পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
[প্রতিদিন উজাড় হচ্ছে চারটি ফুটবল খেলার মাঠের সমান বনাঞ্চল, রোহিঙ্গাদের জন্য বিকল্প জ্বালানী সংস্থানের দাবি, ইতোমধ্যে কাটা হয়েছে ৫ হাজার একর বনের গাছ, শক্তি কমে যাচ্ছে পাহাড়ের উপরিভাগের, ভারী বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা]
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের আরাকান (রাখাইন) রাজ্যের প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্ব সম্প্রদায় আজ উদ্বিগ্ন। মিয়ানমারের সেনা-পুলিশ ও মগ দস্যুদের নির্যাতন থেকে পালিয়ে আসা এই বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মানবিক কারণে বাংলাদেশ আশ্রয় দিলেও তাদের থাকা-খাওয়া ও জীবন যাপন চলছে এক কঠিন বাস্তবতার মধ্যদিয়ে। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে বাসস্থান ও জ্বালানী সঙ্কটসহ মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁিকতে রয়েছে এসব রোহিঙ্গা শরনার্থীরা। বর্ষায় রোহিঙ্গাদের জীবন ও স্বাস্থ্য রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়ে শতাধিক দাতা সংস্থা এগিয়ে আসছে বলে জানা গেলেও নিত্য দিনে রোহিঙ্গাদের বিশাল জ্বালানী সঙ্কট নিরসনে কোন বিকল্প ব্যবস্থার কথা এখনো জানা যায়নি। এতে করে উজাড় হচ্ছে সংরক্ষিত বন ও নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ।
দেখা গেছে, আরাকান থেকে মিয়ানমার সেনা-পুলিশ ও মগ দস্যুদের নির্যাতন থেকে পালিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসা শুরু হলে উখিয়া-টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ির বিশাল বনভূমি উজাড় করে তারা সেখানে আশ্রয় নেয়। ১৩ লাখ মত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে ধ্বংস হয়েছে শত শত নয় হাজার হাজার একর বনভূমি। কেটে সাবাড় করা হয়েছে সম পরিমাণ পাহাড়। এই বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর রান্না কাজে প্রতিদিন আশপাশের বনভূমি থেকে ব্যবহৃত হচ্ছে হাজার হাজার টন লাকড়ি। এই লাকড়ি যোগানের জন্য উজাড় হচ্ছে সরকারের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সৃজিত বাগানের গাছ।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে নষ্ট হয়েছে ৪/৫ হাজার একর পাহাড় এবং বনভূমি। আর প্রতিদিন জ্বালানী হিসেবে কাঠ পুড়ছে পাঁচ শত টন লাকড়ি। এতে একদিকে উজাড় হচ্ছে সরকারের সংরক্ষিত বনের সৃজিত বাগানের হাজার হাজার টন লাকড়ি। অন্যদিকে এই বিরাট অঙ্কের কাঠ পোড়ার ধুঁয়ায় নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। এতে ঝুঁিকতে রয়েছে গোটা এলাকার জনস্বাস্থ্য। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য ১৩ লাখ রোহিঙ্গার নিরাপদ বিকল্প জ্বালানীর কোন ব্যবস্থা করা হয়নি।
শরণার্থী কমিশনার (আরআরসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম এর মতে সরকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের জন্য কক্সবাজারের ১৪ বর্গ কিলোমিটার বনভূমি বরাদ্দ করেছে। আর প্রতিদিন চারটি ফুটবল খেলার মাঠের সমান এলাকার বন উজাড় হচ্ছে রোহিঙ্গাদের কারণে।
কক্সবাজার সহকারী জেলা প্রশাসক মাহিদুর রহমানের মতে জ্বালানি কাঠের জন্য শরণার্থীরা ইতোমধ্যে ৫ হাজার একর বন কেটে ফেলেছে। তিনি বলেন, বন কাটার ফলে তাতে পাহাড়ের উপরিভাগের শক্তি কমে যায়। তাই ভারী বৃষ্টি হলে ধসের ঝুঁকিও অনেক বেড়ে যায়। এতে প্রায় ২ লাখ রোহিঙ্গা ঝুঁিকতে রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিকল্প জ্বালানীর ব্যবস্থা করা নাহলে পরিবেশগত কারণে রোহিঙ্গারা শুধু নয়, উখিয়া-টেকনাফ এলাকার জনস্বাস্থ্যের ঝুঁিকর পাশাপাশি গোটা কক্সবাজারের বনভূমি উজাড় হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। তাই স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও বনভূমি রক্ষায় রোহিঙ্গাদের জন্য বিকল্প জ্বালানী সংস্থানের দাবী জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে সরকার বিষয়টি বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছে উপস্থাপন করে আধূনিক পদ্ধতিতে বিকল্প জ্বালানী সংস্থানের পথ বের করে আনা যেতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।