পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বি এম হান্নান ও মো. কাউছার : মার্চ-এপ্রিল দু’মাস নিষেধাজ্ঞা শেষে ১ মে থেকে পদ্মা-মেঘনায় মাছ শিকার শুরু করেছে জেলেরা। ৩০ এপ্রিল মধ্য রাত পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা ছিলো। চাঁদপুর নৌ- সীমানায় নিষেধাজ্ঞা শেষে দীর্ঘ দু’ মাস অলস সময় কাটানোর পর মাছ ধরতে নদীতে নামছে ৪১ হাজার জেলে। এ কারণে স্বস্তিফিরে এসেছে জেলে পরিবারগুলোতে। সংশ্লিষ্টদের দাবি জাটকা রক্ষার কর্মসূচি সফল হওয়ায় এ বছর ইলিশের উৎপাদন বাড়বে।
জাটকা সংরক্ষণের জন্যে সরকার দু’ মাস চাঁদপুরসহ দেশের আরো কয়েক স্থানে অভয়াশ্রম ঘোষণা করে। এ সময় নদীতে যে কোনো ধরনের মাছ আহরণ,পরিবহন, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়ে ছিলো। ইলিশসহ অন্যান্য মাছ ধরতে জেলেরা এখন প্রস্তুত।
জাতীয় মাছ ইলিশ রক্ষায় সরকার প্রতি বছর অক্টোবরে মা ইলিশ রক্ষায় ১৫ দিন ও জাটকা ইলিশ রক্ষায় মার্চ-এপ্রিল দু’ মাস নদীতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আসছে। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে মেঘনা নদীর মতলব উত্তরের ষাটনল থেকে ল²ীপুরের চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১শ’ কি.মি. এলাকায় সকল প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে ৬০ কি.মি.পড়েছে চাঁদপুর এলাকায়। আর এ কারণে চাঁদপুর সদর, হাইমচর, মতলব দক্ষিণ ও উত্তর উপজেলার ৪১ হাজার ১শ’ ৮৯ জন জেলে কর্মহীন হয়ে পড়ে। বাধাহীন নদীতে মাছ ধরতে পারবে তাই জেলেদের মনে কর্মোদ্দীপনা ফিরে এসেছে।
চাঁদপুর সদর উপজেলার আনন্দ বাজার এলাকায় জেলেপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, জেলেরা নৌকা ও জাল নিয়ে নদীতে নামছে। অনেকেই এখনো নৌকা ও জাল মেরামত করছে। জেলে পাড়ার মোস্তফা বেপারী জানান, ১০ দিন আগে পদ্মা- মেঘনার পানি ছিলো পরিস্কার। কিন্তু এখন গোলা। এ কারণে চাঁদপুর নৌ-সীমানায় ইলিশ না পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
যারা নদীতে নেমেছে তাদের বিরুদ্ধে সোচ্ছার ছিলো প্রশাসন। যদিও আটককৃতদের অধিকাংশই হচ্ছে অন্যান্য জেলার। আগামী বছর ইলিশ উৎপাদনের ওপর নির্ভর করবে কর্মসূচির সফলতা। যদিও এ কর্মসূচি সফল করায় ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে বলে দাবি করেন চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকতা মো.আসাদুল বাকী। তিনি আরো জানান, নভেম্বর থেকে জুন মাস পর্যন্ত ১০ ইঞ্চির নিচের সাইজের ইলিশ ধরা নিষেধ।
প্রবীণ জেলে ইমান হোসেন বেপারী জানান,পদ্মা-মেঘনা নদীতে অনেক চর জেগেছে। নদীর নাব্যতা সংকটের কারণে ইলিশের বিচরণ ক্ষেত্র কমে যাচ্ছে। অন্যান্য প্রজাতির মাছ ধরা পড়লেও বড় সাইজের ইলিশের দেখা নেই। তারপরও দু’মাস বেকার থাকার পর জীবন জীবিকার তাগিদে নদীতে নামছে জেলেরা।
সরকার জেলেদের খাদ্য সহায়তায় প্রতি মাসে ৪০ কেজি করে চাল দিলেও জেলেরা এ বছর প্রচুর পরিমাণে জাটকা নিধন করেছে। ফলে এ বছর জাটকা নিধনের কারণে ইলিশের আকাল দেখা দেবে এমন আশঙ্কা সচেতন মহলের।
দু’মাস নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাটকা নিধন করার অপরাধে ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, কোস্টগার্ড এবং মৎস্য বিভাগ ইলিশ সংরক্ষণে এবং জাটকা রক্ষায় ৩ শ’৪৯ টি অভিযানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন । এতে ১১৫ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। ২৬ লাখ ৭৯ হাজার ১শ’ বর্গমিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে ধ্বংস করা হয় । অভিযান চালিয়ে ১২ হাজার ৪ শ’ ২ কেজি জাটকা আটক করে গরিব-দুঃস্থ ও এতিমদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
নিষেধাজ্ঞার দুই মাস পর ল²ীপুরের মেঘনায় মাছ ধরা শুরু
নিষেধাজ্ঞার ২মাস পর ল²ীপুরের মেঘনায় মঙ্গল বার থেকে ইলিশসহ সকল ধরনের মাছ ধরা শুরু হয়েছে। নদীতে নামছে দলবেধে জেলেরা। গত ২০ বছরও নদীতে এবারের মত অভিযান আর হয়নি। কিন্তু কাঙ্গিত মাছ পাচ্ছেন না জেলেরা। অভিযান সফল হওয়ায় গত বারের চেয়ে এবার মাছের উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করেন মৎস্য বিভাগ।
জাটকা সংরক্ষন ও ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে ল²ীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনাল এলাকার ১শ’ কিলোমিটার পর্যন্ত মার্চ-এপ্রিল দুই মাস ইলিশসহ সকল ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল মৎস্য বিভাগ। এই জেলায় প্রায় ৪৭ জেলে রয়েছে। সবাই মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। প্রতিবছর নদীতে অভিযান চলে। তবে ২০ বছরও এবারের মত নদীতে অভিযান আর হয়নি। জাটকা সংরক্ষন ও ইলিশের উৎপাদনের লক্ষ্য এবারের অভিযান সফল হয়েছে। মাছ শিকারে নামছে জেলেরা। কিন্তু যে পরিমান মাছ পাওয়ার কথা,তা পাওয়া যাচ্ছেনা বলে জানান জেলেরা। গত বছরের চেয়ে দাম অনেক ভালো।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলছেন, গত বারের চেয়ে এবার ২ হাজার মে. টন মাছ বেশি উৎপাদন হবে। গত বার ছিল ১৮ হাজার মে. টন। এবার ২০ হাজার মে.টন ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছে জেলা মৎস্য বিভাগ। তবে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে জেলেদের জালে প্রচুর মাছ ধরা পড়বে বলে মনে করেন এ কর্মকর্তা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।