পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে তিন দফা জনসভার ঘোষণা দিয়েও তা করতে পারেনি দলটি। পুলিশ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়ে ও সরাসরি সাক্ষাত করে অনুমতি চাওয়ার পরও জনসভার অনুমিত পায়নি তারা। তিন দফা আবেদনেও পুলিশের সাড়া না পেয়ে আজকের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা স্থগিত করেছে বিএনপি।
দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গতকাল (বুধবার) বিকেলে নয়াপল্টনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি জনসভা স্থগিত করার কথা বলেন। রিজভী বলেন, জনসভার অনুমতি নিয়ে পুলিশ টালবাহানা করছে। এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে যে তারা অনুমতি দেবে না। এটাই হচ্ছে তাদের মনোবাঞ্ছা। তার ভাষায়, বিএনপির মত একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলকে জনসভার অনুমতি না দেওয়া সরকারের স্বৈরাচারী আচরণেরই বহিঃপ্রকাশ। ভোটারবিহীন সরকার আন্তর্জাতিকভাবে স্বৈরাচারের যে স্বীকৃতি পেয়েছে তা জনসভা করতে না দেওয়ার মধ্যে দিয়েও অক্ষরে অক্ষরে প্রমাণিত হল। আমরা ২৯ মার্চের জনসভা আপাতত স্থগিত করছি। কর্মসূচি স্থগিতের কারণ ব্যাখ্যা করে রিজভী বলেন, বিকাল ৪টা পর্যন্ত পুলিশ অনুমতির বিষয়ে কিছু জানায়নি। কিন্তু মঞ্চ তৈরি করা, নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করার জন্যও সময় দরকার। এ কারণে বিএনপি ধরে নিয়েছে, পুলিশ আর অনুমতি দেবে না। এর আগে আজকের জনসভার অনুমতির জন্য গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সাথে সাক্ষাত করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে তিন জন। সাক্ষাত শেষে নজরুল ইসলাম খান অনুমতি পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী হওয়ার কথা জানালেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছিলেন জনসভার অনুমতি দেবে পুলিশ কমিশনার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বিএনপির তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলের বৈঠক প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, বিএনপির এই নেতা বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ঢাকায় বিএনপির পক্ষ থেকে ১২ মার্চ ও ১৯ মার্চ জনসভা করতে পুলিশের অনুমতির জন্য আবেদন করা হলেও সরকারের নির্দেশে নিরাপত্তার অজুহাতে বিএনপিকে জনসভার অনুমতি দেয়নি ডিএমপি (ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশ)। এরপর আবারও ২৯ মার্চে জনসভা করতে বেশ কয়েকদিন আগে বিএনপি’র পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। মঙ্গলবার দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে বিএনপির একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করার পর আমরা বিশ^াস করতে চেয়েছিলাম সরকার জনসভার অনুমতি দিবে। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন-গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জনসভার অনুমতি দিবে পুলিশ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে এটা প্রমাণিত হয়েছে দেশ চালাচ্ছে পুলিশ। আওয়ামী লীগ ক্ষয়িষ্ণু রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে বলেই দেশটা এখন পুলিশের কব্জায়।
তিনি বলেন, ২৪ মার্চ গণতন্ত্র হত্যার দিনে সরকার প্রধানের পৃষ্ঠপোষকতায় জাতীয় পার্টিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে দেয়া হয়েছে। এই ঘটনায় গণতন্ত্রকে অপমানিত ও লাঞ্ছিত করা হলো। এছাড়াও সম্প্রতি আওয়ামী জোটের ছোট ছোট আরো অনেক দলকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী এ দুঃসময়ে শুধু বিপন্ন গণতন্ত্রের দীর্ঘশ^াসই শুনতে পাওয়া যায়। দখল ও দুর্নীতির অন্তঃক্রিয়া আওয়ামী সংস্কৃতির ধারক। সেজন্যই আধিপত্য-অভিলাষী সরকার গণতন্ত্রকে ‘ফসিলে’ পরিণত করতে উঠেপড়ে লেগেছে। বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার আন্তর্জাতিকভাবে স্বৈরাচারের যে স্বীকৃতি পেয়েছেন সেটি অক্ষরে অক্ষরে প্রমাণিত হলো।
ঢাকায় জনসভার অনুমতি না পেলেও বিভাগীয় শহরে জনসভা করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। রিজভী জানান, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আগামী ৪ এপ্রিল রাজশাহীতে যে জনসভা করার কথা ছিল, তা পিছিয়ে ১৫ এপ্রিল নেওয়া হয়েছে। এসময় এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, আবদুস সালাম, প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব।
এর আগে সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী বলেন, হঠাৎ করে প্রধানমন্ত্রীর ১/১১ নিয়ে কথা বলো রহস্যজনক ও কৌতুহলোদ্দীপক। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত মঙ্গলবার বলেছেন, এক এগারোর সরকারের সময় তাকে গ্রেফতারের পেছনে কারা ছিল সেই তথ্য জানা গেছে। তাদের বিষয়ে হিসাব পরে নেয়া হবে। হঠাৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্য রহস্যজনক ও কৌতুহলোদ্দীপক। ১/১১ এর সরকারের এক্সটেনশন বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার। ১/১১ এর ষড়যন্ত্রকারীদের ক্ষমা করে দেয়ার শর্তে ষড়যন্ত্র করে তারা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সে সময় তাদের সাথে আতাঁত করে চিকিৎসার নামে কারাগার থেকে বের হয়ে বিদেশে গিয়েছিলেন। আবার বিদেশ থেকে ফেরার পর বিমানবন্দরে নেমে দায় মুক্তির ঘোষণা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতায় যায় তাহলে ১/১১ সরকারের সকল কাজের বৈধতা দিবে। তিনি তাদের সমর্থনে সরকার গঠন করে তাদের শুধু দায় মুক্তি দেননি পুরস্কৃতও করেছেন। কিন্তু মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনে হ্যামলেট নাটকের একটি উক্তি মনে পড়ছে-‘ডেনমার্কে কিছু পচছে’। কি এমন হলো এতবছর পর তিনি উল্টো কথা বলতে শুরু করলেন। এখনওতো আপনি ক্ষমতায়, তাহলে পরে কেন, এখন বিচারের মুখোমুখি করছেন না কেন? এ প্রশ্ন সাধারণ মানুষের।
প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সম্পূর্ণভাবে অবিশ^াসী মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিদ্বেষ ও উগ্রতা দিয়ে মুক্তিযদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে চান। কিন্তু স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সম্পূর্ণভাবে অবিশ^াসী। কারণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্র, মানুষের ইচ্ছার বাস্তব প্রতিফলন। কিন্ত সেই বহুদলীয় গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে নিজের জমিদারী মনে করে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হচ্ছে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সুরক্ষা করা, কিন্তু বৈদেশিক নীতি এতোই পরনির্ভরশীল যে, প্রধানমন্ত্রী নিজেই অন্যের কথা শুনে দেশ শাসন করেন, তা না করলে তাঁর গদিওয়ালা চেয়ার চোরাবালিতে ডুবে যাবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে একদলীয় শাসন চালু রেখে বিনাশ ও সংকীর্ণতার পথে দেশকে ঠেলে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। আন্তর্জাতিক স্বৈরাচারের খেতাব পাওয়ার পরেও তিনি নির্বিকার ও বেপরোয়া।
নতুন কর্মসূচি ঘোষণা: দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নতুন করে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। এসব কর্মসূচির মধ্যে আগামী ১ এপ্রিল সারাদেশে লিফলেট বিতরণ, ৩ এপ্রিল প্রতিবাদ কর্মসূচি, ৭ এপ্রিল বরিশালে, ১০ এপ্রিল সিলেটে এবং ১৫ এপ্রিল রাজশাহীতে জনসভা করবে দলটি।####
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।