পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সদ্যই উৎক্ষেপিত হওয়া দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ এর মালিকানা দুই ব্যক্তির কাছে চলে গেছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ওটার (বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট) মালিকানা চলে গেছে, জানেন তো। এই স্যাটেলাইটের মালিকানা চলে গেছে দু‘জন লোকের হাতে এবং সেখান থেকে আপনাদেরকে কিনে নিতে হবে। গতকাল (শনিবার) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং ডা. সামীউল আলম সুধীনের উপর হামলায় প্রতিবাদে বিএনপি সমর্থক চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাব আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। গত ১২ মে বাংলাদেশ সময় রাত ২টা ১৪ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টারের লঞ্চ প্যাড থেকে দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের অন্য দেশের সঙ্গে চুক্তি করার বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে মির্জা ফখরুল বলেন, ভারতের সঙ্গে পাঁচটি প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরের খবর গণমাধ্যমে দেখেছি। এই চুক্তি করার অধিকারটা তাকে (প্রধানমন্ত্রী) কে দিয়েছে? কারণ এই পার্লামেন্ট তো নির্বাচিত নয়। জনগণের পক্ষে যত চুক্তি করেন আপনি, সেই চুক্তি তো জনগণের চুক্তি নয়। তিনি বলেন, সব চুক্তিগুলো আমরা দেখব। যেমন মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি করেছে, একটা লোকও (রোহিঙ্গা) মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারেনি। যেটা আমার সবচেয়ে বেশি দরকার, সেই তিস্তার পানি চুক্তি এখন পর্যন্ত হয়নি।
তিনি বলেন, একটা রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানগুলো যখন ধ্বংস হয়ে যায় তখন সেটা আর রাষ্ট্র থাকে না। আজকে রাষ্ট্র সম্পূর্ণ অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। তাই জাতীয় ঐক্য ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করার মধ্য দিয়েই এদের পরাজিত করতে হবে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে দলটির মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন, তার সঙ্গে আলোচনা করুন এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। তাহলে অবশ্যই দেশে গণতন্ত্রের সুবাতাস বইবে, মানুষ স্বস্তি ফিরে পাবে।
খুলনা সিটি করপোরেশন এলাকায় ভোটের আগে ‘সন্ত্রাসের রাজত্ব’ চলছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, খুলনা থেকে আমাদের নেতারা চলে এসেছেন। নির্বাচনের আইন অনুযায়ী ৭২ ঘন্টা আগে চলে আসতে হয়। এখন ওখানে যেটা চলছে, যেটাকে বলে সন্ত্রাসের রাজত্ব। ফখরুল বলেন, জাফরুল্লাহ ভাই ( ডা.জাফরুল্লাহ চৌধুরী) সবসময় বলেন যে, নির্বাচন ছাড়া যাবে না। তার কাছে আমার প্রশ্ন- কোন নির্বাচন? সেই নির্বাচনে কি আমি ভোট দিতে পারব? সেই নির্বাচনে কি আমি প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাতে পারব? যেখানে সমস্ত রাষ্ট্র যন্ত্রকে ব্যবহার করা হচ্ছে আজকে নির্বাচনে তাদের জয়লাভের জন্য। সেই নির্বাচন কীভাবে আমরা করব?
নির্বাচনের পরিবেশ দেশে তৈরি হয়নি অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশনেত্রীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে আটকিয়ে রাখবেন, তারেক রহমান সাহেবের বিরুদ্ধে হাজারো মিথ্যা মামলা তৈরি করে তাকে দেশে আসতে দেবেন না, আমাদের সমস্ত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৭৮ হাজার মিথ্যা মামলা, ২০ লাখ আসামি, হাত-পা বেঁধে আমাকে পুকুরে ফেলে দেবেন, আর বলবেন যে সাঁতার কাট! কীভাবে সাঁতার কাটব?
সরকারকে মালয়েশিয়ায় সাম্প্রতিক নির্বাচনের ফলাফল থেকে শিক্ষা নিতে বলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, মাহাথির মোহাম্মদের উপ-প্রধানমন্ত্রী ছিলেন আনোয়ার ইব্রাহিম। মাহাথিরই তাকে দল থেকে বের করে দিয়ে জেলে দিয়েছিলেন বিভিন্ন রকম অপবাদ দিয়ে, মিথ্যা মামলা দিয়ে। সেই আনোয়ার ইব্রাহিমের পার্টিই এখন মালয়েশিয়ার সবচেয়ে বড় পার্টিতে পরিণত হয়েছে। মাহাথির মোহাম্মদকে তারাই নিয়ে এসেছে। মাহাথির মেনে নিয়েছেন শেষ বয়সে এসে। মেনে নিয়ে একমত হয়ে আজকে নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোটে জয়লাভ করেছেন। জয়লাভ করে তিনি বলেছেন, আমি আনোয়ার ইব্রাহিমকে সাজা দিয়েছি, এটা ভুল করেছি। একবার ঢাকা সফরে আসা আনোয়ার ইব্রাহিমের মেয়ের সঙ্গে খালেদা জিয়ার সাক্ষাতের প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, তিনি ম্যাডামকে বলেছিলেন, ম্যাডাম আপনি মূল প্রসেসের সঙ্গে থাকবেন। তাহলে আস্তে আস্তে কথা পৌঁছে যাবে বিশ্বের কাছে, পৃথিবীর কাছে। আজকে সেখান থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, মানুষকে এক করতে হবে। এক করে এই যে ভয়াবহ দানব তাকে সরানোর জন্য কাজ করতে হবে। মালয়েশিয়াতেও দেখা গেল জাতীয় ঐক্য। এই ধরনের ঐক্য না হলে এটা খুব ডিফিকাল্ট।
পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর প্রসঙ্গ মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে (গতকাল) পত্রিকায় খবর আছে, একজন ড্রাইভার টঙ্গিতে, তাকে নিয়ে গেছে এবং পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। যখন মেডিকেল কলেজে নিয়ে এসেছে, চেষ্টা করেছে ডাক্তারকে দিয়ে বলানো যে এটা স্বাভাবিক মৃত্যু। আমাদের ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করার পর তাকে মেরে ফেলল। এরকম অনেক ঘটনা। আজকে আমাদের বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের কতজনকে গুম করে ফেলেছে, কতজনকে ক্রসফায়ারে দিয়েছে। এই আমাদের রাষ্ট্রের অবস্থা। কোথায় যাবেন? কার কাছে যাবেন? আজ তো বলেই মাছের রাজা ইলিশ, আর দেশের রাজা হচ্ছে পুলিশ। কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর আবদুল মান্নান মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন ড্যাবের মহাসচিব ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, প্রফেসর সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, প্রফেসর আব্দুল কুদ্দস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আখতার হোসেন খান, শেরে বাংলা নগর কৃষি বিশ্ববিদ্যলয়ের প্রফেসর রফিকুল ইসলাম, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি সেলিম ভুঁইয়া, এ্যাবের প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।