Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঘুর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড ঝিনাইদহের জনপদ

প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা : ৬ দিনের ব্যবধানে ঝিনাইদহের চার উপজেলায় মঙ্গলবার রাতে প্রচণ্ড শিলা বৃষ্টির সাথে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে। ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে শত শত ঘরবাড়ি। ঝড়ে ঝিনাইদহ সদর, কোটচাঁদপুর, কালীগঞ্জ ও মহেশপুর উপজেলার কয়েক’শ গ্রাম লণ্ডভণ্ড হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও সরকারী ভাবে তাদের পাশে দাঁড়ানো হয়নি। বুধবার দুপুর পর্যন্ত কোন জনপ্রতিনিধিও খোজ নেন নি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের। ঝিনাইদহ কৃষি বিভাগ থেকে তাৎক্ষনিক ভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে পারেনি। তবে ঘণ্টাব্যাপী ঝড়ে শত শত কাচ পাকা বাড়িঘর উড়ে গেছে বলে দপ্তরটি জানিয়েছে। গ্রামাঞ্চলে পল্লী বিদ্যুতের লাইন ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। সদরের পশ্চিমাঞ্চল, কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও মহেশপুরে বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ঝড়ে রাস্তায় বড় গাছ পড়ে ঝিনাইদহ যশোর মহাসড়ক এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কাজী নাজির উদ্দীন জানান, মঙ্গলবার সাড়ে ৬টার দিকে প্রচণ্ড গতিতে ঝড় শুরু হয়। সাথে ছিল শিলা বৃষ্টি। শিলা বৃষ্টিতে ধান ক্ষেতের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। মাঠের পর মাঠ কলা ক্ষেত ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। আম, কাঁঠাল, জাম, মেহগনি বাগানসহ বিভিন্ন গাছ ভেঙ্গে গেছে। মানুষ খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছে। সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামের ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম মনসাদ জানান, জীবনে এমন ঘূর্ণিঝড় দেখা যায় নি। ঝড়ে বংকিরা গ্রামের ৫০ জনের ঘরবাড়ি উড়ে গেছে। সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের আনিচুর রহমান জানান, ঝড়ে তাদের গ্রামের প্রায় ২০টি পরিবারের ক্ষতি হয়েছে। কোটচাঁদপুরের দোড়া ইউনিয়নের নবাগত ইউপি সদস্য আব্দুল হালিম জানান, লক্ষ্মীপুর ও মল্লিকপুর গ্রামে শতাধিক বাড়ি ভেঙ্গে গেছে। ছোট বড় গাছপালা লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। ভোমরাডাঙ্গা গ্রামের ফারুক হোসেন জানান, ঘারবাড়ির পাশাপাশি গাছপালা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। মহেশপুর ফতেপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম জানান, তার গ্রামের রফিকুল ইসলামের ৫ বিঘা কলার ক্ষেত পুরোটাই উপড়ে গেছে। কালীগঞ্জের নরেন্দ্রপুর গ্রামে শিলা ঝড়ে তার এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম তালুকদার জানান, জেলার কয়েকটি উপজেলায় ঝড় হয়েছে। আমি খবর পেয়ে ঝড় কবলিত এলাকা পরিদর্শন করছি। ঝড়ে রাস্তার উপর গাছপালা ভেঙ্গে পড়েছে। এছাড়া কাচা আধাপাকা বাড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে। তবে তাৎক্ষনিক ভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আকরামুল হক, জানান, গত ৩০ মার্চ ঝিনাইদহের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রচণ্ড ঝড়ে তিনশ কোটি টাকার উপরে ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতে আবারো ঝড়ে আঘাত হানলো। তিনি বলেন আমি খবর পেয়েছি ঝিনাইদহের পশ্চিমে ও কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর এবং মহেশপুরে ঝড়ের সাথে শিলা বৃষ্টি হয়েছে। এই ঝড়ে ধানসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশংকা রয়েছে। ঝিনাইদহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম যুবরাজ চন্দ্র পাল জানান, ৩০ মার্চের ঝড়ের ক্ষতিই এখনো পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। তার উপর মঙ্গলবারের ঘুর্নিঝড়ে জেলার ৪টি উপজেলার বৈদ্যুতিক লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফলে গোটা সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ