Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মির্জাগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ইমামের মাথা ন্যাড়া করে নির্যাতনের অভিযোগ

পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে মোঃ গফ্ফার (৩০) নামে এক মসজিদের ইমামকে গাছের সাথে বেঁধে পিটিয়ে মানুষের মল মুখে ঢেলে ও মাথা ন্যাড়া করে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে উপজেলার মির্জাগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ রাসেল (২৮) ও তার সঙ্গিদের বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ মির্জাগঞ্জ গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ নির্যাতিত ইমামকে ঘটনাস্থল থেকে গাছের সাথে বাধা অবস্থাায় উদ্ধার করে মির্জাগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। এ সময় ঘটনায় জড়িত রাসেলের সঙ্গি মোঃ আনসার, মোঃ জলিল দু’জনকে গ্রেফতার গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ ব্যাপারে মির্জাগঞ্জ থানায় নির্যাতিত ইমামের বড় ভাই মোঃ রাজ্জাক বাদী হয়ে রাসেলসহ ৮জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার বিবরনে জানা যায়, আব্দুল গফ্ফার উপজেলার কাকড়াবুনিয়ার সোনাপুরা গ্রামের লতিফ হাওলাদারের ছেলে সে পার্শ্ববর্তী বেতাগী উপজেলার মিয়ার হাট গ্রামের একটি জামে মসজিদের ইমাম ও খতিবের দায়িত্ব পালন করতেন। সে অবসর সময়ে ঝাড়ফুক দিয়ে বিভিন্ন রোগীর চিকিৎসা করতেন। ওই দিন বিকালে ইমাম আব্দুল গফ্ফারকে ফোন করে একজন অসুস্থ মানুষকে চিকিৎসা (ঝাড়ফুক) দেয়ার কথা বলে দক্ষিণ মির্জাগঞ্জে নিয়ে আসে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাসেল ও তার দলবল। সেখান থেকে তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে নির্জন এলাকায় নিয়ে একটি গাছের সাথে বেধেঁ রাসেল, আনসার, জলিল ও তাদের দলবল অমানবিক নির্যাতন চালায় পরে টয়লেট থেকে মানুষের মল নিয়ে ইমামের মুখে ঢেলে দেয় এবং মাথা ন্যাড়া করে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে গাছের সাথে বাধাঁ অবস্থায় ইমাম গফ্ফারকে উদ্ধার করে এবং ঘটনাস্থল থেকে মো. আনসার ও মো. জলিলকে গ্রেফতার করে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্যাতিত ইমাম আব্দুল গফ্ফার জানান, আমি মির্জাগঞ্জ দরবার শরিফে কিছুদিন চাকরি করেছি, তখন থেকে ছাত্রলীগ নেতা রাসেলের সাথে পরিচয় হয়। আমার কাছে বিশ্বাস করে কিছু রোগী আসত ঝাড় ফুক নেয়ার জন্য আমি আল্লাহর কালাম পরে পানি পরা দিলে ভালো হয়েছে অনেকে। তবে আমি কখনও মানুষের ক্ষতি করিনি। আমাকে নির্যাতনের সময় ওরা বলেছে আমি নাকি কুফ্ফরি কালাম দিয়ে মানুষের ক্ষতি করি যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতা মো. রাসেলের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে আগাস্থিনে গোমেজ নামে এক মহিলা নিজেকে ধর্মবোন পরিচয় দিয়ে বলেন, গফ্ফার একজন নারীলোভী ভন্ড ইমাম, সে ঘটনার দিন রাসেলের খালাকে তাবিজ দেয়ার কথা বলে কুপ্রস্তাব দেয়, পরে রাসেলের খালা ঘটনাটি রাসেলকে জানালে স্থানীয় জনতা তাকে বেধে গণধোলাই দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ওই গ্রামের বাসিন্দা মো. মফেজ গাজী বলেন, ইমাম আব্দুল গফ্ফার বিভিন্ন রোগীদের পানি পরা এবং ঝাড় ফুক দিয়ে চিকিৎসা করত। ঐদিন বিকালে রাসেলসহ কয়েকজন মিলে ইমাম আব্দুল গফ্ফারকে আমার বাসার সামনে থেকে জোর করে তুলে নিয়ে গেছে। কি কারণে নিয়েছে তা আমি জানতে পারি নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল ব্যাপারী বলেন , রাসেল এক সময় মির্জাগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিল বর্তমানে সে কোন কমিটিতে নেই। এ ব্যাপারে মির্জাগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ মেহেদী হাসান জানান, ঘটনাটি অত্যন্ত অমানবিক। অভিযুক্তদের দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।



 

Show all comments
  • ইমরান ২১ এপ্রিল, ২০১৮, ৩:৪৪ এএম says : 0
    সর্বত্র সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে
    Total Reply(0) Reply
  • Habibur rahman ২১ এপ্রিল, ২০১৮, ৬:৪৭ এএম says : 0
    আর কত দেখবো
    Total Reply(0) Reply
  • Farhad Aziz Kiron ২১ এপ্রিল, ২০১৮, ২:৩৯ পিএম says : 0
    এটা নতুন কিছু নয়, বরং সরকার টাকে পুরস্কৃত কি করেছে সেটা লিখুন।
    Total Reply(0) Reply
  • Hossain Anwar ২১ এপ্রিল, ২০১৮, ২:৪০ পিএম says : 0
    বললে চাকুরী থাকবে না !
    Total Reply(0) Reply
  • MD Choton ২১ এপ্রিল, ২০১৮, ২:৪০ পিএম says : 0
    কটিন বিচার চাই
    Total Reply(0) Reply
  • ফজলুল হক ৬ মে, ২০১৮, ১১:২৫ পিএম says : 0
    মানুষ সামাজিক জীব আশরাফুল মাখলুকাত সৃস্টির শ্রেষ্ঠ জীব বিবেক বুদ্ধির সমান্নায় গঠিত হয়? আপনি বাচলে আপনার বাপের নাম~ রাখতে পারেন আর কি।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ছাত্রলীগ নেতা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ