পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. হেদায়েত উল্লাহ, গাজীপুর থেকে : গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সাত দিন আগে এলাকায় টহলসহ প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন ২০ দলীয় জোট প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার।
এছাড়া তিনি নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরকে দৃশ্যমানভাবে নাম ও র্যাঙ্ক ব্যাচসহ ইউনিফর্ম পরে দায়িত্বপালন করার বিষয়টি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। গতকাল সোমবার দুপুরে টঙ্গী আউচ পাড়ায় তার বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ দাবি জানান। সভায় হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, নির্বাচন কমিশন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সন্ত্রাস দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও তালিকাভুক্ত চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারসহ সবরকম পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া নির্বাচনী প্রচারনা সভা, সমাবেশ ও উঠোন বৈঠকে সরকারি দলসহ সকল দলের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার অনুরোধ করেন। কালো টাকা বন্ধ করারও জোর দাবি জানান তিনি। হাসান সরকার আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীর একের পর এক নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন ও এসব ঘটনায় প্রশাসনের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, নির্বাচনে নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ এবং প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসারদের নিজ থানা ও পোলিং অফিসারদের নিজ ওয়ার্ডে নির্বাচনী দায়িত্ব দেয়া যাবে না। বিএনপির এ প্রার্থী আরও বলেন, গণমাধ্যমে প্রচার প্রচারণায় অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দল ও প্রার্থীর ক্ষেত্রে সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। গণমাধ্যম কর্মীদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশাধিকার এবং নির্বিঘেœ সংবাদ সংগ্রহের ব্যবস্থা করতে হবে। এ সময় মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও ২০ দলীয় জোট মেয়র প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহŸায়ক সাবেক এমপি ফজলুল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. মাজহারুল আলম, জেলা বিএিনপির সিনিয়র সহসভাপতি মো. সালাহউদ্দিন সরকার, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো. সোহরাব উদ্দিন, মীর হালিমুজ্জামান ননী, মো.শওকত হোসেন সরকার, জেলা হেফজতের যুগ্ম সম্পাদক মো. নাসির উদ্দিন প্রমুখ।
এদিকে সকালে গাজীপুর জেলা ও মহানগর জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ নেতাদের সাথে নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে মতবিনিময় করেন হাসান উদ্দিন সরকার। এসময় গাজীপুর জেলা বিএনপিরন সভাপতি ও ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহŸায়ক ফজলুল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম আমির মুফতি মাসুদুল করিম, সাধারণ সম্পাদ মাওলানা জাহাঙ্গীর হোসেন কাসেমী, যুগ্ন সম্পাদক মুফতি নাসির উদ্দিন, আবুল বাসেত কাসেমী, মুফতি শাহাদাত হোসেন, হাফেজ সোহেল মাহমুদ, মাওলানা আবুল হোসাইন প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জাসদ মেয়র প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার নৌকার প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমকে সমর্থন
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বাংলাদেশ সমাজ তান্ত্রিক দল (জাসদ) এর মনোনীত মেয়র প্রার্থী গাজীপুর মহানগর এর সভাপতি রাশেদুল হাসান রানা সোমবার বিকালে তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করে ১৪দল সমর্থিত আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমকে সমর্থন দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, জাসদ স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক নাদের চৌধুরী, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক শওকত রায়হান, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জ মো: আনোয়ারুল হক,গাজীপুর মহানগর সাধারণ সম্পাদক একরামুল হক খান সোহেল, মহানগরা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ইলিয়াস আহমেদ,প্রিন্সিপাল মহিউদ্দিন মহি প্রমুখ।
জাহাঙ্গীর আলমের নির্বাচনী কর্মকৌশল নিয়ে মতবিনিময়
আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম দিনব্যাপী তার বাসভবন সংলগ্ন প্যান্ডেলের ভিতরে গাজীপুর সিটি এলাকায় ৪২৫টি ভোট কেন্দ্রের আহŸায়ক/যুগ্ম আহŸায়ক ও সদস্য সচিবদের নিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট প্রার্থনার বিভিন্ন কর্মকৌশল নিয়ে মতবিনিময় করেন। এসময় সিটি এলাকার ৪২৫টি ভোট কেন্দ্রের আহŸায়ক যুগ্ম আহŸায়ক ও সদস্য সচিব নিয়ে প্রায় দেড় শতাদিক তৃর্ণমূল পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য এসব ৪২৫টি কমিটির প্রতিটিতে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি স্থানীয় ভোট কেন্দ্র কমিটির সদস্য হিসেবে নৌকা মার্কার প্রচার প্রচারণা ও ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করবেন বলে মতবিনিময় সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল মোতাবেক আজ ২৪ এপ্রিল মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে এবং এরপরই আনুষ্ঠানিকভাবে সিটি নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শুরু হবে।
২ মেয়র ও ৩৪ কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে গতকাল সোমবার ৩৬ প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ দুইজন মেয়র প্রার্থী, ৩১ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও তিন জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এতে করে মেয়র পদে সাত জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৫৬ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৮৪ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
নির্বাচনের রিটার্নিং অফিস সূত্র জানায়, সোমবার জামায়াত সমর্থিত স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এসএম সানাউল্লাহ ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) মনোনীত মো. রাশেদুল হাসান রানা তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দী মেয়র প্রার্থীগণ হলেন- আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল মনোনীত মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম, ২০ দলীয় জোট ও বিএনপি মনোনীত সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার, ইসলামী ঐক্য জোটের ফজলুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. জালাল উদ্দিন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কাজী মো. রুহুল আমিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ফরিদ আহমদ।
তবে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে বলে ভোটারদের ধারণা। দেশের সর্ববৃহৎ এ সিটি কর্পোরেশনে দ্বিতীয় নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৫ মে। আজ মঙ্গলবার প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ করা হবে।
প্রসঙ্গত, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মোট আয়তন ৩২৯ দশমিক ৫৩ বর্গ কিলোমিটার। ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৯টি সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ জন ও নারী ভোটার ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন। মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৪২৫টি। ভোট কক্ষ ২ হাজার ৭৬১টি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।