পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সমাজের বিত্তশালী প্রভাবশালীরা নামে বেনামে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি নামকাওয়াস্তে ৯৯ বছরের লীজ কিংবা জোরপূর্বক ভোগদখল করে আসছে
মিজানুর রহমান তোতা : দুই এক শতক জমির অভাবে বহু পরিবারের একটু মাথা গোজার ঠাঁই মেলে না জীবদ্দশায়। বিশেষ করে হতদরিদ্র, অসহায় ও দুঃস্থদের নিজের বাড়ীতে থাকার স্বপ্ন কখনোই পুরণ হয় না। বস্তিতে, ফুটপাতে, রেলওয়ে স্টেশনসহ বিভিন্ন জায়গায় খোলা আকাশের নীচে জীবন কেটে যায় অনেকের। তারা হাজারো চেষ্টা করে সরকারী অব্যবহৃত কিংবা খাস জমি বন্দোবস্তো পায় না। অথচ সমাজের বিত্তশালী প্রভাবশালীরা নামে বেনামে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি নামকাওয়াস্তে ৯৯ বছরের লীজ কিংবা জোরপুর্বক ভোগদখল করে আসছে। জেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসক, রেলওয়ে এবং সড়ক ও জনপথসহ সরকারের বিভিন্ন বিভাগের এবং নদ-নদীর পাড় ও বিল-বাওড়ের বিশাল বিশাল জায়গাজমি বেহাত হয়ে গেছে। এই চিত্র দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের। সরকারী সম্পত্তি জবরদখল হলে ভুমি আইনের ধারা প্রয়োগ করে উদ্ধার করার বিধান রয়েছে। কিন্তু তা প্রয়োগ হতে দেখা যায় না। গোটা এলাকার খাস, অকৃষি, পতিত ও বেদখলে যাওয়া জায়গাজমির পরিমাণ কত জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে বলা হয় প্রায় ১লাখ হেক্টর। এই পরিমাণ জমি বাস্তবে নেই, কাজীর গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই অবস্থা। সুত্র জানায়, যেসব সরকারী সম্পত্তি ৯৯বছর লীজ অর্থাৎ ব্যক্তিবিশেষকে স্থায়ী ভোগদখলের সুযোগ করে দেয়া হয় তার একখন্ডও হতদরিদ্র কিংবা ভুমিহীনদের দেওয়া হয়েছে এমন নজীর নেই। নামমাত্র মূল্যে সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বিত্তশালী ও প্রভাবশালীদের দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া সরকারী নির্দেশনা আছে একইঞ্চি জমিও অব্যবহৃত অবস্থায় ফেলে রাখা যাবে না। সেখানে কিভাবে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে-এই প্রশ্ন সচেতন ও পর্যবেক্ষক মহলের। এ ব্যাপারে ভুমি মন্ত্রণালয় ও খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের দপ্তর থেকে তদন্ত হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে।
সুত্র জানায়, যশোর, খুলনা, মাগুরা, নড়াইল, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কোন এলাকায় কত একর সরকারী জমি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে, কোথায় কিভাবে জবরদখল হয়েছে কিংবা বিত্তশালীরা নামকাওয়াস্তে লীজ নিয়েছে তার কোন সুনির্দ্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেনি খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের দপ্তর, জেলা প্রশাসক, জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস, রেলওয়ে, সড়ক, জেলা পরিষদ ও ভূমি অফিসসহ সংশিষ্ট বিভাগ। সংশিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য গোটা অঞ্চলের অব্যবহৃত জমির পরিমাণ একত্রে করে সঠিক তথ্য দেয়ার কোন সুযোগ নেই। আনুমানিক তথ্য দেওয়া হয় বরাবরই। তবে হাজার হাজার কোটি টাকার সরকারী সম্পত্তি বেদখলে রয়েছে এর সাথে দ্বিমত পোষণ করেননি বিভাগীয় কমিশনারের দপ্তর। সংশিষ্ট একাধিক সুত্রে জানা গেছে, যশোর, খুলনা ও কুষ্টিয়াসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলায় প্রতিবছর গড়ে কৃষি থেকে অকৃষিতে চলে যাওয়া জমির পরিমাণ গড়ে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর। এ অঞ্চলে মোট জমি ২১ লাখ ১১ হাজার ৬৬ হেক্টর। এর মধ্যে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ১২লাখ ৬হাজার ৫৩০ হেক্টর। স্থায়ীভাবে পতিত রয়েছে ৫৬হাজার ৬৫৮ হেক্টর। সুত্র জানায়, খাস জমি, সড়ক, রেলওয়ে ও নদ-নদীপাড়সহ বেদখলের জমির পরিমাণ প্রায় অর্ধ লাখ হেক্টর। বিভিন্ন সময় এর সামান্য অংশ উদ্ধার হলেও তা পরবর্তীতে বেদখলে চলে গেছে। সুত্র জানায়, ২৬ সালের রেকর্ড আর ৬২সালের রেকর্ডের বিস্তর ফারাক দেখা যায় বিভিন্নক্ষেত্রে। এর সুযোগটা নিয়ে থাকে অবেধ দখলদাররা। উল্টাপাল্টা তথ্য দিয়ে মামলা মোকর্দ্দমা করে বছরের পর বছর আটকে রাখারও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। ভৈরব, নবগঙ্গা, কুমার, চিত্রা, কপোতাক্ষ, মাথাভাঙ্গা, গড়াই নদীসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় সব নদী পাড়ের বিপুল জমি ব্যক্তিমালিকানায় চলে গেছে বিভিন্নপন্থায়। যা আদৌ উদ্ধার হবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
গোটা এলাকার বিভিন্নস্থানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারের সংশিষ্ট একশ্রেণীর কর্মকর্তাদের দায়িত্ববোধের অভাবই সরকারী সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের বড় অন্তরায়। ভূমিদস্যুদের হাত থেকে গোটা এলাকায় একযোগে সরকারী জমি উদ্ধারে জোরালো কোন ভুমিকা নেয়া হয়েছে এমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী ও রাঘববোয়ালরা সরকারী ভূমির অবৈধ দখলদার। দখলমুক্ত ও অব্যবহৃত অবস্থায় থাকা সরকারী জায়গাজমি কৃষি ও শিল্পসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করার ব্যবস্থা নেয়া হলে সমৃদ্ধ হত সরকারের অর্থভান্ডার। তাতে বেকারদেরও কর্মসংস্থানের একটা সুযোগ সৃষ্টি হত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।