Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফারাক্কার প্রভাবে বাংলাদেশ মরুভূমি হয়ে যাবে -মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ মে, ২০১৮, ২:৫৫ পিএম

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশগত মানকে বিবেচনা না করে এবং প্রাকৃতিক ও মানবিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনাকে উপেক্ষা করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের মতামতকে অগ্রাহ্য করে ভারতকে কয়েক দিনের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ফারাক্কা বাঁধ চালুর অনুমতি দেয়। কিন্তু ভারত সেই সুযোগ নিয়ে অব্যাহতভাবে আজ পর্যন্ত তা চালু রেখেছে। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার এই অন্যায়ের প্রতিবাদ না করে নির্লজ্জভাবে তা মেনে নিয়েছে, ফলে বাংলাদেশের জনগণ পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত হয়।

আগামীকাল ১৬ মে ‘ফারাক্কা দিবস’ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে মির্জা ফখরুল এসব বলেন।

তিনি বলেন, ১৬ মে ফারাক্কা দিবস আমাদের জাতীয় আন্দোলনের এক ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ দিন। আজ থেকে ৪১ বছর আগে আফ্রো, এশিয়া, ল্যাটিন আমেরিকার অবিসাংবাদিত মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ডাকে সারাদেশ থেকে লাখো জনতা ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবাহিত গঙ্গা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের সংগ্রামে ফারাক্কা অভিমুখে ঐতিহাসিক মিছিলে অংশ নেয়। ভারতে গঙ্গা নদীর ফারাক্কা পয়েন্টে বাঁধ নির্মাণ করে অভিন্ন নদীর পানি একতরফা প্রত্যাহার শুরু করা হয়। যার ফলে বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চল আজ প্রায় মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। ওই এলাকায় পানিতে আর্সেনিকসহ নানাবিধ প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ আজো পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত। এই বঞ্চনা ও দেশের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে জনদুর্দশার আশংকায় প্রাজ্ঞ ও দূরদর্শী মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী জনগণকে সাথে নিয়ে ফারাক্কা অভিমুখে ঐতিহাসিক মিছিল করে ভারত সরকারের নিকট প্রতিবাদ করেন এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন। তখন থেকে ব্যাপক মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টিকারী ফারাক্কা বাঁধের বিষয়টি আন্তর্জাতিক মঞ্চে আলোচিত হতে থাকে। তাই আমি মনে করি আজো ফারাক্কা দিবসের তাৎপর্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। আন্তর্জাতিক আইন-কানুন ও কনভেনশনের তোয়াক্কা না করে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবাহিত ৫৪টি অভিন্ন নদীতে একের পর এক বাঁধ নির্মাণে নদীর ধারাকে বাধাগ্রস্ত করে ভারত একতরফা নিজেদের অনুকূলে পানি প্রত্যাহারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উদ্যোগী হয়েছে। সর্বশেষ টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ বাস্তবায়িত হলে এবং তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা না পেলে বাংলাদেশকে আরেক প্রাকৃতিক মহাবিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেয়া হবে। এই অবস্থা চলতে থাকলে সারা বাংলাদেশ একসময়ে নিষ্ফলা উষর ভূমি হয়ে উঠবে বলে দুই দেশের বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই অভিমত প্রকাশ করেছেন।

সুতরাং ১৬ মে ১৯৭৬, মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে রাজশাহী থেকে ফারাক্কা অভিমুখে ঐতিহাসিক মিছিল ন্যায্য পাওনা আদায়ের সংগ্রামে জনগণ অকুতোভয় সাহসী পদক্ষেপে এগিয়ে গিয়েছিলো। তাই প্রতি বছর ১৬ মে ‘ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস’ বৈদেশিক আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা ও অধিকার আদায়ে উদ্বুদ্ধ করে। আমি ফারাক্কা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন সংগঠনের সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করি।



 

Show all comments
  • Dr. M. M. Adel ১৫ মে, ২০১৮, ৩:২৫ পিএম says : 0
    পানি নাই তবুও তো জিডিপি বৃদ্ধির গান শোনা যায়্। নিজরে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ অন্যদেশ ছিনিয়ে নেয় আর ছিনতাইকারীকে টপকিয়ে ছিনতাই-এর শিকার জিডিপি বৃদ্ধির বগল বাজায়।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Kowaj Ali khan ১৫ মে, ২০১৮, ১১:২৩ পিএম says : 0
    আপনারা কিসের রাজনীতি করেন? ভারতের কি ক্ষমতা যে প্রবাহিত নদীতে বাঁধ দেয়। ভারতের বাঁধ দেওয়াইতো অন্যায়। ভারতকে বাঁধ ভাংতে বলেন,না ভাংলে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করেন। আজ পরজন্ত ভারত আমাদের বাংলাদেশের যাহা ক্ষতি করিয়াছে ফারাক্কা বাঁধ সহ আর ৫২ বাঁধ দিয়ে সব ক্ষতিপূরণ আদায় করিতে হইবে আন্তরজাতিক আদালতে মামলার মাধ্যমে। ইনশাআল্লাহ। ****************
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ