Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কেসিসি নির্বাচন : ৩৪ কাউন্সিলর প্রার্থীর নামে মামলা বিচারাধীন

আচরণবিধি নিয়ন্ত্রণে ৫ ভ্রাম্যমাণ আদালত

আবু হেনা মুক্তি | প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে যাচাই-বাছাই শেষে ২২৩ প্রার্থীকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে স্বশিক্ষিত বা স্বাক্ষর করতে পারেন এমন প্রার্থীর সংখ্যা ৪৪ জন। স্নাতক ও মাস্টার্স ডিগ্রিধারী ৫৬ জন। আর ৩৪ জনের নামে হত্যাসহ নানা মামলা বিচারাধীন রয়েছে। সাধারণ কাউন্সিলর পদে থাকা ১৮২ জনের অধিকাংশই ক্ষুদ্র ব্যবসা ও ঠিকাদারির সঙ্গে যুক্ত। নির্বাচন অফিসে জমা দেওয়া হলফনামা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। হলফনামা পর্যবেক্ষণ করে জানা গেছে, সাধারণ ওয়ার্ডের ১৮২ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ৯ জন মাস্টার্স, ৩৮ জন স্নাতক, ৩৩ জন এইচএসসি, দু’জন ডিপ্লোমা প্রকৌশলী, ৩৮ জন এসএসসি, দু’জন দশম শ্রেণি, একজন নবম শ্রেণি, ১৯ জন অষ্টম শ্রেণি, দু’জন সপ্তম শ্রেণি, একজন পঞ্চম শ্রেণি, ৩৭ জন স্বাক্ষর করতে পারেন। ৩২ জনের নামে হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
আর সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৪১ প্রার্থীর মধ্যে তিন জন মাস্টার্স, ছয় জন বিএ, তিন জন এইচএসসি, ছয় জন এসএসসি, ১৩ জন অষ্টম শ্রেণি, একজন সপ্তম শ্রেণি, একজন পঞ্চম শ্রেণি, সাত জন স্বাক্ষর করতে পারেন। আর ২ জনের নামে আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
কেসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও খুলনা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ইউনুস আলী বলেন, যাচাই-বাছাই শেষে ত্রুটিপূর্ণ, আপত্তিকর তথ্য-উপাত্ত থাকা, ঋণখেলাপি, আয়কর রিটার্ন সমস্যা থাকা, অসম্পূর্ণ মনোনয়নপত্র, মামলায় পলাতক থাকাসহ বিভিন্ন জরুরি বিষয়গুলো যাচাই করার পর এসব প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। ২৩ এপ্রিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার শেষে ২৪ এপ্রিল প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। তারপরই নির্বাচনি প্রচারে নামতে পারবেন প্রার্থীরা, যা ১৩ মে পর্যন্ত অব্যাহতভাবে চলবে। প্রচারের সময় অবশ্যই প্রার্থীদের নির্বাচনি আচরণবিধি অনুসরণ করতে হবে। কারণ, মাঠে ভ্রাম্যমাণ আদালত সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনও অভিযোগ বা প্রমাণ দৃশ্যমান হলেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে তাৎক্ষণিক আইনি পদক্ষেপ নেবেন।
আচরণবিধি নিয়ন্ত্রণে ৫ ভ্রাম্যমাণ আদালত
খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) প্রার্থীদের আচরণবিধি পর্যবেক্ষণ ও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণে সক্রিয় হচ্ছে খুলনা জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য ৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। এই টিম ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত কঠোর অবস্থানে থেকে দায়িত্ব পালন করবেন। ২৪ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত আচরণবিধি পর্যবেক্ষণসহ সার্বিক বিষয় মনিটরিংয়ের দায়িত্ব পালন করবেন ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। কেসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুস আলী এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘২৩ এপ্রিল পর্যন্ত আচরণবিধি কঠোরভাবে মনিটরিং করা হবে। এ লক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। ৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি মেট্রেপলিটন পুলিশের বিশেষ টিমও এ কাজে নিয়োজিত থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ নির্বাচনের জন্য গতবারের চেয়ে একটি কেন্দ্র বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর ফলে এবার ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা হচ্ছে ২৮৯টি। এ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে ২-৩টিকে সম্পূর্ণ সিসি টিভি ক্যামেরার আওতায় নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। যা নির্বাচনের ৪-৫ দিন আগে চূড়ান্ত হতে পারে। আর ২-৩টি কেন্দ্রে পরীক্ষামূলক ইভিএম মেশিন স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে, যা সপ্তাহখানেকের মধ্যে চূড়ান্ত হতে পারে। কারণ ওইসব কেন্দ্র এলাকার মানুষের মধ্যে ইভিএম পদ্ধতিটি সহজ করার জন্য ভোটের মহড়া অনুষ্ঠিত হবে।’
খুলনা জেলা প্রশাসক মো. আমিন উল আহসান স্বাক্ষরিত পত্রে জানা গেছে, কেসিসির ৩১টি ওয়ার্ডকে ৫টি ভাগে বিভক্ত করে ৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ টিম নির্বাচনি আচরণবিধি অনুসরণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন। যা স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন ২০০৯ এর আওতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ প্রতিরোধ কার্যক্রমে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
জেলা প্রশাসনের চিঠি সূত্রে জানা যায়, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও খুলনা সদর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুবায়ের হোসেন চৌধুরীকে সাধারণ ওয়ার্ড ১, ২, ৩, ৪, ৫ ও ৬ নম্বরে, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আরাফাতুল আলমকে সাধারণ ওয়ার্ড ৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২ ও ১৩ নম্বরে, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুম্মিতা সাহাকে সাধারণ ওয়ার্ড ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮ ও ১৯ নম্বরে, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিজানুর রহমানকে সাধারণ ওয়ার্ড ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪ ও ২৫ নম্বরে এবং সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাশেদুল ইসলামকে সাধারণ ওয়ার্ড ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০ ও ৩১ নম্বরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ