Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সরকারি কোষাগারে জমা হয়নি কোটি কোটি টাকা

সংসদীয় কমিটিতে ক্ষোভ

| প্রকাশের সময় : ৩০ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

* ভ্যাটের অর্ধশত কোটি টাকারও হদিস নেই
পঞ্চায়েত হাবিব : স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি) দাপ্তরিক ব্যয় দেখিয়ে প্রায় দেড়শ’ কোটি টাকার দুনীতির তথ্য প্রমাণ পেয়েছে সংসদীয় কমিটি। নানা অনিয়মের মাধ্যমে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির অসাধু বেশকিছু কর্মকর্তা। নিজেরা ধরা ছোয়ার বাইরে থাকতে এই কাজে সহায়তা নিয়েছেন গাড়ী চালকসহ চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারিদের। অনুসন্ধানে গাড়ী মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের নামে সরকারের তহবিল থেকে নেয়া ২৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা গাড়ী মেরামতকারীর পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট গাড়ী চালকের ব্যাংক হিসেবে স্থানান্তর করার প্রমাণ মিলেছে। এছাড়া প্রফেশনাল ফি বাবাদ আদায়কৃত টাকা এবং ব্যাংক সুদ বাবদ প্রাপ্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা না নিয়ে লোপাট করা হয়েছে কোটি কোটি টাকা।
জাতীয় সংসদের সরকারী হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উত্থাপিত মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের বার্ষিক অডিট রিপোর্টে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনের অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সভাপতি ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর সভাপতিত্ব বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, কমিটির সদস্য মো. আব্দুস শহীদ, মোহাম্মদ আমানউল্লাহ, মো. রুস্তম আলী ফরাজী, মো. আফসারুল আমীন, মো. শামসুল হক টুকু, রেবেকা মমিন এবং বেগম ওয়াসিকা আয়েশা খান এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খানসহ অডিট অফিস, এলজিইডি এবং জাতীয় সংসদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
কমিটির বৈঠকে উত্থাপিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ৭টি প্রকল্প হতে প্রফেশনাল ফি বাবদ গৃহীত এবং ব্যাংক সুদ বাবদ প্রাপ্ত কোটি কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেননি দায়িত্বশীলরা। সেইসঙ্গে অর্গানোগ্রাম বহির্ভূত অনিয়মিতভাবে প্রফেশনাল ফি হতে ১১ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে তিনটি মোটরযান ক্রয় করা হয়েছে বলে দেখান তারা। কমিটি সরকারী অর্থ ব্যয়ের আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না নেয়ায় আইনের ব্যত্যয় হয়েছে। আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে। এদিকে প্রফেশনাল ফি’র অর্থের দ্বারা অফিস ভবন নির্মাণ, প্যাসেঞ্জার লিফট ক্রয় এবং জেনারেটর স্থাপন বাবদ অনিয়মিতভাবে ১০ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়েছেন এলজিইডির দায়িত্বশীলরা। একইভাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডে হাইওয়ে স্টেশন নির্মাণ বাবদ এলজিইডি কল্যাণ সমবায় সমিতিকে অনিয়মিতভাবে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা প্রদান, অননুমোদিত জনবলের বেতন ভাতা বাবদ প্রফশনাল ফি হতে ৪৮ কোটি ১০ লাখ টাকা পরিশোধ, গাড়ী মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বাবদ ২৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা গাড়ী মেরামতকারীর পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট গাড়ী চালকের ব্যাংক হিসেবে স্থানান্তর করে নেয়ার বিষয়ে দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে কমিটি।
এছাড়া প্রকল্প কার্যক্রম সমাপ্তির তারিখে প্রকল্পের স্কুল ভবনের মাটি পরীক্ষা এবং প্রকল্পের আনুষঙ্গিক খরচ বাবদ মাঠ পর্যায়ের অফিসগুলোতে ২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা স্থানান্তর করে সমাপনী জের শূন্য দেখানো হয়েছে। পরামর্শক, প্রিন্টিং ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান, গাড়ী মেরামতকারী এবং ইন্টেরিয়ার প্রতিষ্ঠানের বিল হতে ভ্যাট ও আয়কর কম কর্তন দেখিয়ে আরও ৪৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা সরকারের ক্ষতি করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে অডিট কর্তৃপক্ষ। কমিটি এসব বিষয় অনধিক ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রয়োজনীয় দস্তাবেজ উপস্থাপনপূর্বক অডিট অফিসের সন্তুষ্টি সাপেক্ষে নিষ্পত্তির সুপারিশ করে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সরকারি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ