পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : রাজধানীর খিলক্ষেতবাসীর জমি অধিগ্রহণ আতঙ্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের জন্য নতুন করে চলছে ভূমি অধিগ্রহণ। ভুক্তভোগিদের অভিযোগ, ক্ষতিগ্রস্থদের কোন কিছুই আমলে নিচ্ছে না সেতু কর্তৃপক্ষ। বার বার নকশা পরিবর্তনের ফলে একই জমির বিভিন্ন অংশে চলছে অধিগ্রহণের নামে জবরদখল। নোটিশ ছাড়াই ইতোমধ্যে দোকানপাট, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ শতাধিক পরিবারের ঠিকানা ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ভুক্তভোগিরা জানান, সেতু বিভাগ সূত্রে তারা জানতে পেরেছেন, প্রকল্পের জন্য আরও ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে। এতে এলাকাবাসী শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এ প্রসঙ্গে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক কাজী ফেরদৌস বলেন, জনগণের যাতে কম ক্ষতি হয় আমরা সেভাবেই কাজ করার চেষ্টা করি। আর ক্ষতিপূরণের সমুদয় টাকা জেলা প্রশাসনের কাছে দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখিয়ে সেখান থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা নিবে।
জানা গেছে, হযরত শাহজালাল (রা.) বিমানবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী পর্যন্ত ২০ কি.মি. দীর্ঘ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয় ২০১১ সালে। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় ইতাল থাই কোম্পানী। ভুক্তভোগিদের অভিযোগ, প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে এই পর্যন্ত ৪ বার নকশা পরিবর্তন করা হয়েছে। এতে করে প্রথম দিকে যে সব বাড়িঘর অধিগ্রহণ করা হয়েছিল, নকশা পরিবর্তনের কারনে প্রকল্প ১০০ ফুট পশ্চিম দিকে সরে গেছে। এখন ওইসব ভূমি প্রকল্পের কোন কাজে লাগছে না। ভূমি মালিকদের দাবি, আগের অধিগ্রহণ করা ভূমি যেহেতু প্রকল্পের প্রয়োজন নেই, তাই সেই অধিগ্রহণ প্রত্যাহার করা হোক। ভূমির একাধিক মালিক জানান, সেতু বিভাগ অধিগ্রহণের নোটিশ না দিয়েই নতুন করে ভূমি জবরদখল শুরু করেছে। নিয়ম অনুযায়ী নতুন স্থানে প্রয়োজনীয় ভূমির জন্য নতুন করে নোটিশ দিতে হবে। এক্ষেত্রে তা করা হচ্ছে না। খিলক্ষেতের বাসিন্দা আব্দুল মোতালিব বেপারী অভিযোগ করে বলেন, সেতু বিভাগ প্রকল্পের অপ্রয়োজনীয় ভূমির ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করার জন্য ভূমি মালিকদের নানাভাবে চাপ দিচ্ছে। যা আইনের সুস্পষ্ঠ লঙ্ঘন। তিনি বলেন, যেহেতু আগের অধিগ্রহণ করা ভূমি প্রকল্পের জন্য প্রয়োজন নেই, সেহেতু আমাদের ভূমি ফিরিয়ে দেয়া তাদের নৈতিক দায়িত্ব। খিলক্ষেতের ক্ষতিগ্রস্থ ওহাব আলী, আবুল কালাম, সেরামত আলী, কেরামত আলী ও শাহাবুদ্দিন বলেন, নোটিশ ছাড়াই সেতু বিভাগ আমাদের জায়গা-জমি, বাড়ি-ঘর ও দোকানপাট জবরদখল করে নিয়েছে। এখানে সেতু বিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার গভীর ষড়যন্ত্র ও দূরভিসন্ধি কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্থ ভূমি মালিকদের প্রতি তাদের সামান্যমত মানবিক দৃষ্টি নেই। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক কাজী ফেরদৌস ইনকিলাবকে বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নকশা পরিবর্তন হয়নি। আর জনগণের ক্ষতি করে আমাদের লাভ কী? ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করা হয়েছে বহু আগেই। এখন নতুন করে কেউ দাবি করলে তো হবে না। তিনি বলেন, আমরা বরাবরই চেষ্টা করি জনগণ যাতে কোনোভাবে ক্ষতিপূরণের টাকা থেকে বঞ্চিত না হয়।
ক্ষতিগ্রস্থ আজাদ লেভেল ইন্ড্রাষ্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসরণ করে আমাদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হলে, পুনর্বাসন করা হলে কোন সমস্যা ছিল না। তিনি বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে আমলাদের দূর্নীতি ও বেপরোয়া আচরণে বর্তমান সরকারের উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এই প্রকল্পের কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে আমরা আজ পথে বসে গেছি। প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শুরুর দিকে আমার ১৯ দশমিক ৯৩ শতক জমি অধিগ্রহণ করেছে (এলএ কেইস নং- ১৫/১০-১১)। কিন্তু ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়নি। পরবর্তীতে নকশা পরিবর্তনের কারণে বিনা নোটিশে একই দাগের ভূমি থেকে ২৩ শতক জবরদখল করে নেয়। দখলের দীর্ঘদিন পর ডিসি অফিস থেকে নোটিশ (এলএ কেইস নং- ৬/১৬-১৭) জারি করা হয়। কিন্তু ৩ ধারায় আমিসহ অনেকেই নোটিশ পাইনি। গত বছর ২ জুলাই প্রতিকার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আবেদন করেছিলাম। ১০ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে আমার ২৩ শতক ভূমির নতুন হুকুম দখলের বিল প্রদান, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা এবং আগের ১৯ দশমিক ৯৩ শতক ভূমি ছেড়ে দেবার জন্য সেতু বিভাগ সচিবকে নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু সেতু বিভাগ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এই নির্দেশনা আমলেই নিচ্ছে না। অন্যদিকে খিলক্ষেত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের শুরুর দিকেই অধিগ্রহণের নোটিশ ছাড়াই রেলওয়ে কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের ‘এ’ ও ‘বি’ টাইপের ২টি শপিং কমপ্লেক্স ভেঙ্গে দেয়ায় ১৩১৯ জন বরাদ্দ গ্রহিতা সব হারিয়ে পথে বসেছে। ১৯৯১ সালে নিম্নআয়ের লোকজন ভিটেমাটি বিক্রি করে রেলওয়ে শপিং কমপ্লেক্সে দোকান ও ফ্লোর বরাদ্দ নিয়েছিল। এটা ভেঙ্গে দেয়ার পর তারা ক্ষতিপূরণ পায়নি, তাদের পুনর্বাসনও করা হয়নি। ইতোমধ্যে অনেক বরাদ্দ গ্রহীতা মারাও গেছেন। এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কেবলই আশ্বাসের বাণী শুনে আসছেন। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আবেদন করলে সেখান থেকে গত ১৮ জানুয়ারী সেতু বিভাগকে লিখিত নির্দেশ দেয়া হয় ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনর্বাসন করার জন্য। অতচ এখনো এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ ব্যাপারে খিলক্ষেতের ক্ষতিগ্রস্থ বাসিন্দারা প্রধানমন্ত্রীর জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।