Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

থানায় মামলা : ভাসুর আটক ধুনটে নির্যাতনের পর গৃহবধূর মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছে স্বামী

| প্রকাশের সময় : ১৮ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বগুড়া ব্যুরো : বগুড়ার ধুনটে আছমা খাতুন (২৬) নামের এক গৃহবধূকে নির্যাতনের পর মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছে বকুল হোসেন (৩৫) নামের এক পাষÐ স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের মাধবডাঙ্গা গ্রামে। গত সোমবার বিকালে স্থানীয় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় স্বামীর বাড়ী থেকে ওই নির্যাতিত গৃহবধূকে উদ্ধার করে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে ভর্তি করেছে তার স্বজনেরা। এদিকে সংবাদ পেয়ে রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসমার ভাসুর শাহ আলম (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের মাধবডাঙ্গা গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে বকুল হোসেনের সাথে ধুনট সদরপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেনের মেয়ে আছমা খাতুনের প্রায় ৮ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে লিখন আকন্দ ও লিমন আকন্দ নামের দুই ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু গত এক বছর যাবত যৌতুক দাবি করে মাঝেমধ্যেই আছমা খাতুনকে নির্যাতন করে আসছে স্বামী বকুল হোসেন। এবিষয় নিয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হলেও স্বামী বকুল হোসেন আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। গত ৯ এপ্রিল বকুল হোসেন আবারও যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূূ আছমা খাতুনকে বেদম মারপিটে আহত করে। এক পর্যায়ে স্বামী বকুল হোসেন তার স্ত্রীর মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেয়। এরপর গত সাতদিন যাবত ওই গৃহবধূকে ঘরে আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতন চালায় পাষÐ স্বামী বকুল হোসেন। এদিকে মেয়ের নির্যাতনের খবর শুনে তার পিতা ইসমাইল হোসেন দেখা করতে গেলেও তাকে দেখা করতে দেয়নি বকুল হোসেন। সোমবার বিকালে স্থানীয় এলাকাবাসী ও সাংবাদিকদের সহযোগিতায় স্বামীর বাড়ী থেকে নির্যাতিত গৃহবধূ আছমা খাতুনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে তার পিতা। এদিকে সংবাদ পেয়ে রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে তার ভাসুর শাহ-আলমকে গ্রেফতার করলেও স্বামী বকুল হোসেন পালিয়ে যায়।
স্বামীর নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে গৃহবধূু আছমা খাতুন জানান, কারণে-অকারণে দীর্ঘদিন যাবত স্বামী বকুল হোসেন তাকে নির্যাতন করে আসছে। গত এক সপ্তাহ আগে নির্যাতনের পর জোড়পূর্বক তার মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দিয়েছে। বাড়ীতে কাউকে খবরও পাঠাতে দেয়নি। এমনকি তার পরিবারের সাথেও দেখা করতে দেয়নি। মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার পর ঘরে আটকে রেখে সাতদিন যাবত মারধরসহ বিভিন্নভাবে সে নির্যাতন করেছে। গৃহবধূ আছমা খাতুনের পিতা ইসমাইল হোসেন বলেন, স্থানীয় এলাকাবাসী ও সাংবাদিকদের সহযোগিতায় আমার মেয়েকে উদ্ধার করে ধুনট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে ওই গৃহবধূর স্বামী বকুল হোসেন নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, স্ত্রী আছমা খাতুনের মাথায় খুসকি হওয়ায় তার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছে। তাকে ঘরে আটকে রেখে কোনো নির্যাতন করা হয়নি। ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খান মোহাম্মদ এরফান বলেন, সংবাদ পেয়ে রাতেই অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে এবং মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ