Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রকল্পভুক্ত দুটি প্রকল্পের পর এবার গোপনে ৩ বিঘার লেক বিক্রি

বগুড়ার বেসরকারি স্নিগ্ধা আবাসিকের মালিক পক্ষের প্রতারণা

বগুড়া ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৩ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বগুড়ার শহরের নিশিন্দারা এলাকায় তিনটি লেক, শিশু পার্ক ও কমিউনিটি সেন্টারসহ আকর্ষণীয় স্নিগ্ধা আবাসিক প্রকল্পে প্রলুব্ধ হয়ে যারা যারা প্লট কিনে বাড়ি করেছেন তারা ক্রমাগতভাবে প্রতারিত হয়েই চলেছেন। প্রতারক মালিকপক্ষ প্লট ক্রেতাদের অনেকভাবে ঠকিয়ে নাজেহাল করার পর এবার তিনবিঘা আয়তনের একমাত্র আকর্ষনীয় লেকটিকেও কাগজপত্রে ‘প্লট আকারে দেখিয়ে সেটি গোপনে বিক্রি করেছেন। ফলে ক্রেতারা এবার ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন, ওই আবাসিক প্রকল্পের ক্রেতারাই শুধু নয় আশেপাশের মহল্লা বাসিরাও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এই ঘটনার প্রতিবাদে। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে স্নিগ্ধা আবাসিক প্রকল্পের কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে লেক বিক্রি ও তার ভরাট বন্ধে বগুড়ার জেলা প্রশাসক, পৌর মেয়রের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। তবে পৌর মেয়র ভরাট বন্ধে নোটিশ করলেও লেকটির গোপন ক্রেতারা তা’ মানছেন না, ফলে ঘটনা নিয়ে এলাকায় যে কোনো সময় তুলকালাম ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর সৈয়দ সার্জিল আহমেদ টিপু বেসরকারি স্নিগ্ধা প্রকল্পের লেকটি বিক্রির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, এটি ভরাট হয়ে গেলে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। কোনো অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলে পানির অভাবে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হবে। তিনি নিজেও জনপ্রতিনিধি হিসেবে লেকটির ভরাট বন্ধে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্নিগ্ধা আবাসিক প্রকল্প কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ বিপ্লব সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে জানান, তারা বগুড়া পৌরসভা অনুমোদিত এ প্রকল্পের নকশায় তিনটি জলাধার, শিশু পার্ক, কমিউনিটি সেন্টার দেখে প্লটগুলো কেনেন। এর মালিক মরহুম ময়েজ উদ্দিন আহমেদের মৃত্যুর পর তার সন্তানরা নকশায় থাকা ও মৌখিকভাবে ক্রেতাদের দেওয়া কোনো প্রতিশ্রুতিই বাস্তবায়ন করেন নি। এর আগে তারা দুটি পুকুর ভরাট করে বিক্রি করেছেন। সেসব পুকুরে উপর বহুতল ভবন নির্মিত হয়েছে, যা মারাত্মক ঝুঁকিপুর্ণ। এখন শেষ এই লেকটি গোপনে বিক্রি করেছেন। তোফায়েল আহমেদ বিপ্লব জানান, তারা যে কোন মূল্যে লেক ভরাট বন্ধ করবেন। প্রকল্পের বাসিন্দা ব্যাংকার সাহিদা বেগম জানান, তারা লেক দেখে প্লট কিনেছেন। এখন সেটি বিক্রি করা হয়েছে। এতে বাসিন্দারা সকলে ক্ষুব্ধ। এ প্রসঙ্গে স্নিগ্ধা আবাসিক প্রকল্পের পরিচালক সাফি জানান, তারা লেকটি সদর থানা বিএনপিসাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম শাহীন ও তার স্ত্রীসহ ৫-৬ জনের কাছে বিক্রি করেছেন। লেকটি পৌরসভার অনুমোদিত হবার পরও কেন বিক্রি করলেন এ প্রসঙ্গে তিনি নিরব ধাকেন। বিএনপি নেতা শাহীন জানান, তিনিসহ বেশ কয়েকজন লেকটি কিনেছেন। কিন্তু স্থানীয়রা শত্রুতাবশত কেবল তার নামটাই প্রচার করছেন। প্রকল্পের সার্ভেয়ার আমির আলী জানান, মাঠ পর্যায় লেক উল্লেখ থাকলেও মালিকপক্ষ সেটি বিক্রি করেছেন।
এদিকে প্রকল্পভুক্ত প্লট মালিকরা ছাড়াও স্থানীয় মহল্লা বাসিরা বলছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পুকুর, লেক, খেলার মাঠ ভরাট করে আবাসিক বা বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। এরপরও স্নিগ্ধা আবাসিক প্রকল্প কর্তৃপক্ষ সর্বশেষ লেকটি বিক্রি করে দিয়েছেন। এ প্রকল্পের লেকটি পৌরসভা অনুমোদিত। তারা বলেন, স্নিগ্ধা আবাসিক প্রকল্পের কল্যাণ সমিতি লেকটি ভরাট বন্ধে পৌর মেয়রের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। সচেতন নাগরিক হিসেবে তারাও লেকটি ভরাট বন্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বগুড়ার জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রকল্প


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ