পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আওয়ামী ওলামা লীগ নেতৃবৃন্দ শবে বরাতের বিরোধিতাকারীদেরকে তাদের ভ্রান্ত মতবাদ প্রমাণে ১০০ কোটি টাকা চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করেছে। এ ঘোষণা উপলক্ষে এবং ১১ দফা দাবিতে গতকাল সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে রাজারবাগ দরবার শরীফ থেকে শবে বরাত ভ্রান্ত প্রমাণে ১০০ কোটি টাকা চ্যালেঞ্জের কথা পুনঃঘোষণা করেছেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, লাইলাতুল বারাআত হচ্ছে- গুনাহ থেকে মুক্তি লাভের রাত। বান্দার দোয়া কবুলের রাত। কিন্তু আহলে হাদীস, সালাফী ওহাবীরা সমাজে প্রচলিত ইসলামবিরোধী বিভিন্ন অপসংস্কৃতির প্রতিবাদ না করে পবিত্র শবে বরাতসহ বিভিন্ন ইবাদত বন্দেগীর বিরুদ্ধাচারণ করে ভ্রান্ত মতবাদ প্রচার করছে। অথচ পবিত্র শবে বরাত পালনে তাদের মুরুব্বীরাই, কিতাবে সারারাত ব্যাপী ইবাদত বন্দেগী করার কথা বলেছেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সালাফীদের মূল গুরু ইবনে তাইমিয়াও কিতাবে বলেছেন, পবিত্র শবে বরাতের মর্যাদা পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা সাব্যস্ত আছে। এ রাতের নামাজের ব্যাপারে অনেক ফযিলত বর্ণিত আছে। সলফে সালেহীনগন এ রাতে নামায আদায় করতেন।” (দলীল: মজমুয়ায়ে ফতোয়া ২৩তম খন্ড ১৩২ পৃষ্ঠা)
সালাফীদের গুরু নাছিরউদ্দীন আলবানী তার কিতাব “সহীহ আত তারগীব ওয়াত তারহীব” কিতাবের ৩য় খন্ড ৫৩ ও ৫৪ পৃষ্ঠায় পবিত্র শবে বরাত শরীফ সম্পর্কে ৫টা হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছে। ওহাবী-সালাফীদের বর্তমান সময়কার অন্যতম মুরুব্বী মুহম্মদ ইবনে ইব্রাহীম আত তুয়াইজিরীর লিখা “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্র্যাকটিক্যাল নামায”এবং সালাফীদের আরেক মুরুব্বী আব্দুর রাজ্জাক সালাফী কর্তৃক সম্পাদিত বইয়ের ২৮৪ পৃষ্ঠায় ‘শবে বরাত রাতের করনীয় কাজ’ শিরোনামে ১০টি ইবাদতের কথা বলা হয়েছে। এই ১০টি কাজ শবে বরাত পালনকারীরাও করেন। এসব আমলকে বিদয়াত বলে তারা গলাবাজি করে ইসলামের মধ্যে ভ্রান্ত মতবাদ ঢুকাতে চাচ্ছে। ওহাবী-সালাফীদের অন্যতম মুরুব্বী মুহম্মাদ বিন সালেহ আল-উসাইমিনও পবিত্র শবে বরাত উনার পক্ষে ফতোয়া দিয়ে বলেছেন শবে বরাতের ফযিলতের ব্যাপারে পবিত্র হাদীছ শরীফ অস্বীকার করছে ওহাবীরা অধিকাংশ আলেম পবিত্র শবে বরাত উনার ফযিলতকে স্বীকার করে। (মজমুয়ায়ে ফতোয়া ওয়া রাসায়েল ইবনে উসাইমিন ৭ম খন্ড ২০৫ পৃষ্ঠা)। পবিত্র শবে বরাতের করণীয় সম্পর্কে রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ইরশাদ করেছেন, পবিত্র শাবান মাসের রোযা আমার নিকট অন্য মাসের তুলনায় অধিক প্রিয়। যখন আপনাদের নিকট মধ্য শাবানের রাত্রি (পবিত্র শবে বরাত) উপস্থিত হবে, তখন আপনারা সেই রাতটি জাগ্রত থাকুন (পবিত্র নামাজ পড়ে, পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করে, পবিত্র তাসবীহ পড়ে, পবিত্র যিকির করে, দুআ করে) এবং দিনের বেলা রোযা রাখুন। কারণ, এ রাতে মহান আল্লাহ সূর্যাস্তের পর থেকে ফজর পর্যন্ত দুনিয়ার আসমানে তাশরীফ এনে (রহমত বর্ষণ করেন)। (ইবনে মাজাহ শরীফ)
বক্তারা বলেন, মহান আল্লাহপাক পবিত্র কুরআন শরীফে ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই আমি বরকতময় রজনীতে (শবে বরাতের রাতে) পবিত্র কুরআন নাযিল করেছি (নাযিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি) আর আমি ভয় প্রদর্শনকারী। উক্ত রাতে আমার পক্ষ থেকে সমস্ত প্রজ্ঞাময় কাজগুলো ফায়ছালা করা হয়। আর নিশ্চয়ই আমি প্রেরণকারী” (সূরা দুখান আয়াত ৩-৫)। সকল তাফসীরে ‘লাইলাতুম মুবারাকাহ’ দ্বারা পবিত্র লাইলাতুল বরাতকে বলা হয়েছে। পবিত্র কুরআন ও পবিত্র হাদীছে শবে বরাত থাকার পরও এর বিরোধিতা মুসলমানদের বিরুদ্ধে ওহাবী-সালাফীদের গভীর ষড়যন্ত্র। তারা বলেন, সারাদেশে এসব ভন্ডদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভ‚তিতে আঘাতের ও রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা দিতে হবে এবং গ্রেফতার করতে হবে। তারা বলেন, সরকারের উচিত পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে কমপক্ষে ৩ দিন বাধ্যতামূলক ছুটি ঘোষণা করা।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, আলহাজ মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী, সভাপতি- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ। আলহাজ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সাধারণ সম্পাদক- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, আলহাজ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, সভাপতি- সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদ, মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল জলিল, হাফেজ মাওলানা মোস্তফা চৌধুরী বাগেরহাটি, মাওলানা মুহম্মদ শোয়েব আহমেদ, মাওলানা মুহম্মদ আব্দুল গফুর, মুহম্মদ গরীব মাহাবুবসহ ১৩টি ইসলামী সমমনা সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।