Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৬ জুন ২০২৪, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অব্যাহত পতনে রাস্তায় বিনিয়োগকারীরা

| প্রকাশের সময় : ২৯ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

০ আট মাসে উত্থানের সূচক হারালো এক মাসে
০ লেনদেন নেমেছে অর্ধেকে
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : দরপতনের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না দেশের পুঁজিবাজার। গত আট মাস ধরে যে পরিমান সূচক বেড়েছিল মাত্র এক মাসেই তা হারালো ডিএসই। একই সময়ের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে অর্ধেক। ২০১৭ সালের ১৯ জুনে ডিএসইর সূচক ছিল পাঁচ হাজার ৪৭৮ পয়েন্টে। গত ১৪ ফেব্রæয়ারি তা বেড়ে দাঁড়ায় ছয় হাজার ১০২ পয়েন্টে। অর্থাৎ মাত্র এক মাসে আবারও ৯ মাস পূর্বে ফিরেছে ডিএসই। একই সময়ে লেনদেনের অবস্থা আরও করুণ। ২০১৭ সালের ১৯ জুন লেনদেন হয়েছিল প্রায় ৫৪১ কোটি টাকা, গতকাল তা নেমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৭৭ কোটি টাকায়। অর্থাৎ লেনদেন কমেছে অর্ধেক।
অব্যাহত পতন ঠেকাতে আবারও রাস্তায় নেমেছে বিনিয়োগকারীরা। ধারাবাহিক পতনে অতিষ্ঠিত হয়ে গতকাল বুধবার মানববন্ধন ও মিছিল করে বিনিয়োগকারীরা। বেলা ২টায় বিনিয়োগকারীরা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ভবনের সামনে মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিলও করে। মিছিলটি বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
এ সময় বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দেয়। পুঁজিবাজার ঠিক কর, নইলে বুকে গুলি কর এমন শ্লোগানে দিতে থাকে। এছাড়াও লুটেরাদের হাত থেকে পুঁজিবাজারকে রক্ষা করারও আহবান করেন। জ্বালো জ্বালো আগুন জ্বালো, শেয়ারবাজার পড়ল কেন অর্থমন্ত্রী জবাব দে, ভারতের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান এধরণের শ্লোগানও দিতে থাকে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি এ কে এম মিজান উর রশিদ চৌধুরী। তিনি বলেন, তারল্য সংকটের কারণে শেয়ারবাজারের পতন অব্যাহত রয়েছে। এ সংকটের কারণে শেয়ারবাজারের লেনদেন দেড় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে এসেছে। অব্যাহত পতনে সর্বস্ব হারাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। তিনি বলেন, কারসাজি চক্রের কারণে পুঁজিবাজারে জেড ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোর দাপট অব্যাহত রয়েছে। জেড ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোর দাপটেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা রয়েছে নিষ্ক্রিয় অবস্থানে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয়তার কারণে বাজারে পতন অব্যাহত রয়েছে। বাজারকে স্বাভাবিক করতে হলে প্রাতিষ্ঠানিকদের সক্রিয় হতে হবে। তিনি আরও বলেন, ২০১০-১১ সালে ধসে যেমন আমরা আন্দোলন করে বিএসইসি পুন:গঠন করেছি। তেমনি আবারো বর্তমান বিএসইসিকে পুন:গঠনের দাবি জানাচ্ছি। এখানে দক্ষ ও শেয়ারবাজার বান্ধব জনবল নিয়োগ দেওয়ার আহবান জানান।
গতকাল বাজার বিশ্লেষনে দেখা যায়, ২০১৭ সালের ১৯ জুন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচকের অবস্থান ছিল পাঁচ হাজার ৪৭৮ পয়েন্টে। সেখান থেকে উত্থান হওয়ার পর গত ১৪ ফেব্রæয়ারি সূচকের অবস্থান হয় সর্বোচ্চ ছয় হাজার ১০২ পয়েন্টে। এই অবস্থানে উঠতে সময় লাগে দীর্ঘ আট মাস। আর সেই অবস্থান থেকে নেমে গতকাল পাঁচ হাজার ৪৮৮ পয়েন্টে অবস্থান করে। এজন্য সময় লেগেছে মাত্র এক মাস বা ২৭ কার্যদিবস। এই অল্প সময়ে সূচক ৯ মাস পিছিয়ে গেছে।
অন্যদিকে একই সময়ে লেনদেনের অবস্থা আরও করুণ। গত নয় মাস আগে ১৯ জুন, ২০১৭-তে লেনদেন হয়েছিল প্রায় ৫৪১ কোটি টাকা। আর গতকাল তা নেমে দাঁড়িয়েছে ২৭৭ কোটি টাকায়। অর্থাৎ লেনদেন অর্ধেক কমেছে। বাজারের এই অবস্থানে বিনিয়োগকারীরা চরম হতাশায় নিমজ্জিত হলেও বাজার নিয়ন্ত্রণকারীদের এ নিয়ে কোনো চিন্তা আছে বলে মনে হচ্ছে না। তাদের কোনো উদ্যোগ বা আশ্বাসই বাজারকে সামান্যতম ইতিবাচক করতে পারছে না। উল্টো প্রতিদিনই আরও দ্রæতগতিতে পতনের দিকে ধাবিত হচ্ছে পুঁজিবাজার। গতকাল পুঁজিবাজারে সব খাতেই বিপজ্জনক লাল সংকেত দেখা গেছে। কোনো খাতে সবুজ সংকেতের চিহ্ন ছিল না। গতকাল ডিএসইতে ১১৭ কোম্পানির দর বেড়েছে। পতন হয়েছে ১৬০টি কোম্পানির। এদিন দুই বাজারেই মূল্য সূচক কমেছে। এ নিয়ে উভয় বাজারে টানা তিন কার্যদিবস মূল্য সূচক কমলো। মূল্য সূচকের পাশাপাশি উভয় বাজারে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। সেই সঙ্গে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দামও কমেছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ