Inqilab Logo

শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

যৌনহয়রানির অভিযোগে হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয় উত্তপ্ত

| প্রকাশের সময় : ১৫ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

মাহফুজুল হক আনার, দিনাজপুর থেকে : শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানীসহ নানা হয়রানীর অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দিনাজপুর অঞ্চলের অন্যতম উচ্চ বিদ্যাপিঠ হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। পরীক্ষায় পাশ-ফেল এর পাশাপাশি চাকুরী স্থায়ীকরণসহ বিভিন্ন প্রলোভন ও ভয় দেখানো বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানী’র ঘটনা ঘটছে বলে ভুক্তভোগী ও তাদের অভিভাবকেরা মত প্রকাশ করেছে। এর পরেও ক্ষমতায় টিকে থাকার লড়াইয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করা’র গুরুতর অভিযোগ। আর এ কারণে ২০১৫ সাল থেকে ঘটে যাওয়া ৪টি অভিযোগের মধ্যে একটির দায়সারা তদন্ত এবং তদন্তের ভিত্তিতে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করার অভিযোগ উঠেছে। যৌন হয়রানীর সাথে শিক্ষকদের উপযুক্ত শাস্তির দাবীতে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচীর কারণে পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোলাটে হয়ে উঠছে। গতকাল সোমবার প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম দায়ী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয় গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মত বিনিময় করার কথা রয়েছে। জানা গেছে, ২০১৫ সালে সোস্যাল সাইন্স এÐ হিউম্যানেটিস অনুষদের ডীন এটিএম রেজাউল হক এর বিরুদ্ধে এক ছাত্রী যৌন হয়রানীর অভিযোগ করে। গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। একটি সূত্র মতে তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পেলেও অভিযুক্ত শিক্ষকের সাথে অভিযোগকারীর সাথে বিষয়টি রফাদফা হয়ে যায়। ২০১৬ সালে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক দীপক কুমার সরকার তারই বিভাগের এক ছাত্রীর সাথে যৌন হয়রানী ও নির্যাতনমূলক কার্যক্রম করেন। শুধু তাই নয়, ওই ছাত্রীর সাথে অনৈতিক কার্যক্রমের বিরোধীতা করায় এক শিক্ষার্থীকে কম নম্বর প্রদান করা হয়। শিক্ষার্থীদের দু’টি অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষক দীপক কুমার সরকারের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি শিক্ষার্থীর অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পায় এবং তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে। কিন্তু সে সময় অজ্ঞাত কারণে তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়নি। চলতি বছরের ২৮ ফেব্রæয়ারী একই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আবারও শিক্ষার্থী হয়রানীর অভিযোগ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার অধ্যাপক ড. শফিউল আলম সাংবাদিকদের জানান, বর্তমান ভিসি ড. আবুল কাশেম যোগদানের পর তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং সুপারিশ সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর ক্লাশ পরীক্ষা কার্যক্রম থেকে তাকে বিরত রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি ডিপার্টমেন্টের এক ছাত্রী একই ডিপার্টমেন্টের এমএস প্রোগ্রামের তত্বাবধায়ক ও সহকারী অধ্যাপক ডা. রমজান আলীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীর অভিযোগ করে। পরে সহকরী অধ্যাপক ডা. রমজান আলীর বিরুদ্ধে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা মিলে। অভিযোগ প্রমানের পর তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীর সুপারভাইজারী বাতিল করে চাকুরীর কনফারমেশন স্থগিত রাখা হয়েছে। এর বেশী নয়। সবশেষে গত ২৫ এপ্রিল পুনরায় ডীন এটিএম রেজাউলের বিরুদ্ধে এক শিক্ষিকা অভিযোগ করেন। ২৭ ফেব্রæযারী ডীন রেজাউল হক ওই নারী প্রভাষিকাকে ম্যাসেঞ্জারে ভিডিও কল দেন। পরে তার স্বামী ডীনের কাছে কল দেয়ার কারণ চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দেননি। তদন্ত কমিটির মাধ্যমে ঘটনার উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করাই তার মূল দাবি। শিক্ষিকাকে যৌন হয়রানীর অভিযোগের ব্যাপারে ডীন এটিএম রেজাউল হক জানান, তার বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগ শতভাগ মিথ্যা। তিনি বলেন, এর আগে ২০১৫ সালে তার বিরুদ্ধে যে ছাত্রীর যৌন হয়রানীর অভিযোগ ছিল সেটিও সাজানো ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার প্রফেসর ড. সফিউল আলম জানান, সম্প্রতি শিক্ষিকা কর্তৃক একটি অভিযোগ পেয়েছেন তিনি। এই বিষয়টি তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ