Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘আঁরে চিনছেন নি, আঁই তো নোয়াখাইল্যা’

চাঁদপুরে আ.লীগের জনসভায় ওবায়দুল কাদেরের হাস্যরসাত্মক বক্তব্য

বি এম হান্নান, চাঁদপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ৩ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চাঁদপুর স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগের জনসভায় সঞ্চালক ঘোষণা দিলেন, এ পর্যায়ে বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। উপস্থিত সবাই হাততালি দিয়ে স্বাগত জানালেন এই নেতাকে। মাইক্রোফোনে এসেই সবাইকে চমকে দিলেন ওবায়দুল কাদের। বক্তব্য শুরু করলেন নোয়াখালির আঞ্চলিক ভাষা দিয়ে।
তিনি উপস্থিত জনতাকে সালাম দেন। কিন্তু জবাব না পেয়ে তিনি বলেন, ‘আরে জবাব দেয় না কিল্লাই (কেন)?’ পরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আঁরে চিনছেন নি? আঁই তো নোয়াখাইল্যা (আমাকে চিনেছেন? আমি তো নোয়াখাইল্যা)।’ ‘আঁর বাড়ি নোয়াখালী, আপনেরার বাড়ি চাঁদপুর। আঙ্গো কিন্তু বাষা এক। এক্কেবারে পাশের ঘর।’ ‘তবে একটা কথা আছে, ইলিশের ঘর চাঁদপুরের ইলিশ মজা, নোয়াখালীর ইলিশে মজা নাই।’
প্রখর রোদের মধ্যে জনসভায় আসা হাজারো মানুষের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চৈত মায়া রইদের মধ্যে আহারে কি কষ্ট! কষ্ট পাইতেছেন।’ ‘নেত্রী কয়, শেষ করিয়ালাও তাড়াতাড়ি, মাইনষে বড় কষ্ট পায়। আপনেগো কষ্টের কথা মনে করে, আমিও বক্তৃতা বেশি দিমু না।’
শেখ হাসিনার সরকারকে আবার ক্ষমতায় আনার আহŸান জানিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘এমনে বালা আছুইন তো? বালা আরও থাকবেন। থাকতে চান? বালা আরও থাকতে চাইলে শেখ হাসিনা দরকার। আরেকবার দরকার, শেখ হাসিনার সরকার।’
সরকারের উন্নয়নের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আহারে চাঁদপুর, কী গরিব গরিব চেহারা আছিল! অহন তো বেহের দিকে তাকালে এই রইদের মইদ্যেও বেগগুনায় ফটফটা আছে, শান্তিতে আছে। এত রইদ, তার পরেও মনের মইদ্যে কষ্ট নাই। ঠিক আছে না?’
‘এত উন্নয়ন, বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাট, ডিজিটাল সেন্টার গ্রামে গ্রামে। বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা। বছরের প্রথম দিনে বিনামূল্যে বাচ্চাদের কাছে বই।’ ‘১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ১৪ কোটির হাতে মোবাইল। গ্রামের কৃষকের হাতে, ঘরের কর্মীর হাতে, সবার হাতে মোবাইল।’ ‘মহিলারা তো একবারে বেশি খুশি। মহিলাদের আগে মনের মধ্যেও একটা দুঃখ ছিল। আহারে সন্তান জন্ম দেই আমি, এত কষ্ট করি, পরিচয় হয় বাবার নামে।’ ‘খালেদা জিয়ার আমলে এইটা ছিল না? আর শেখ হাসিনার আমলে মহিলারাও আছে বাবার পাশে, বাচ্চার নামের সাথে। এই সুবিধা কে দিল?’ বিএনপিকে নিয়ে বিচলিত হওয়ার কারণ নাই বলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হচ্ছে বাংলাদেশ অর্জন পার্টি। আর বিএনপি হচ্ছে গর্জনের পার্টি।’ ‘একটা অর্জন, আরেকটা গর্জন। আপনারা কি গর্জনের পক্ষে নাকি অর্জনের পক্ষে? কে এই অর্জন করেছে?’।
জাতিসংঘের উন্নয়নশীল দেশের প্রাথমিক স্বীকৃতিপত্র পাওয়ার বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করে কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন আর ভিক্ষুকের দেশ না, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নশীল দেশ।’ ‘আমরা এখন আর গরিব দেশ না। যে নেত্রী বিশ্বের সেরা ১০ জন রাষ্ট্রনায়কের একজন। আমাদের নেত্রী বিশ্বের সেরা সৎ নেত্রীদের একজন, আমাদের নেত্রী বিশ্বের সেরা প্রধানমন্ত্রীদের একজন।’
শেখ হাসিনার আমলে দেশের মানুষের জীবন কীভাবে পাল্টে গেছে, সেটিও একটি উদাহরণে বুঝিয়ে দেন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘এইডা তো আফনেরা আঁর চেয়ে বালা জানেন। বেগগুনার ঘরে টেলিভিশন আছে। গেরামেও টেলিভিশন।’ ‘হাইমচরের গেরামের মইদ্যে বসেও টেলিভিশনে আপনেরা বিবিসি দেখেন। আপনারা সিএনএন দেখেন, এনডিটিভি দেখেন, হিন্দি সিরিয়াল দেখেন, ইংলিশ ছবি দেখেন। দেখেন না?’ ‘এই সুযোগ কে দিয়েছে? কার জন্য এই সুযোগ পেয়েছেন? বলুন।’
‘আপনারা ভালো থাকতে চান? ওই যে নেত্রী বঙ্গবন্ধুর কন্যা। তাকে যদি আবারও বিজয়ী করেন, তাহলে আপনারা আরও ভালো থাকবেন।’ ‘শেখ হাসিনার আগে, আওয়ামী লীগের আগে এই দেশের উন্নয়ন, অর্জন আর কেউ দিতে পেরেছে? আপনাদেরকে এত সুখ, এত স্বস্তি দিতে পেরেছে? একমাত্র শেখ হাসিনাই আপনাদের এই স্বস্তি, এই সুখ দিয়েছে।



 

Show all comments
  • নাবিলা ৩ এপ্রিল, ২০১৮, ৩:০০ এএম says : 0
    খুব ভালো করেই চিনি।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উন্নয়ন

২৩ ডিসেম্বর, ২০২২
১৮ ডিসেম্বর, ২০২২
২৮ অক্টোবর, ২০২২
২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ