পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলনের মুখে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি পরীক্ষা-নিরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বিস্ফোরণোন্মুখ পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় সরকারি চাকরির বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই নির্দেশ দেয়া হয়। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন,প্রসঙ্গটি মন্ত্রিসভার আলোচ্যসূচিতে ছিল না। কিন্তু একজন মন্ত্রী বিষয়টি তোলার পর এ নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনা হয়েছে। আজকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি, কিছুটা অনির্ধারিত আলোচনা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবে, দেখে এটা অবহিত করবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কোটায় নিয়োগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় স¤প্রতি যে পরিপত্র দিয়েছে, তারপরই নতুন করে এ আন্দোলন শুরু হয়েছে। এ সময় শফিউল আলম বলেন, পরিপত্রটা আমরা পরীক্ষা করে দেখব। কোটার কারণে মেধাবীরা খুব বেশি বঞ্চিত হয়নি দাবি করে গত তিনটি বিসিএসের নিয়োগে কত শতাংশ মেধাবী নিয়োগ পেয়েছেন- সেই তথ্য তুলে ধরেন শফিউল। তিনি বলেন, ৩৩তম বিসিএসের ৭৭ দশমিক ৪০ শতাংশ পদ মেধা কোটা দিয়ে পূরণ করা হয়েছে। আর ৩৫তম বিসিএসে ৬৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং ৩৬তম বিসিএসে ৭০ দশমিক ৩৮ শতাংশ পদ মেধা থেকে পূরণ হয়েছে। মেধা কোটা কখনও অবহেলিত হয় না। মেধাটা আসলেৃ যেমন ধরুন মহিলা কোটা- মহিলা কোটায় যদি ১০টি পদ থাকে, এই ১০টির মধ্যে তারাই আসবে যারা লিখিত বা অন্যান্য সব ক্যাটাগরিতে ভালো করেছে, তারাই আসবে যারা উপরের দিকে আছে। মহিলাদের মধ্যে যারা মেধা তালিকায় ভালো করবে তারাই আসবে। এমন নয় যে যারা মেধাবী তারা অবহেলিত হয়ে যাচ্ছে, পিছনে পড়ে যাচ্ছে। জেলা কোটার ক্ষেত্রেও তাই। জেলার মধ্যে যারা ভালো করবে তারা আসবে, প্রত্যেক সেক্টরেই মেধার মধ্যে যারা অগ্রসর তারাই আসবে, কোটার দ্বারা কিন্তু কারো মেধা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যখন যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যাচ্ছে না, তখন সেসব পদ অন্যভাবে পূরণ করা হচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভার সোজা সিদ্ধান্ত ছিল কোটাতে যদি যোগ্যপ্রার্থী পাওয়া না যায়, মেধা তালিকার শীর্ষে অবস্থানকারীদের দিয়ে তা পূরণ করা হবে। তাহলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যায় বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে কি না- এ প্রশ্নে শফিউল বলেন, পরিপত্রটি আমরা পরীক্ষা করব। পদ না পাওয়া গেলে মেধা তালিকার উপরের দিকে যারা আছে তাদের দিয়ে পূরণ করা হবে, এটাও তো সংস্কার। একটা সংস্কার অলরেডি হয়ে গেছে। সার্কুলার দিয়ে কোটা চলছে, সার্কুলার সংশোধন করা হয়েছে। এতে কিন্তু মোধাবীরা যথেষ্ট স্কোপ পাচ্ছে বলে আমাদের ধারণা। কোটার কারণে যারা মেধাবী তারা খুব বেশি বঞ্চিত হয়নি।
বাংলাদেশে বর্তমানে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা রয়েছে।এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কোটা রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা পারিবারের জন্য ৩০ শতাংশ। এর বাইরে ১০ শতাংশ নারী কোটা, পশ্চাদপদ জেলার জন্য ১০ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য পাঁচ শতাংশ এবং এক শতাংশ কোটা আছে প্রতিবন্ধীদের জন্য। বাংলাদেশে নানা সময় কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকারের শেষ বছরে আন্দোলন হয়েছে। সব মিলিয়ে কোটার জন্য বরাদ্দ ৫৬ শতাংশ। ফলে এর কোনো শ্রেণিতে যারা পড়েন না, তাদের প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে বাকি ৪৪ শতাংশের জন্য। এই পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এর ব্যানারে আন্দোলনরতরা রোববার শাহবাগ মোড় চার ঘণ্টা অবরোধ করে রাখার পর পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে এবং রাবার বুলেট-কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে সরিয়ে দেয়। কিন্তু এরপর রাতে বিক্ষোভ আর সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে পুরো ক্যাম্পাসে। রাত দেড়টা থেকে ২টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলা চালিয়ে ভ্যাপক ভাঙচুর করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক ছাত্রী গভীর রাতে হল থেকে বেরিয়ে এসে টিএসসিতে অবস্থান নিয়ে থাকে। টিএসসিসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগ কর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে রাতভর। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সোমবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তাদের ২০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি বিকালে দলের সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন। দেশব্যাপী চলমান এ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে কোটা নিয়ে সরকার নতুন করে ভাববে কি না- এ প্রশ্নে শফিউল বলেন, শুধুমাত্র মেধা যদি হয় তাহলে অনগ্রসর জেলাগুলো তাদের জন্য যে জেলা কোটা রাখা আছে সেখানে তারা একসেস পাবে না, এটা তো বুঝতে হবে। মহিলা, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, প্রতিবন্ধীরা পাবে না। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে মেধার কনটেস্ট হচ্ছে। তাদের মধ্যে যারা মেধায় অগ্রসর, উপরের দিকে তারাই তো আসবে। এখানে মেধাকে আন্ডারমাইন করা হচ্ছে না। আসলে এখানে কোটার মাধ্যমে মেধা কখনও অবহেলিত হয় না-এমন মন্তব্য করে সচিব বলেন, যেমন ধরুন মহিলা কোটায় যারা থাকবে তাদের মধ্যে যারা মেধায় এগিয়ে তারাই পাবে। এমন নয় যে তাদের মধ্যে মেধার কোন প্রতিযোগিতা হয় না। ফলে তারা অবহেলিত হচ্ছে না। প্রতিটি সেক্টরেই মেধায় যারা অগ্রসর তারাই আসবে। কোটার দ্বারা কারও কোন মেধার ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। অন্য এক প্রশ্নে সচিব বলেন, কোটায় পূরণ না হলে মেধায় যারা এগিয়ে থাকবে তাদের মধ্যে থেকে নেয়া হবে। এটাই তো একটি সংস্কার। কথা হচ্ছে সংবিধানে বলা হয়েছে, মেধায় যারা অগ্রসর তাদেরকে সামনে নিয়ে আসার জন্য। তবে কোটার কারণে যারা মেধাবী তারা বঞ্চিত হয়নি। দেখুন শুধুমাত্র মেধায় নিলে যারা অনগ্রসর জেলার জন্য যে জেলা কোটা রাখা হয়েছে তারা বঞ্চিত হবে। এটা তো বুঝতে হবে। তখন ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠি পাবে না। তবে আমরা বিগত মন্ত্রিপরিষদ সভায় যে সংশোধনী আনা হয়েছে তাতেই তো মেধাবীরা অনেক বেশি সুবিধা পাচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।