Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে আ’লীগ-বিএনপিতে ক্ষোভ

সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ২০১৮

| প্রকাশের সময় : ১৬ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

কেসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ প্রার্থীই বৈধ
আবু হেনা মুক্তি : খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচ প্রার্থীকেই বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী দলের মহানগর শাখার সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী দলের মহানগর সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু, জাতীয় পার্টি মনোনীত শফিকুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত অধ্যক্ষ মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি মনোনীত প্রার্থী দলের মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু। গতকাল রোববার বেলা ১১টায় মেয়র পদে পাঁচ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে রিটার্নিং অফিসার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী প্রার্থীদের বৈধ ঘোষণা করেন। মেয়র পদে এই পাঁচ জনই মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এদিকে, মেয়র পদে আওয়ামীলীগ ও বিএনপিতে একাধিক শক্ত মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী না হলেও কাউন্সিলর পদে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠে রয়েছে। দু’দলের মধ্যে বিএনপি’র চেয়ে আওয়ামীলীগে বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা বেশি। এখনও পর্যন্ত ৩১টি ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা ৪০ ও বিএনপি’র ৩২ জন। তবে উভয় দলের দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন শেষ পর্যন্ত এ সংখ্যা থাকবে না।
সূত্রমতে, কেসিসি নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি’র অভ্যন্তরীণ দ্ব›দ্ব প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। বিএনপির অন্তকোন্দল ও গ্রæপিং এর কারণে কাউন্সিলর পদে একাধিকবার নির্বাচিত ১২নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. মুনিরুজ্জামান, ১৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আনিছুর রহমান বিশ্বাস (প্যানেল মেয়র), ২৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কেএম হুমায়ুর কবির ও ৩০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুহা. আমানউল্লাহ আমান দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এতে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন স্থানীয় বিএনপির নেতারা। এরই মধ্যে জেলা বিএনপির দুটি ওয়ার্ডে বিএনপির পাল্টা কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে। কেন্দ্র থেকেও এসব ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। অপরদিকে নগরীর ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঘোষণার পর তা বাতিল করায় প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে মহানগর হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ। ‘পকেটের লোককে প্রার্থী করা হয়েছে’ মন্তব্য করে সংগঠনের পক্ষ থেকে নির্বাচনে ভোট বর্জনের হুমকি দিয়েছেন নেতারা।
বিএনপির দলীয় মনোনয়ন থেকে বাদ পড়া নগর বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক কেএম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিএনপির নির্বাচিত সকল কাউন্সিলরকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নেতাদের কাছের লোককে প্রার্থী করে আমাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। খুলনায় সরকারবিরোধী আন্দোলনে আমি সব থেকে বেশি নির্যাতিত হয়েছি, সব চেয়ে বেশি মামলার আসামি হয়েছি। তার প্রতিদানে আমাকে বাদ দেওয়া হলো।’ তিনি বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে একাধিকবার মুঠোফোনে মনোনয়নের ব্যাপারে আমার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। আমি স্থানীয় রাজনীতি সম্পর্কে তাদের জানিয়েছি।’
তবে দলের এ সব ক্ষোভ সম্পর্কে মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘পৃথিবীর কোন সিদ্ধান্তেই সকল পক্ষকে সন্তুষ্ট করা যায়নি।’
দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৯ এপ্রিল কেন্দ্র থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে মহানগর হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বীরেন্দ্র নাথ ঘোষের নাম ঘোষণা করে। তিনি ওই ওয়ার্ডে আগেও দু’বার দলীয় ব্যানারে নির্বাচন করেছেন। কিন্তু ১১ এপ্রিল রাতে প্রার্থীতা পরিবর্তন করে এই ওয়ার্ডে ফয়েজুল ইসলাম টিটোকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এ সময় সংরক্ষিত ৮ আসনে হালিমা ইসলামকে পরিবর্তন করে কনিকা সাহাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। এর আগে ১০নং ওয়ার্ডে নগর যুবলীগ নেতা কাজী তালাত হোসেন, ১৮নং ওয়ার্ডে রাজুল হাসান রাজু, ৩১নং ওয়ার্ডে জিয়াউল ইসলাম মনোনয়ন চেয়ে পাননি। এরা প্রত্যেকে দলীয় প্রার্থীর বাইরে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
মহানগর হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বীরেন্দ্র নাথ ঘোষ বলেন, ‘ঢাকা থেকে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হলেও খুলনার নেতারা তাদের পকেটের লোককে প্রার্থী করতে আমাকে বাদ দিয়েছেন। এতে আমার সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। খুলনায় আমাদের সংগঠনের ৭০ থেকে ৮০ হাজার ভোট রয়েছে। এই অপমানের প্রতিবাদে প্রয়োজনে সিটি নির্বাচনে ভোট বর্জন করার সিদ্ধান্ত হতে পারে।’ আর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান এমপি বলেছেন, ‘দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ নির্বাচন করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
২৮ জানুয়ারি, ২০২১
২৭ জানুয়ারি, ২০২১
২৬ জানুয়ারি, ২০২১
২০ জানুয়ারি, ২০২০
১৮ জানুয়ারি, ২০২০
১৬ জানুয়ারি, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ