Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

মাগুরায় লিচুর ফলন বিপর্যয় ১০ কোটি টাকার লিচু উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কৃষকরা

| প্রকাশের সময় : ৩০ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম


সাইদুর রহমান, মাগুরা থেকে : মাগুরা জেলার লিচু পল্লী হিসেবে খ্যাত সদর উপজেলার হাজরাপুর, মিঠাপুর, ইছাখাদা, খালিমপুর, হাজিপুরসহ ৩০ গ্রামে এবার লিচুর ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ফলন বিপর্যয়ের কারনে চাষিদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। তারা বঞ্চিত হচ্ছে ১০ কোটি টাকার লিচু থেকে। প্রতিবারের মত এবারও এলাকার লিচু চাষিরা লাভের আশায় বুকবেঁধে লিচু পরিচর্যা করে আসছিল। কিন্তু এবার লিচুর মুকুল দেখা দিলেও ফল ধরেনি। যে কারনে ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। আর এ কারণে এবার উৎপাদনের হার নেমে এসেছে গত বারের তুলনায় অর্ধেক। ইতিপূর্বে মাগুরার লিচু চাষিরা প্রতি বছর ২০ কোটি টাকার লিচু বিক্রি করে আসছিল। এবার ১০ কোটি টাকার লিচু হবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। পরিবেশ পক্ষে থাকায় গাছে লিচুর ব্যাপক মুকুল দেখা দেয়। অসময়ে বৃষ্টির কারণে লিচুর মুকুল ঝরে যায়। ফলে এ বিপর্যয় দেখা দেয় বলে এলাকার লিচু চাষিরা জানায়। প্রতি বছরই এলাকার চাষীরা লিচু বিক্রি করে লাভবান হয়ে থাকে। গত বছর বিরূপ আবহাওয়া আর কৃষি বিভাগের উদাসিনতায় এলাকার চাষীরা ফলন বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছিল। এবারও একই অবস্থা। মাগুরা শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দুরে মাগুরা ঝিনাইদহ সড়কের ইছাখাদা পৌছিলেই চোখে পড়তো রাস্তার দুপাশে সারি সারি লিচু বাগানে থরে থরে ধরে থাকা লিচুর এ মনোরম দৃশ্য। এ লিচু পল্লীতে দেড় হাজার লিচু বাগান রয়েছে। লিচু চাষে অনেক চাষীর ভাগ্য বদলে দিন দিন অন্যেরা উৎসাহিত হয়ে এগিয়ে আসায় এলাকায় লিচুর চাষে বিপ্লব ঘটে। এলাকায় অনুষ্ঠিত হয় লিচুমেলা। মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসে ব্যাপারিরা। সমাগম হয় বিপুল সংখ্যক মানুষের। মাগুরা সদর উপজেলার হাজরাপুর, রাঘবদাইড়, হাজিপুর ইউনিয়নের মিঠাপুর, ইছাখাদা, খালিমপুর, রাউতাড়া, মির্জাপুর, বামনপুর, আলমখালী, বীরপুর, বেরইল, লক্ষীপুর, আলাইপুর নড়িহাটিসহ ৩০ গ্রামের চাষীরা গত ২১ বছর ধরে বানিজ্যিক ভিত্তিতে লিচুর আবাদ করে আসছে। মাগুরার চাষীরা বেদানা, মোজাফ্ফর, চায়না থ্রী ও বোম্বাই জাতের লিচুর চাষ করে। যা ক্রেতাদের কাছে খুবই প্রিয়। আর এ কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যাপারীরা এখানকার লিচু আগে ভাগে কিনে পরিচর্যা করে অন্যত্র বিক্রি করে লাভবান হয়। এ কারণে এলাকার লিচু জনপ্রিয়তা লাভ করে। প্রতি বছর ব্যাপারীরা লিচু কিনতে ভীড় জমায়। এলাকা হয়ে ওঠে জমজমাট। ট্রাক ট্রাক লিচু এখান থেকে অন্যত্র নিয়ে যায় ব্যাপারিরা। তবে ইতিপূর্বে প্রতি বছর লিচু মেলা অনুষ্ঠিত হলে ও গত তিন বছর রাজনৈতিক কারণে লিচু মেলা করা সম্ভব হয় নাই বলে জানান লিচু মেলার আয়োজোকরা। তাছাড়া এলাকার লিচু চাষের মূল হোতা ওলিযার রহমান সম্প্রতি মারা গিয়েছে। এর ফলে আগের মত লিচু মেলা হবে কিনা তা নিয়ে কৃষকদের সংশয় রয়েছে। জনৈক লিচু চাষী জানান, তার বাগানে ৫০টি লিচু গাছের প্রতি গাছে ৪ হাজার করে লিচু উৎপাদন হয় যা ৫লাখ টাকা বিক্রি করেছে ইতিপূর্বে। এবার ২ লাখ টাকা হবে কিনা সন্দেহ। তাদের মত সবাই এবার ক্ষতিগ্রস্থ হবে। কারন সর্বত্রই লিচুর ফলন বিপর্যয় ঘটেছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ