Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হাইমচরে টার্কি পালনে সাফল্য ধরা দিয়েছে দুলাল মিয়ার খামারে

| প্রকাশের সময় : ৯ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চাঁদপুর জেলা সংবাদদাতা : অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করা দুলাল মিয়া কখনো জুতার ব্যবসা, কখনো চাষবাস করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। এতে জীবনের চাকা ঘুরলেও সাফল্য ধরা দেয়নি দুলাল মিয়ার জীবনে। শেষ পর্যন্ত ৬৩ হাজার টাকা ব্যয়ে ছেলের পরামর্শ ও সহায়তায় বছর দুয়েক আগে টার্কির খামার দেন দুলাল মিয়া। আর এরই মধ্যে তার মূলধন দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা।
চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার পূর্ব চরকৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা দুলাল মিয়া জানান, তার ছেলে হেলাল মিয়া চাকরির সুবাদে ঢাকা সাভারে গিয়ে টার্কির কথা জানতে পারেন। পরে নিজে টার্কি পালনের ওপর প্রশিক্ষণ নেন আর বাড়ি ফেরার সময় মুরগির ৩০টি বাচ্চা নিয়ে আসেন। বাবাকে বাণিজ্যিকভাবে টার্কি প্রজাতির মুরগির খামার করার পরামর্শ দেন। সেই শুরু, আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। টার্কির খামার করতে বাচ্চা কেনাসহ দুলাল মিয়ার তখন মোট ব্যয় হয় ৬৩ হাজার টাকা। দুই বছরের মাথায় এখন তিনি প্রায় ১৫ লাখ টাকার মালিক।
চরকৃষ্ণপুর মাতব্বরবাড়িতে দুলাল মিয়ার খামার ঘুরে জানা যায়, এরই মধ্যে ওই ৩০টি টার্কি থেকে ১ হাজারটি মুরগি উৎপাদন করেছেন দুলাল মিয়া। এর মধ্যে ৫০০ মুরগি ও ডিম বিক্রি করে এ পর্যন্ত আয় করেছেন প্রায় ৭ লাখ টাকা। এখনো খামারে আরও ৫০০ টার্কি রয়েছে, যার দাম প্রায় ৮ লাখ টাকা।
দুলাল মিয়া বলেন, বর্তমান বাজারে টার্কির এক হালি ডিম ৬০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এক দিনের এক জোড়া টার্কিও বাচ্চা তিনি বিক্রি করছেন ৫০০ টাকায়। এক মাসের এক জোড়া বাচ্চা ১ হাজার ৪০০, দুই মাসের এক জোড়া ২ হাজার ২০০, সাত মাসের এক জোড়া ৫ হাজার এবং দুই বছরের এক জোড়া মুরগি বিক্রি করছেন ১০ হাজার টাকায়। দুই বছরের মুরগি ৫ থেকে ৬ ও মোরগ ১১ থেকে ১২ কেজি ওজনের হয়।
দুলাল মিয়ার ছেলে হেলাল জানান, তিনি ২ হাজার ১০০ টাকা করে দুই মাস বয়সী টার্কির ৩০টি বাচ্চা কিনে এনেছিলেন। তার পরামর্শে তার বাবা এ মুরগির পাশাপাশি ৫০টি চায়না ও ৫০টি দেশি মুরগির খামার করেন। তিনি আরও বলেন, টার্কি ডিম পাড়লেও বাচ্চা ফোটাতে দেশি মুরগির সহায়তা লাগে। এ জন্য টার্কির বাচ্চা উৎপাদন করতে দেশি মুরগির সহায়তা নিতে হচ্ছে। প্রতিদিন এসব মুরগি পাললে তাঁদের তিন থেকে চার হাজার টাকা ব্যয় হচ্ছে বলে জানান হেলাল।
দুলাল মিয়া বলেন, টার্কি মূলত শাকসবজি খেলেও তিনি এর পাশাপাশি উন্নত মানের বয়লার ফিডও দিচ্ছেন। বর্তমানে তিনি ছোট ছোট পাঁচটি খামার করে আলাদা আলাদাভাবে এসব মুরগি পালছেন।
হাইমচরে বাপ-বেটার এই টার্কির খামারের সফলতার কথা শুনে স্থানীয় অনেকেই এখন এই মুরগি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন বলে জানান প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর চাঁদপুরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবোধ কুমার দাস। তিনি বলেন, হাইমচর ছাড়াও জেলায় টার্কির আরও ৮ থেকে ১০টি ছোট-বড় খামার হয়েছে। তবে দুলাল মিয়ার খামারটি জেলায় সবচেয়ে বড় বলে তার ধারণা। তিনি বলেন, ‘আমরা দুলাল মিয়ার খামারের মুরগিগুলোর চিকিৎসা ও পরামর্শ সহায়তা দিয়ে আসছি।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ