Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সব কোটা বন্ধ

সউদী জোটে গেলেও রণক্ষেত্রে যুদ্ধে জড়াতে চাই না : প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চাকরির ক্ষেত্রে ‘কোটা পদ্ধতি বাতিল-সংস্কার’ ইত্যাদি নিয়ে আর আলোচনা-বিতর্ক করার দরকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রার্থীরা কোটা চায় না। তাদের দাবি মেনে নিয়েছি। এটা ক্ষুব্ধ হওয়ার বিষয় নয়। সব ধরনের কোটা বন্ধ। কোটার আর দরকার নাই।
গতকাল বুধবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। স¤প্রতি সউদী আরব, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া সফরের উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো দেশবাসীর সামনে তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তিনি বলেন, আমরা সউদী আরবের জোটে গিয়েছি, তাদেরকে আমরা মাইন অপসারণ ও কনস্টাকশনে সহযোগিতা করবো। কিন্তু রণক্ষেত্রে যুদ্ধে জড়াতে চাই না। বাংলাদেশের নীতি হল সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রæতা নয়। তিনি আরো বলেন, ভোট এলে নির্বাচনে অংশ নেয়া না নেয়া রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার। এবারও বিএনপি নির্বাচনে না এলে আমাদের কিছু করার নাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যখন ছাত্ররা আন্দোলন করলো, তখন সবাই এমন সোচ্চার হয়ে পড়লো যে কেউ তো তাদের থামাতে চেষ্টা করেননি। আন্দোলনে কারা ঢুকে পড়লো, তাদের থামাতেও তো কাউকে দেখিনি। জাতির পিতা প্রতিটি ক্ষেত্রে কোটার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। হঠাৎ ‘কথা নাই বার্তা নাই’ কোটা চাই না বলে আন্দোলন শুরু হলো। শুধু আন্দোলনই নয়, রাস্তাঘাটও বন্ধ করে দিল। হাসপাতালে অসহায় রোগীরা যেতে পারছিল না। কোটা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা ছাত্রদের বিষয় নয়, এটা সরকারের বিষয়। নামকাওয়াস্তে টাকায় আমরা পড়াই। ছাত্রদের লেখাপড়ার সমস্ত খরচ সরকারের পক্ষ থেকে চালানো হয়। তারপরও যখন তারা কোটা চায় না, আমি দাবি মেনে নিয়েছি। ক্ষুব্ধ হওয়ার বিষয় না। সেটা নিয়ে এখন প্রশ্নের দরকার কী? শেখ হাসিনা বলেন, আগেও বলেছি- কোটা পূরণ না হলে মেধাবী থেকেই পূরণ হচ্ছিল। তাদের পাঁচ দফা কিন্তু আগেই পূরণ হচ্ছিল। চাকরিতে ৭২ শতাংশ, কখনো কখনো ৭৭ শতাংশই মেধা থেকে নিয়োগ হচ্ছিল। চাকরির জন্য যারা পরীক্ষা দিচ্ছে সবাই তো মেধাবী। তারপরও যখন এতো আন্দোলন, ঠিক আছে আমি মেনে নিয়েছি। এরা তো আমার নাতির বয়সী। ঠিক আছে মেনে নিলাম। সব কোটা বন্ধ। এখন তাহলে প্রশ্ন আসবে কেন? সুতরাং আমরা করে দিয়েছি। আর কোটার দরকার নাই। তিনি আরো বলেন, জিয়াউর রহমান যদিও নিজে মুক্তিযোদ্ধা কিন্তু অবৈধভাবে সরকার গঠন করেছিল। কাদের নিয়ে সরকার গঠন করেছিল? যারা স্বাধীনতা বিরোধী ও জাতির পিতার হত্যাকারী তাদের নিয়ে সরকার গঠন করেছিল। ওই সময় অনেক অফিসার ভয়ে মুক্তিযুদ্ধের নামটাও নিত না? কত শতাংশ তখন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পেয়েছে? কোটা নিয়ে নানা কথাবার্তা বলা হয়েছে, ব্যঙ্গ করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান সহ্য করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে কমনওয়েলথ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সম্মেলনে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। সেখানে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ সম্মেলনে রোহিঙ্গা বিষয়ে বাংলাদেশের ভূমিকার যে প্রশংসা হয়েছে, তা সরকারের কূটনৈতিক সাফল্য দাবী করে শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে বিশ্ব স¤প্রদায়। কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রশংসা হয়েছে, সম্মেলনের ঘোষণায় রোহিঙ্গা বিষয়ক অনুচ্ছেদ যুক্ত হয়েছে। যেটা আমাদের সরকারের কূটনৈতিক সাফল্য বলে মনে করি।
সফরে নরেন্দ্র মোদী, জাস্টিন ট্রুডাসহ বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে বিশ্ব স¤প্রদায়। এই সফরগুলোতে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে বলে আমি মনে করি। তিনি বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা আমাদের দেশে এসেছেন, তাদের মনোভাব অত্যন্ত ইতিবাচক। তারাও চান মিয়ানমার থেকে যে ১১ লাখ মানুষ বাংলাদেশে এসেছে, তারা সেখানে ফিরে যাক। বাংলাদেশ যে রাখাইনের এতগুলো বিপন্ন মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে, তাদের খাদ্যের ব্যবস্থা করেছে, তারা (আন্তর্জাতিক মহল) তার ভূয়সি প্রশংসা করেছে। আমরা আশা করছি, তারা মিয়ানমারকে চাপ দেবে। এর আগে সা¤প্রতিক সময়ে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের মনোভাব খুবই ইতিবাচক। তারা চায় রোহিঙ্গারা সম্মানের সাথে তাদের দেশে ফেরত যাক।
এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নেত্রীকে আমি জেলে পাঠাইনি। তাকে সাজা দিয়েছে আদালত। এখানে তো আমার কিছু নেই। আমি তাকে রাজনৈতিকভাবে গ্রেফতার করতে চাইলে ২০১৫-১৬ সালেই গ্রেফতার করতে পারতাম। কিন্তু আমি সেটি তো করিনি। এমনকি আমি তাঁর ছেলে (আরাফাত রহমান কোকো) মারা যাওয়ার পর দেখতে যাওয়ার পর আমার মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল। এতিমের টাকা চুরি করার কারণে খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়েছে আদালত। সরকারের কাছে মুক্তির দাবি জানিয়ে কোনো লাভ নাই। তার চিকিৎসার জন্য সকল ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কারাগারে এতো সুবিধা কোনো আসামি পায় না। তার সাথে একজন নিরাপরাধ মানুষ জেল খাটছে। এখন কোনো মানবাধিকার সংস্থা কোনো কথা বলছে না। বিএনপি নির্বাচনে না আসলে আমাদের কিছু করার নাই। তারেক রহমানকে ব্রিটেন থেকে ফিরিয়ে আনা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেকের বিষয়ে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছি। নিশ্চয়ই তাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবো আমরা। লন্ডনে অবস্থানরত তারেকের বাংলাদেশের পাসপোর্ট জমা দেওয়া এবং তাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন মহলের বক্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা অনেক দেশ থেকে এ ধরনের আসামি নিয়ে আসি। সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেকের নিশ্চয়ই ফিরিয়ে নিয়ে আসবো। বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, এ ধরনের একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে তারা চেয়ারপারসন করলো। বিএনপি নাকি সবচেয়ে বড়, জনপ্রিয় দল, তাদের দলে কি একজন যোগ্য লোকও নেই? এ ধরনের সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে কেউ দলের চেয়ারপারসন করে? এ ধরনের রাজনৈতিক দেউলিয়া দল আর নেই। খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বিএনপি-দলটির নেতাদের এমন ঘোষণার কোনো যৌক্তিকতা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, কোনো দল নির্বাচনে আসবে, আর কারা আসবে না, সেটা রাজনৈতিক দলগুলোর নিজস্ব ব্যাপার। এ বিষয়ে সরকারের কিছু করার নেই। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তারা আসে নাই বরং নির্বাচন ঠেকানোর চেষ্টা করেছে। এতে প্রায় তিন হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। ৫৮২টা স্কুল ও ৭০টা অফিস পুড়িয়েছে; গাছ কেটেছে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ করেছে তারা। ২৭জন পুলিশকে হত্যা করেছে। এবার তারা নির্বাচনে আসবে কি আসবে না তারাই জানে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল বড় হলে তারা জয়ের বিষয়ে আশাবাদী থাকে। আমরাও আশাবাদী নির্বাচনের বিজয়ের বিষয়ে। কিন্তু কোনো দল নির্বাচনে না এলে সেটির দায়তো আমার না। কেউ ভোটে না এলে আমি তো তাকে ধরে নিয়ে আসতে পারি না। ভোট তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, খালেদা জিয়াকে ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে আসবে কিনা সেটি তাদের দলের ব্যাপার।
অস্ট্রেলিয়ায় গেøাবাল সামিট অন উইমেনে জাঁকালো অনুষ্ঠানে পাওয়া ‘গেøাবাল উইমেন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ দেশের নারী সমাজের প্রতি উৎসর্গ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই পুরস্কার আমি আমার দেশের নারী সমাজের প্রতি উৎসর্গ করেছি। বর্তমান সংসদের স্পীকার নারী, সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী নারী, সংসদ উপনেতা নারী, বিরোধী দলীয় নেতা নারী। আমাদের নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে, সেটা বিশ্ব দরবারে স্বীকৃতি পেয়েছে। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব গঠনে নির্বাচনের নিয়ম আছে। সেজন্য প্রার্থীদের আবেদন নেওয়া হয়েছে। প্রথমে সমঝোতার চেষ্টা করা হয়, সেটা না হলে নির্বাচন হয়। সমঝোতা হয়ে গেলে সেভাবে প্রেস রিলিজে ঘোষণা হবে।
দুর্ঘটনা এড়াতে পথচারীদেরও সড়কের নিয়মগুলো মানার উপর জোর দিয়ে শেখ হাসিনা। ঢাকায় ট্রাফিক আইন না মেনে পথচারীদের পারাপারের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, আমার এই কথাগুলো অনেকে পছন্দ করবেন না, কিন্তু যা বাস্তব, তাই বলছি। রাস্তায় চলার নিয়ম আছে, সেটা আমরা কতটা মানি? একটা গাড়ি দ্রæতগতিতে আসছে, আমরা হাত একটা তুলে রাস্তায় নেমে গেলাম। যারা পথচারী তাদেরও কিছু রুলস জানা দরকার, মানা দরকার। আপনি বাসে চড়ে যাচ্ছেন, কেন আপনি হাত বাহিরে করে যাবেন? আপনারা (সাংবাদিক) যার হাত গেল, তার জন্য কান্নাকাটি করছেন; কিন্তু সে যে নিয়ম মানছে না, সে কথা তো বলছেন না?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে জেতাটা আমি জনগণের কাছে ছেড়ে দিয়েছি। তারা যদি মনে করে উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত রাখা উচিত তাহলে নৌকা মার্কায় ভোট দিবে, আমরা আবার ক্ষমতায় আসবো। আমি মনে করি উন্নয়নের জোয়ার ধ্বংস করতে না চাইলে অবশ্যই আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনতে হবে। কারণ আওয়ামী লীগ ছাড়া কেউ দেশের উন্নয়ন করতে পারবে না। তাই জনগণ উন্নয়ন চাইলে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করতে হবে। আর যারাই ক্ষমতায় আসবে আশা করি তারা বর্তমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবেন।
প্রসঙ্গত সউদী বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের আমন্ত্রণে একটি যৌথ সামরিক মহড়ার সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শেখ হাসিনা গত ১৫ ও ১৬ এপ্রিল সউদী আরব সফর করেন। সেখান থেকেই কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের সম্মেলনে (সিএইচওজিএম) যোগ দিতে ১৬ এপ্রিল লন্ডন যান প্রধানমন্ত্রী। ১৯ এপ্রিল সিএইচওজিএম-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র দেয়া আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনায় যোগদান করেন। ২৩ এপ্রিল দেশে ফিরে ‘গেøাবাল উইমেন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০১৮’ নিতে গেøাবাল সামিট অব উইমেন সম্মেলনে যোগ দিতে ২৬ এপ্রিল অস্ট্রেলিয়ায় যান।
মে দিবসে প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন :-
মহান মে দিবস উপলক্ষে গত মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত আলোচনা সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি যতদিন ক্ষমতায় আছি বাইরের কারো কাছে নালিশ করে কোন লাভ হবেনা। আমি জাতির জনকের কন্যা এবং দেশ ও দেশের মানুষকে ভালবেসেই রাষ্ট্র পরিচালনা করে যাচ্ছি। আমি যা কিছু করেছি এবং করছি দেশের কল্যাণের জন্যই। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত আমাদের এই স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতাকে সমুন্বত রাখা, দেশবাসী এবং দেশকে বিশ্বের দরবারে সম্মানিত করা-এটাই আমার লক্ষ্য। কারো কাছে মাথা নিচু করা নয়। আমাদের দেশের দুর্ভাগ্য আমি বলবো কিছু কিছু লোক শ্রমিক নেতা সাজতে গিয়ে- যারা জীবনে শ্রমিক হিসেবে কাজ করুক আর নাই করুক শ্রমিকদের উপর একটু খবরদারি করে। আর একটু কিছু হলেই বিদেশীদের কাছে গিয়ে নালিশ করে, আর দেশের বদনামটা তুলে ধরে। এই বদনামটা তুলে ধরতে গিয়ে হয়তো একখানা টিকিট বিনে পয়সায় পান, বিদেশে থাকার একটু সুযোগ পান, একটু সেখানে যেতে পারেন, কিছু সুযোগ-সুবিধা পান। আর ঐ একটু সুযোগের জন্য দেশের বদনামটা বাইরে যেয়ে করে আসা দেশের জন্য যে কতটা ক্ষতিকারক সেটা তারা অনেকেই বুঝতে পারেন না। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে দুর্ভাগ্যে। তিনি বলেন, দেশটা আমাদের, এদেশটাকে আমাদেরই গড়ে তুলতে হবে। আর দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা যত ভালো হবে ততই সকলের কল্যাণ হবে। সকলেরই জীবন মান উন্নত হবে। এই কথাটা বুঝতে হবে, দেশপ্রেম থাকতে হবে।
অভ্যন্তরীণ ও বহির্বিশ্বের চাহিদার দিকে দৃষ্টি রেখে দক্ষ শ্রমশক্তি গড়ে তুলতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রমকল্যাণ নিশ্চিতকরণে আমরা ‘জাতীয় শ্রমনীতি, ২০১২’ প্রণয়ন করেছি। ‘বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫’ প্রণয়ন করেছি। ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি নীতিমালা ২০১৩’ এবং ‘জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি ২০১১ প্রণীত হয়েছে। মানবসম্পদ উন্নয়নে ‘জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কাউন্সিল’ গঠন করা হয়েছে। শিল্প-কারখানায় কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তরকে অধিদপ্তরে উন্নীত করেছি। শেখ হাসিনা শিল্প কলকারখানা সুরক্ষা এবং কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে তাদের ভূমিকা পালনের আহবান জানিয়ে বলেন, আমি শ্রমজীবীদের একটা কথাই বলবো- যে কারখানা আপনাদের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করে আপনার ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা করে সে করাখানা যেন ঠিকমতো চলে, সেখানে যেন অশান্তি সৃষ্টি না হয়, সেদিকে আমাদের সবাইকে দৃষ্টি দিতে হবে। তিনি সকলকে আশ্বস্ত করে বলেন, একটা ভরসা রাখবেন আপনাদের কোন অসুবিধা হলে আমিতো আছিই। সেখানে কোন সমস্যা হলে আমরা দেখবো।



 

Show all comments
  • কাওসার আহমেদ ৩ মে, ২০১৮, ৪:৫০ এএম says : 3
    প্রধানমন্ত্রীকে অসংখ্য ধন্যবাদ
    Total Reply(0) Reply
  • md. alauddin ৩ মে, ২০১৮, ১:৫২ পিএম says : 0
    very good .
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কোটা

২৩ ডিসেম্বর, ২০২১
১৭ নভেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ