Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গফরগাঁওয়ে ধান নিয়ে দিশেহারা কৃষক

| প্রকাশের সময় : ১১ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম


গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) থেকে মোঃ আতিকুল্লাহ : গফরগাঁও উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে বোরো ধান কাটা ধুম পড়েছে । তবে সর্বত্র কৃষি শ্রমিকের অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে ধান কাটতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। অন্যান্য বারের তুলনায় এ বার বাম্পার ফলন হয়ে থাকলে গত কয়েকদিনে অসময়ে বৃষ্টির ফলে নিন্ম এলাকায় ধানের ক্ষেতগুলো তলিয়ে যাওয়ার ফলে কৃষকের মুখে এখন আর হাসি নেই । তার পরে ও কৃষি শ্রমিকের মূল্য খুবই চড়া । দৈনিক তিন বেলা খাবার দিয়ে ও ৭শত টাকা থেকে ৮শত টাকা দিয়ে ও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না । ফলে কৃষকরা এখন বোরো ধান নিয়ে মহা বিপদে রয়েছে। এতে করে নিধারিত সময়ে ধান কেটে ঘরে আনা সম্বব হবে না । এখন পরো দমে ধান কাটার মৌসুম চলছে।
গফরগাঁও উপজেলা কৃষি অফিসার এস এস ফারহানা হোসেন জানান ,চলতি মৌসুমে বোরো আবাদ হয়েছে ২৩হাজার হেক্টর।এ গুলোর মধ্যে ৬ হাজার ২শত ৪০হেক্টর জমিতে বিদ্যুতের মাধ্যমে আবাদ হয়েছে । বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবারে আবহাওয়া পরিস্থিতি অনুকুলে থাকার ফলে ইরি-বোরো ফসল ভাল হয়েছে । ফলে কৃষকরা এখন আধা পাকা ধান কাটতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে । বিভিন্ন নিচু এলাকায় অসময়ে ভয়াবহ সর্বনাশা বৃষ্টির ফলে নিন্ম এলাকায় পাকা ধান তলিয়ে গেছে। ফলে ধান ঘরে তোলা নিয়ে কৃষককুল ব্যস্ত হয়ে পড়েছে ।একমণ ধান উৎপাদন করতে যে টাকা খরচ হয়েছে । তাও উঠবে না । ফলে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে । গফরগাঁও সালটিয়া , দত্তেরবাজার , কান্দিপাড়া সহবিভিন্ন হাট বাজারে নতুন ধান উঠলে ও বেচা কেনা খুবই কম ।চিকন ধান প্রতিমণ ৫শত টাকা থেকে ৫শত ৫০টাকা টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে । মোটা ধান প্রতিমণ ৪শত টাকা থেকে ৫শত টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে । গফরগাঁও উপজেলা সদর শিবগঞ্জ রোডের চালের ব্যবসায়ী মোঃ মজিবর রহমান খান জানান, নতুন চিকন চাল (৫০) কেজী প্রতিবস্তায় ২৮ বিক্রি হচ্ছে ১হাজার ৬শত টাকা থেকে ১ হাজার ৫শত টাকা । নতুন মোটা চাল ৫০ কেজী প্রতিবস্থায় বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার পাঁচশত টাকা থেকে একহাজার চারশত টাকা । ধানের দাম সরকার নির্ধারিত মুল্যে কৃষকরা পাচ্ছে না । ফলে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে । গফরগাঁও ইউনিয়নের ঘাগড়া গ্রামের মোঃ ফজলুল হক জানান,বড় আশা নিয়ে বোরো ফসল করে ছিলাম। কিন্তুু অসময়ে বুষ্টি ও সর্বনাশা শিলা বৃষ্টির ফলে বোরো ধানের কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । অথচ এ ফসল করতে প্রচুর টাকা ব্যয় হয়েছে । বোরো ফসল করতে যে টাকা খরচ করেছি তা উঠবে না । ফলে আগামীতে অনেকেই বোরো ফসল করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। চলতি বোরো মৌসুমে কৃষকরা ইউরিয়াসহ বিভিন্ন সার বেশী দামে কিনে দিয়ে ছিল । তার পরে আবার বেশী দামে মজুরী দিয়ে ধান রোপন সহ বিভিন্ন ধরনের পরিচর্চা করা হয়। বিভিন্ন এলাকা সরে জমিনে ঘুরে দেখা গেছে যে ,কৃষি শ্রমিকের অভাবে ধান কাটা যাচ্ছে না। শ্রমিকের অভাবের কারণ হচ্ছে যে,অনেকেই রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে র্কমস্থানে চলে গেছে। আবার কেউ কেউ বিদেশে চলে গেছে। এক সময়ে গফরগাঁও রেল স্টেশনে বিভিন্ন স্থান থেকে শত শত শ্রমিক আসতো কৃষি কাজ করার জন্য। কিন্তুু ভাগ্য নির্মম পরিহাস যে, কালের বিবর্তনের সে দৃশ্য এখন আর চোখে পড়েনা ।দিন বদল পালার সাথে সাথে সব কিছু পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ