নির্বাচন কমিশন একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করার মত পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারবে কিনা তা নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। ২০১৪-এর জানুয়ারিতে ভোটারবিহীন জাতীয় নির্বাচন হলেও ২০১৩-এর ১৫মে বরিশাল, সিলেট, খুলনা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী পরিবেশ ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। শাসক জোটের অনেক অনৈতিক কর্মকান্ড মোকাবেলা করেই নির্বাচন কমিশন এ ৪টি সিটিতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু এবার খুলনার নির্বাচনে শাসক জোট ও মূল শরিক দল অতীতের মত কোন ছাড় না দিয়ে বিজয়ের জন্য যা প্রয়োজন সবই করেছে। ফলে বিজয়ের নৌকা শাসক জোটের ঘাটেই ভিড়েছে।
তবে আসন্ন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রধান দুই দলের প্রার্থী নিয়েই নানা ধরনের চাপান-উতর অব্যাহত রয়েছে। মহানগর যুগ্ম সম্পাদক সাদেক আবদুল্লাহ গত কয়েকবছর ধরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে শক্ত অবস্থান গ্রহন করলেও দলের মধ্যই তার বিরোধী শক্তিও ক্রমে অবস্থান পোক্ত করছে। তবে কর্ণেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামিম ও মাহবুব উদ্দিন আহমেদ-বীর বিক্রম স্থানীয় পর্যারে চেয়ে দলের কেন্দ্রে বেশী আস্থাভাজন। এর মধ্যে কর্ণেল (অবঃ) শামিম ২০০৮-এর নির্বাচনে আওয়ামী প্রার্থী হিসেবে বরিশাল সদর আসনে এমপি পদে নির্বাচন করে পরাজিত হয়ে বরিশাল ত্যাগ করেন। স¤প্রতি তিনি মাঝে মাঝে এলাকায় আসছেন। বরিশাল মহানগরীর পথেঘাটে তার পোষ্টার ও ব্যানার চোখে পড়ছে। অপরদিকে মাহবুব উদ্দিন বীর বিক্রম গত বছরখানেক ধরে তিনি আবার বরিশালের রাজনীতিতে তৎপড়। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর ছবির সাথেই নিজের ছবি যুক্ত করে নগরীতে পোষ্টার আর ব্যানার ঝুলিয়েছেন তার সমর্থকগন। ফলে তিনজন প্রার্থী নিয়ে আওয়ামী লীগকে অনেক বাস্তবতা বিবেচনা করেই আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই করতে হবে।
বিএনপি প্রার্থী নিয়েও যথেষ্ট সংকট তৈরী হতে চলেছে। বর্তমান মেয়র আহসান হাবিব কামাল আওয়ামী লীগ প্রার্থী শওকত হোসেন হিরনকে প্রায় ১৮ হাজার ভোটে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হলেও আসন্ন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হওয়া নিয়ে তাকে চরম প্রতিক‚লতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। খুলনার অতি স¤প্রতিক নির্বাচনী পরিবেশকে বিবেচনায় নিয়ে বিএনপি বরিশাল সিটি নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নতুন করে ভাবছে বলে জানা গেছে। সেক্ষেত্রে কামালের পরিবর্তে সাবেক মেয়র ও এমপি মুজিবুর রহমান সারোয়ার’কে মনোনয়ন দেয়ার বিষয়ে দলের একটি বড় অংশ একমত হলেও সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক পর্যায়ে শেষ পর্যন্ত কি সিদ্ধান্ত হবে তা দেখার অপেক্ষায় সবাই। তবে আসন্ন ঈদ উল ফিতরের পরে বরিশাল সিটি নির্বাচন হলে তা হবে ভরা বর্ষায়। আবহাওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় নিয়ে ইসিকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।