Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চৌদ্দগ্রামে শ্রমিক সঙ্কট ও বৈরী আবহাওয়ায় নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় বোরো ধান

| প্রকাশের সময় : ৩০ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম


মোঃ আকতারুজ্জামান চৌদ্দগ্রাম থেকে : সমতল ভূমি হওয়ায় কুমিল্লা জেলার অন্যতম ধান উৎপাদনকারী উপজেলা হিসেবে চৌদ্দগ্রাম সুখ্যাত। এছাড়া নি¤œাঞ্চল থেকে দুরবর্তী হওয়ায় এখানকার কৃষকদের ধানের জমিন পানিতে কিংবা ছোট-খাট দুর্যোগে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও কম। তাই প্রতি বছরেই বোরো মৌসুমের শেষ পর্যায়ে এ উপজেলার হাজার হাজার কৃষকের মুখে ফসলের হাসি জেগে উঠে। বোরো মৌসুমের এখন শেষ সময়। কৃষকের ধান কাটার কার্যক্রম চলছে পুরোদমে। আর মাত্র ক’দিন পরেই ধান কাটা শেষ হবে। কিন্তু গত কয়েকদিনের অব্যাহত ঝড় ও এবং শ্রমিক সঙ্কটে সেই শান্তির পরশ এবার বিষাদে পরিনত হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায় হালকা বাতাসের ঢেউয়ের সাথে মাঠে মাঠে পাকা ধানের ছড়া নুয়ে পড়ছে। মাঠ ভরা ধানে কষক-কৃষাণীর মনে আনন্দের ঢেউ খেলছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর ধানের উৎপাদন সবচেয়ে বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত কয়েকদিনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাঠে পড়ে থাকা পাকা ধান কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অনেক কৃষক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার ভয়ে আধাপাকা ধান কেটে ফেলায় তাদের ফলন প্রত্যাশার তুলনায় কম হয়েছে। পানির টাকা, শ্রমিকদের মজুরি মিলিয়ে খুব একটা লাভের মুখ দেখতে পারেনি বলে জানান অনেক কৃষক। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ খুব একটা ক্ষতি না করলেও চলমান শ্রমিক সংকটে মাঠে থাকা পাকা ধান নষ্ট হওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। এছাড়া শ্রমিকদের প্রতিদিনের মূল্য ৬-৭শত টাকায় উপনিত হওয়ায় কৃষকদের মাথায় হাত। যেখানে ১ মণ ধানের দাম ৭০০ টাকা সেখানে একজন শ্রমিকের পিছে তিনবেলার খাওয়াসহ ৯শত টাকার মতো খরচ হচ্ছে। এত টাকা খরচ করে পাকা ধান ঘরে তুলে আয় ব্যয়ে দেখা যায় কৃষক উল্টো ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশংকায়। পর্যাপ্ত শ্রমিক না থাকায় বাড়তি টাকা দিয়েও অনেকে শ্রমিক পাচ্ছে না। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে দেখা যায়, ধান পেকে রয়েছে কিন্তু কাটার শ্রমিক নেই। অব্যাহত বাড়তি খরচের চাকায় পিষ্ট হয়ে কৃষকরা দিশেহারা। তারা জানান, এ ধারা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে ধান করাই হয়তো ছেড়ে দিতে হবে। উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের ফেলনা গ্রামের ওসমান নামের এক কৃষক জানান, পানির মূল্য, শ্রমিকের মূল্য পরিশোধ করে যা খরচ হয়েছে ধানের মূল্য কম হওয়ায় কাটার পরে তাও পাওয়ার সম্ভাবনা নাই। ধানের দাম না বাড়লে ভবিষ্যতে ধানের চাষ করা বন্ধ করা ছাড়া আর উপায় থাকবে না।
কৃষি অফিস সূত্রে আরও জানা যায়, ইতিমধ্যেই অন্তত ৩০ শতাংশ ধান কৃষকের ঘরে উঠে গেছে। আবহাওয়া আর ৭-৮দিন ভালো থাকলে বাকী ৭০ শতাংশ ধানও মাঠ থেকে কৃষকদের ঘরে পৌছাবে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহনাজ বেগম। তিনি আরও জানান, এ বছর উপজেলায় ১২হাজার ৪শত ৪০ হেক্টর জমিনে বোরো ফসল লাগানো হয়েছে। সুন্দরভাবে ধান তুলতে পারলে ফলন বিগত কয়েক বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি হওয়ার প্রত্যাশা করছেন তিনি।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ