Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রশ্নফাঁস বন্ধে মানুষের পক্ষে যা করা সম্ভব তাই করেছি -শিক্ষামন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষাকে নকলমুক্ত ও প্রশ্নফাঁসমুক্ত করতে মানুষের পক্ষে যা যা করা সম্ভব তার সবই করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, নানাভাবে প্রতিদিনই নতুন নতুন সমস্যা হয়ত যুক্ত হচ্ছে। আমাদের জানার মধ্যে যা যা আছে বা আপনারা (সাংবাদিকরা) আমাদের যা জানিয়েছেন, এই সবকিছু মোকাবেলা করে পরীক্ষা নকলমুক্ত বা প্রশ্নফাঁসমুক্ত বা যে কোন ধরনের সমস্যামুক্ত করবার জন্য মানুষের পক্ষে যা করা সম্ভব, আমাদের এই বাস্তবতায় সবই করেছি। গতকাল (সোমবার) সারাদেশে শুরু হওয়া এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষার প্রথম দিন সকালে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। 

এর আগে সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরুর পর ওই কলেজের বারান্দা দিয়ে ঘুরে বিভিন্ন কক্ষের পরিস্থিতি দেখেন মন্ত্রী। পরে বেরিয়ে এসে তিনি বলেন, আমরা আশা করছি প্রশ্নফাঁস হবে না। যদি হয়, যিনি করবেন তাকেই দোষী করব। ক্রিমিনালরা কত ধরনের পথ বের করতে পারে সে তো আমরা এখনও জানি না। তবে যা ব্যবস্থা নিয়েছি তাতে সম্ভব হবে না। যেসব ফেইসবুক গ্রæপ বা পেইজে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় সেগুলো বন্ধ করা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা বিটিআরসিকে সঙ্গে সঙ্গে তথ্যগুলো জানিয়ে দিই। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিশেষভাবে কাজ করছে এগুলো নিয়ে, আমরাও সব জানি না, জানার দরকারও নেই। এ ধরনের প্রশ্নফাঁসের কাজে যারা নিয়োজিত আছেন তাদের ধরার জন্য সকলের সম্পৃক্ততা ও সহযোগিতা দরকার।
প্রশ্নফাঁসের তথ্য পাওয়া গেলে সরকার এবার কতটা কঠোর হবে- এমন প্রশ্নে নাহিদ বলেন, প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠতেই পারে। যে কেউ চাইলেই অভিযোগ করতে পারেন। আমাদের কাজ গোঁড়ায় গিয়ে দেখা এটা সত্য কি সত্য না। শাস্তির ব্যবস্থা আইনানুসারে যেখানে যা প্রযোজ্য তাই গ্রহণ করব। এতে কোনো সন্দেহ নাই। শিক্ষা মন্ত্রণালয় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার কথা বললেও তা হয়নি জানালে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোচিং সেন্টার বন্ধ করার জন্য যে আইন প্রয়োগ দরকার সে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আমরা না। এখানে অনেকগুলো মন্ত্রণালয় জড়িত। আইন প্রয়োগ করা, ক্রিমিনালদের ধরা এগুলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। এমসিকিউ প্রশ্ন পদ্ধতি এবং প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার কোনো পরিবর্তন আনা হবে কিনা জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এখানে জনমতের ব্যাপার আছে। শিক্ষাবিদ, অভিভাবক সবার মতামতের গুরুত্ব দিতে হবে। এখন পর্যন্ত যে কয়জন অভিভাবকের সাথে আমার কথা হয়েছে তারা বলেছেন এমসিকিউ যাতে তুলে না দেই। আমাদের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে, আরও অনেক জিনিস দেখে বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস এখন মহামারির পর্যায়ে চলে যাওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কড়াকড়ির মাত্রা বাড়িয়েছে। এসএসসির মত এইচএসসিতেও পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবে পরীক্ষার হলে বসতে হচ্ছে। কেউ পাঁচ-দশ মিনিট দেরি করলে তার দেরির কারণসহ নাম, রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর নথিভুক্ত করে রাখার নিয়ম হয়েছে। প্রশ্নপত্রের সেট নির্ধারণ করা হচ্ছে পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে লটারির মাধ্যমে। এসএমএস এর মাধ্যমে সেই তথ্য জানানো হচ্ছে কেন্দ্র সচিবকে। তারপর সিকিউরিটি টেপ ও সিলগালা ভেঙে খোলা হচ্ছে প্রশ্নের প্যাকেট। কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য সবার ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আছে আগের মতই। পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে পরীক্ষার্থী এবং পরীক্ষা সংশিষ্টরা বাদে অন্যদের ঢোকার উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ
এসময় মন্ত্রীর সাথে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমদ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর মো. মাহাবুবুর রহমান এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. জিয়াউল হক।এর আগে শিক্ষামন্ত্রী পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিবের কক্ষে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে প্রশ্নপত্রের খামের নিরাপত্তা ট্যাপ পরখ করেন এবং পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে ট্যাপ খুলে দেখান। শিক্ষামন্ত্রী পরীক্ষা কেন্দ্রের কয়েকটি কক্ষও পরিদর্শন করেন। গতকাল থেকে শুরু হওয়া এইচএসসি, আলিম ও সমমান পরীক্ষায় এবার ১৩ লাখ ১১ হাজার ৪৫৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। মোট ২ হাজার ৫৪১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিক্ষামন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ