Inqilab Logo

সোমবার, ১০ জুন ২০২৪, ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৩ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

চিকিৎসক, ক্লিনিক মালিকসহ তিন জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

ঝালকাঠিতে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ

| প্রকাশের সময় : ৫ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ঝালকাঠি জেলা সংবাদদাতা : ভুল চিকিৎসা করে রোগী হত্যা চেষ্টার অভিযোগে ঝালকাঠির রাজাপুর সদরের সোহাগ ক্লিনিকের মালিক ও দুইজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাজারি করেছেন আদালত। গত বৃহস্পতিবার বিকালে ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক মো. সেলিম রেজা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ প্রদান করেন। যাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তাঁরা হলেন, রাজাপুর সোহাগ ক্লিনিকের মালিক মো. আহসান হাবিব সোহাগ, ক্লিনিকের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মো. মহিউদ্দিন ও রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার পরিচয়দানকারী উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) শিব শংকর।
মামলা সূত্রে প্রকাশ, বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার বিবিচিনি গ্রামের দিনমজুর হাদিস নকিবের বিধবা মেয়ে নাসরিন বেগম (২৮) গত ৫ মার্চ পেটে ব্যাথা নিয়ে রাজাপুর সোহাগ ক্লিনিকে ভর্তি হন। পরীক্ষা-নিরিক্ষা শেষে সোহাগ ক্লিনিকের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মহিউদ্দিনসহ ক্লিনিকের কর্মকর্তারা নাসরিনের অভিবাবকদের জানান, নাসরিনের পেটে এপেন্ডিকস হয়েছে, তাই অস্ত্র পচার (অপারেশন) করতে হবে। অস্ত্র পচারের জন্য ১২ হাজার টাকায় চুক্তি হয়। ওইদিন রাত ৮ টায় নাসরিনের অস্ত্র পচার করেন ডা. মহিউদ্দিন ও স্বাস্থ্যসহকারী শিব শংকর। এসময় কোন অবেদনবীদ (অজ্ঞান করার চিকিৎসক) উপস্থিত ছিলেন না। চিকিৎসকরা ভুলবশত নাসরিনের সমগ্র তলপেট কেটে ফেলেন এবং দেখতে পান নাসরিনের পেটে বড় ধরণের টিউমার হয়েছে, এপেন্ডিকস হয়নি। সোহাগ ক্লিনিকের অনভিজ্ঞ চিকিৎসকরা নাসরিনের রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে না পেরে রাতেই নিজেদের অ্যাম্বুলেন্সে তড়িঘরি করে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। পরের দিন ৬ মার্চ সেখান থেকে নাসরিনের নাম কেটে দেওয়া হলে তাকে পুনরায় সোহাগ ক্লিনিকে নেওয়া হয়। সোহাগ ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি স্বভাবিক করার জন্য নাসরিনকে দুই-তিনদিন সেখানে রেখে নামেমাত্র চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর নাসরিনের অবস্থার অবনতি হলে অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। নাসরিনের বোন জান্নাতি একাধিকবার তাঁর বোনের চিকিৎসার জন্য সোহাগ ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে তাঁরা খারাপ ব্যবহার করেন।
এ ব্যাপারে মৃত্যু পথযাত্রী নাসরিনের ছোট বোন জান্নাতি বেগম বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে (দন্ডবিধির ৩৩৮/৩২৬/৩০৭/১০৯ ধারায়) একটি নালিশী মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামী করা হয় আহসান হাবিব সোহাগ, ডা. মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্যসহকারী শিব শংকর ও সোহাগ ক্লিনিকের ম্যানেজার আব্দুল ওয়াদুদকে। বাদী পক্ষে আদালতে মামলা পরিচালনা করেন অ্যডভোকেট মাহেব হোসেন। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি এবং ম্যানেজার ওয়াদুদের বিরুদ্ধে সমন জারির আদেশ দেন।
এব্যাপারে সোহাগ ক্লিনিকের মালিক আহসান হাবিব সোহাগ বলেন, আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। আমার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ সাজানো ও মিথ্যা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চিকিৎসক

১৩ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ