Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কে হচ্ছেন নগরপিতা

| প্রকাশের সময় : ১৫ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

আবু হেনা মুক্তি : আজ খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। কে হতে চলেছে আগামী ৫ বছরে জন্য খুলনার নগর পিতা? এই নিয়ে যেন আলোচনার ঝড় উঠেছে সারা নগরজুড়ে। মহাটেনশনে প্রার্থীরা। আর ভোটাররা করছে কড়া হিসেব নিকেশ। কোন প্রতীকে ভোট দিবে। কাকে নগরপিতা বানালে মশা, আবর্জনা ও ভাঙ্গাচোরা রাস্তা উন্নয়ন করে সুন্দর নগরী উপহার দিবে। এ নিয়ে সারা শহরময়ের প্রতিটি অফিস আদালত চায়ের দোকান এমনকি পরিবারের মধ্যেও শুরু হয়েছে আলোচনা। সব মিলিয়ে উৎসব উদ্বেগ উৎকন্ঠা ও উত্তেজনার নগরী হয়ে উঠেছে খুলনা।
সবার দৃষ্টি এখন খুলনায়। গতকাল থমথমে অবস্থা বিরাজিত ছিল সারা শহরময়। গোটা শহর এখন বিজিবি’র নিয়ন্ত্রণে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল চোঁখে পড়ার মত। কে হচ্ছেন নগরপিতা তা নিয়ে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে পাবলিক পরিবহনেও আলোচনা সমালোচনার অন্ত ছিল না। আজ সেই মাহেন্দ্রক্ষন। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টার মধ্যে প্রায় ৫ লাখ ভোটার তাদের গনতান্ত্রিক অধিকার ভোট প্রদান করেবন। হাইকোর্টের নির্দেশে পুলিশী অভিযানে শৈথিল্য ছিল গতকাল রাত ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত। আজ মিডিয়ার পাশাপাশি দেশী বিদেশী পর্যটক তীক্ষè চোখ রাখবে ভোট কেন্দ্রের দিকে। এই নির্বাচন আগামী জাতীয় নির্বাচনের আবহে পরিণত হয়েছে। এই নির্বাচনের সিড়ি বেয়ে গনতন্ত্রের চেতনা উজ্জীবীত হবে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে খুলনার নগর পিতার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা হবে। যে কারণে মর্যাদার লড়াইয়ে গত ১ মাস প্রার্থীরা বিরামহীন প্রচেষ্টা চালিয়েছে। দেশের বৃহৎ দু’দলের হাই কমান্ড তাদের সর্ব শক্তি নিয়োগ করেছে নানা কলা কৌশলে। তবে স্থানীয় নির্বাচন হিসেবে সামগ্রীকভাবে যে ভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট উৎসব হওয়ার কথা তেমন তৃপ্তি যেন পাইনি নগরবাসী। গত ১ মাসে নির্বাচনী মাঠে আওয়ামীলীগ স্বতস্ফূর্ত সরব থাকলেও পুলিশী অভিযানে বিএনপি ছিল রাজনীতির মাঠে গা ছাড়া অবস্থা। তবে শেষ মুহুর্তে হাইকোর্টের নির্দেশনা এবং বিদেশী পর্যবেক্ষকদের কাছে বিএনপি’র দালিলিক প্রমান হস্তান্তরসহ মিডিয়ার সতর্ক ভূমিকায় বিএনপি নেতাকর্মীরা খানিকটা উজ্জীবীত হয়।
এদিকে, গত ১ মাসের প্রতিশ্রæতি আর আশ্বাসে ভুলছেনা ভোটাররা। বিভিন্ন স্থানে গতকাল নানা শ্রেনী পেশার মানুষের সাথে আলাপকালে এ কথা জানা যায়। ভোটারদের কাছে দল ও ব্যক্তির ইমেজের পাশাপাশি আঞ্চলিকতা ও সম্মানের বিষয়টি প্রাধান্য পাচ্ছে। যার রায় জানাবে গোপন বুথে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে।
শেখপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল হাই বলেন, ভোটের আগে প্রার্থীরা সব দিয়ে দেয়। কিন্তু ভোটের পরে তাদের সাথে দেখা করা যায় না। দেখা করতে গেলে ধমক দেয়। যোগ্য এবং ভালো মানুষকে ভোট দেব। যিনি বিনয়ের সাথে ভালো ব্যবহার করে মানুষের সুখ দু:খের কথা শুনবে।
বাস্তহারা কলোনীর বাসিন্দা চায়ের দোকানদার মেহেদী হাসান বলেন, প্রার্থীরা ভোটের আগে দেখতে যেমন, ভোটের পরে দেখি আরেক রকম। এখন তাদের ঘন ঘন দেখা মিললেও ভোটের পরে আমাদের খোঁজ খবর নেয়ার সময় তাদের কাছে থাকে না।
এদিকে, গত রোবববার দুপুর থেকে টহল শুরু করে বিজিবি। নির্বাচনের জন্য ১৬ প্লাটুনে মোট ৬৪০ জন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বিজিবি খুলনা সদর দফতরের টুআইসি মেজর হান্নান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গতকাল সোমবার দুপুর থেকে ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স বিতরণ করা শুরু হয় । ১ হাজার ৫৬১টি ভোটকক্ষের প্রতিটির জন্য একটি করে ও মোট ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রের প্রত্যেকটির জন্য অতিরিক্ত হিসেব আরও একটি করে ব্যালট বাক্স বরাদ্দ রাখা হয়েছে। খুলনা বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে বিতরণ করা হয়। প্রিজাইডিং অফিসাররা এসব সামগ্রী গ্রহণ করেছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ভোট সামগ্রী প্রায় সকল কেন্দ্রে পৌছে গেছে।
নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের নিরাপত্তাসহ নগর জুড়ে নেয়া হয়েছে বাড়তি প্রস্তুতি। এছাড়া গত রোববার মধ্যরাত থেকে নির্বাচনের পরের দিন অর্থাৎ আগামীকাল ১৬ মে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মটর সাইকেল এবং গতকাল সোমবার রাত ১২টা থেকে আজ ১৫ মে রাত ১২টা পর্যন্ত মহানগরে কার, বাস, জিপ, বেবিট্যাক্সি, অটোরিকশা, ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ট্রাক ও টেম্পো চলাচলের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)।
নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডের ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রের ১ হাজার ৫৬১টি কক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে ২ লাখ ৪৮ হাজার ৯৮৬ জন পুরুষ এবং ২ লাখ ৪৪ হাজার ১০৭ জন নারী ভোটার রয়েছেন।
নগরীর ২৪নং ওয়ার্ডের সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ২৭নং ওয়ার্ডের পিটিআই কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হবে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) তথ্য মতে, ২৮৯টির মধ্যে ২৩৪টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ।
নির্বাচনে পাঁচজন মেয়র, ৩১টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর ১৪৮ এবং ১০টি সংরক্ষিত আসনে লড়ছেন ৩৯ জন নারী প্রার্থী। মেয়র প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত তালুকদার আব্দুল খালেক, বিএনপি মনোনীত নজরুল ইসলাম মঞ্জু, জাতীয় পার্টির এস এম শফিকুর রহমান মুশফিক, ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক ও সিপিবির মিজানুর রহমান বাবু। তবে, অন্য তিনটি দলের তিন প্রার্থী খুব একটা আলোচনায় নেই। মূলত আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির প্রার্থীর মধ্যেই হচ্ছে কেসিসি মেয়র পদের মূল লড়াই।



 

Show all comments
  • সফিক আহমেদ ১৫ মে, ২০১৮, ৩:৪৪ এএম says : 0
    নির্বাচন সুষ্ঠ হবে তো ?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নগরপিতা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ