পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মহান রাব্বুল আলামিন জ্বীন ও মানুষকে সৃষ্টি করেছেন এক আল্লাহর এবাদত করার জন্য। স্রষ্টার স্মরণে রয়েছে সৃষ্টির প্রশান্তি। দুনিয়ার মোহমায়া ও চাকচিক্যের বেড়াজালে মানুষ যখন কুরআন সুন্নাহর পথ থেকে সরে যায় তখন বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়। যখন এবাদত ও রিয়াজতে মগ্ন থাকে তখন আল্লাহর রহমতের মাঝে আবৃত হয়। লাইলাতুল নিসফে মিন শাবান তথা শবে বরাত হলো এবাদতে মশগুল থাকার অপূর্ব সুযোগ, ক্ষমা ও বরকত লাভের মহিমান্বিত রজনী। লাইলাতুল বরাত হলো মুক্তির রাত, ভাগ্য রজনী। গত শুক্রবার জুমাবার বাদে জুমা হতে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদের গাউছুল আজম কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত ৬৯তম পবিত্র শবে বরাত মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে কাগতিয়া দরবার শরীফের মোর্শেদে আজম উপস্থিত হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমানের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ তকরিরে একথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ইবনে মাজাহ শরীফে বর্ণিত রয়েছে হযরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন এক রাতে আমি রাসুলুল্লাহ (দ.)কে আপন কক্ষে না পেয়ে তার খোজে বের হলাম। আমি লক্ষ্য করলাম তিনি জান্নাতুল বাকিতে। উনি উনার মাথা মোবারক আকাশের দিকে তুলে আছেন। তিনি বললেন, হে আয়েশা! তুমি কি আশঙ্কা করছো যে, আল্লাহ ও তার রাসুল (দ.) তোমার প্রতি অবিচার করবেন? আয়েশা (রা.) বলেন তা নয় বরং আমি ভাবলাম যে, আপনি হয়তো উম্মেহাতুল মুমেনিনদের মধ্যে অন্য কোনো হুজরায় তশরীফ নিয়েছেন। তখন তিনি বললেন, মহান আল্লাহ মধ্য শাবানের রাতে দুনিয়ার কাছাকাছি আকাশে অবতরণ করেন এবং বনি কালব গোত্রের মেষপালের পশমের চাইতেও অধিক সংখ্যক লোকের গুনাহ মাফ করেন।
প্রিয় রাসুল (দ.) এই ধরার বুকে এসেছেন মানুষকে তৌহিদের দিকে নিয়ে আসার জন্য। সৃষ্টিকে স্রষ্টা পর্যন্ত পৌঁছে দেবার জন্য। প্রিয় রাসুল (দ.) এর এই মহান দায়িত্ব নবুয়্যতের পরিসমাপ্তির পর অলি আবদাল গাউস কুতুবগণ পালন করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মহান মোর্শেদ খলিফায়ে রাসুল (দ.) হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম (রা.)কে আমরা পেয়েছি। যিনি মানুষকে বুঝিয়েছেন দুনিয়ার চেয়ে আখেরাত উত্তম, হালাল পথে রয়েছে সত্যিকারের প্রশান্তি, এবাদতের মাঝে রয়েছে স্রষ্টার নৈকট্য, এখলাসের মাঝে রয়েছে আমলের সৌন্দর্য, কুরআন সুন্নাহর নিরিখে জীবন যাপনের মাঝে রয়েছে নবীজির সান্নিধ্য। যিনি সারা জীবন এক চুল পরিমাণও শরীয়তের হুকুম আহাকামের বাইরে ছিলেন না, শরীয়তে মোড়ানো ছিল উনার সমস্ত জীবন। সেই মহান ব্যক্তিত্ব সুদীর্ঘকাল ধরে ফয়েজে কুরআন, মোরাকাবা, দরূদে মোস্তফা, জিকিরুল্লাহর মাধ্যমে লাইলাতুল নিসফে মিন শাবান পালন করেছেন। এবাদতময় এমন রজনী হলো লাইলাতুল নিসফে মিন শাবান এর সত্যিকারের মর্মবোধ। মাহফিলে অনান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আবুল মনছুর, মাওলানা মুহাম্মদ জসিম উদ্দীন প্রমুখ।
মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশের উদ্যোগে পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে দিন-রাতব্যাপী গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিল বাদে জুমা খতমে কোরআন ও শবে বরাত শীর্ষক আলোচনা, বাদে আছর তরিক্বতের বিশেষ পদ্ধতিতে ফয়েজে কোরআন প্রদান, বাদে মাগরিব মোরাকাবা, জিকিরে গাউছুল আজম মোর্শেদী এবং বাদে এশা মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলীর তকরির মোবারক।
মিলাদ ও কিয়াম শেষে প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দেশের উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য এবং দরবারের প্রতিষ্ঠাতা গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।