পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : রাশিয়ার সামরিক রফতানির উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারতের সাথে ৬ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি থমকে গেছে। একই সাথে এই নিষেধাজ্ঞা এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য মিত্র দেশের অস্ত্র ক্রয়ের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। গত আগস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি আইনে স্বাক্ষর করেছেন যেখানে বলা আছে, কোন দেশ রাশিয়ার সাথে প্রতিরক্ষা বাণিজ্য ও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় করলে তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
২০১৪ সালে ক্রাইমিয়াকে ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন করায়, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ায় এবং ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নাক গলানোর জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে শাস্তি দেয়ার জন্যই এ আইন তৈরি করা হয়েছে।
কিন্তু আমেরিকার যে সব মিত্র দেশ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র রফতানিকারক রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কিনে থাকে, তারাও এই আইনের কারণে সমস্যায় পড়তে যাচ্ছে।
সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলো ভারত। তারা রাশিয়ার কাছ থেকে পাঁচটি এস-৪০০ দূরপাল্লার সার্ফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেম কিনতে চায় যেটা তাদের সামরিক বাহিনীর চেহারাই পাল্টে দেবে। এই সিস্টেমগুলো ব্যালিস্টিক মিসাইল এবং স্টেলথ জঙ্গিবিমানের (চীন যেগুলো তৈরি করছে) মোকাবেলা করতে পারবে। তাছাড়া ভারতের আরেক প্রধান প্রতিপক্ষ পাকিস্তানকে মোকাবেলার প্রশ্ন তো রয়েছেই।
দিল্লীর দুজন কর্মকর্তা জানান, পুতিন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৬ সালে সরকার-পর্যায়ের চুক্তির অংশ হিসেবে এই চুক্তিটি করেছিলেন যেটা এখন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আইনের আওতায় পড়ে গেছে।
ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামও রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কিনে থাকে। এরা উভয়েই যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক মিত্র। জাকার্তা স¤প্রতি সুখোই জঙ্গি বিমানের জন্য ১.১৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছে। অন্যদিকে ভিয়েতনামও রাশিয়ার কাছ থেকে আরও জঙ্গি বিমান কেনার পরিকল্পনা করছে।
বিস্তীর্ণ প্রভাব
কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের ভিজিটিং স্কলার কারা এবারক্রোম্বি বলেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আইনের প্রভাব ধারণার চেয়ে বেশি হতে পারে। ভিয়েতনামের বিমানবাহিনী রাশিয়ান স্যু-৩০ জঙ্গিবিমান এবং এস-৩০০ এয়ার প্রতিরক্ষা সিস্টেম ব্যবহার করে। তারা এগুলো আধুনিকায়ন করে আগামীতেও ব্যবহার করতে চায়।
ভিয়েতনামের সামরিক বিশেষজ্ঞ কার্ল থায়ার বলেন, মস্কো তাদের সামরিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এখনও অত্যাধুনিক এস-৪০০ মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম কেনার জন্য হ্যানয়কে রাজি করানোর চেষ্টা করবে।
থায়ার বলেন, “আমার মনে হয় এটা পরিস্কার যে, রাশিয়া এখনও ভিয়েতনামকে বড় ধরনের চুক্তি করার জন্য চাপ দিচ্ছে”। দুই দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীরা এ বছর উভয় দেশে পাল্টাপাল্টি সফর করেছেন বলেও জানান তিনি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র আমেরিকান সমরাস্ত্রের বিক্রি বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। একই সাথে রাশিয়ার রফতানি এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারা। ভিয়েতনামের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তাই বাড়তি মূল্য দেয়া লাগতে পারে।
ইন্দোনেশিয়া জানিয়েছে, এগারোটি সুখোই সু-৩৫ বিমানের প্রথম দুটি এ বছরেই হাতে পাবে তারা। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাশিয়ানদের সাথে চুক্তির পরিবর্তনের ব্যাপারে তাদের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।
রাশিয়ার অস্ত্র বিক্রির উপর যে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা, তার আওতায় পড়লে ইন্দোনেশিয়া কী ব্যবস্থা নেবে, এ ব্যাপারে অবশ্য কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি ইন্দোনেশিয়ার প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা।
জটিল সমস্যা
এ সমস্যার সমাধান খুঁজতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলে এবং প্রতিরক্ষা সচিব সঞ্জয় মিত্র ওয়াশিংটনে মার্কিন কর্মকর্তাদের সাথে গত মাসে বৈঠক করেছেন।
কর্মকর্তারা বলেছেন, ভারতের সামরিক বাহিনীর জন্য বিষয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ রাশিয়ার যন্ত্রাংশ, সরবরাহ ও রক্ষণাবেক্ষণ সেবা ছাড়া ‘আমাদের জাহাজ চলবে না, বিমানগুলোও উড়তে পারবে না’। “আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের যে ভূমিকা দেখতে চায় আমেরিকা, সেটা কখনই সম্ভব হবে না”।
ওয়াশিংটন-ভিত্তিক ফার্ম হিলস অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতমান ত্রিবেদী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে যদি বোঝানো যায় যে, রাশিয়ার অস্ত্রের উপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে আনছে ভারত, তাহলে নিষেধাজ্ঞা এড়ানো সম্ভব হতে পারে।
গত বছরে ভারত যত অস্ত্র আমদানি করেছে, তার ৬২ শতাংশই রাশিয়ান। ২০০৮-২০১২ সালে তাদের আমদানিকৃত অস্ত্রের ৭৯ শতাংশ ছিল রাশিয়ান। স্টকহোম পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউট গত মাসে তাদের এক রিপোর্টে এ তথ্য জানিয়েছে। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।